মোহনপুরে ইট দিয়ে ব্যবসায়ীর মাথা ফাটাল কিশোর গ্যাং


মোহনপুর প্রতিনিধি: রাজশাহীর মোহনপুরে পাওনা টাকা চাওয়ায় মুদি ব্যবসায়ীকে কিশোর গ্যাং এর ছেলেরা ইট দিয়ে মারধর করে মাথা ফাটিয়ে আহত করেছে। মোহনপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে থানায় অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী  ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম। তার মাথায় ২টি সেলাই পড়েছে। মুখ, চোখ, ডান হাতে ছেলা ফুলা বেদনাযুক্ত জখম রয়েছে। এঘটনায় ব্যবসায়ী আত্মীয় স্বজন ও এলাকাবাসি কিশোর গ্যাং এর উপযুক্ত শাস্তি দাবি করেছেন।
ইতোপূর্বে এই দলের সদস্যরা ধুরইল বাজারের এক দোকানে লাল নিশানা টানিয়ে দোকান বন্ধ করে দেয়। পরে টাকার বিনিময়ে দোকান খুলে দেয়। ওয়ারেন্ট তামিলে গিয়ে পুলিশের উপর হামলা চালায়। করোনাকালে স্বাস্থ্যবিধি মানতে নির্দিষ্ট সময় পরে দোকানপাট বন্ধ করতে বললে ইট পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনাও  ঘটিয়েছে এ চক্রটি। বিভিন্ন চুক্তির মাধ্যমে মারধোর, চুরি ও ছিনতায়, মাদক বিক্রয় ও সেবন করা তাদের দৈনন্দিন কাজ।
সম্প্রতি, জেলার মোহনপুর উপজেলার ধুরইল উত্তরপাড়া গ্রামের মৃত আঃ জব্বারের ছেলে ধুরইল বাজারের মুদি ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম ওরফে মালু(৩৬) কে গত ২১ জানুয়ারি  বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৩ টার দিকে পাওনা টাকা চাওয়ায় রাজু হোসেন অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে কিল ঘুষি মেরে চলে যায়। ঐদিন সন্ধ্যায় রাজু’র বড় ভাই শফি রফিকের মুদি দোকানে আসিয়া তার ভাই রাজু’র থেকে কিসের টাকা পাবি বলিয়া কিল ঘুষি মারতে থাকে এসময় বাজারের লোকজন আগাইয়া আসিলে দোকান হতে চলিয়া যায়।
এঘটনায় পরের দিন ২২ জানুয়ারি শুক্রবার বিকাল ৪ টা ২০ মিনিটে দোকান খোলার সময় ২ হাজার টাকা ভাড়ার বিনিময়ে কিশোর গ্যাংয়ের দলনেতা রনি হোসেন , মোস্তাফিজুর রহমান ফিজুর, রাজু, শফিকসহ সাঙ্গপাঙ্গরা রফিকুল ইসলামকে ইট দিয়ে এলোপাতাড়িভাবে পিটাইতে থাকে।

একপর্যায় রফিকের চিৎকারে স্থানীয় কিছু লোকজন আগাইয়া আসিলে চুরি চাকু বাহির করিয়া তাকে প্রাণ মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে চলে যায়। তার অবস্থা আশংকাজনক দেখিয়া জনৈক হাসিবুর রহমান তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় রুহুল আমিন ফার্মেসীতে চিকিৎসার জন্য নিয়ে গেলে সেখানেও তারা চিকিৎসা দেওয়ার কারণে ফার্মেসীতে হামলা চালিয়ে ফ্রিজসহ দোকানের ওষধপত্র ফেলিয়া তান্ডব চালিয়ে ক্ষয়ক্ষতি সাধন ও জখমীকে মেরে তার পকেটে থাকা পয়তাল্লিশ হাজার তিনশত পঞ্চাশ টাকা জোরপূর্বক কেড়ে নেয়। পরে স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে মোহনপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা গ্রহণ করেন ।

গতকাল রোববার রাত ৯টায় আহত রফিকুল ইসলাম মালুর বক্তব্যে জানাযায়, সে রাজুর থেকে ধার ও পাওনা বাবদ চার হাজার ষাট টাকা পায়। টাকা চাইলে সে আমাকে কিল ঘুষি মারে পরে তার বড়ভাই শফিকও আমাকে মারধোর করে। এরপরেও তারা ক্ষ্যান্ত হয়নি  কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের ভাড়া করে তারা আমাকে  মারধোর করেছে। আমি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিভিন্ন লোক মারফতে জানতে পারি তাদের নামে মামলা বা অভিযোগ করলে তারা আমাকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে।
থানায় অভিযোগ করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে তাদের নামে অভিযোগ থাকায় তারা আমাকে দোকান খুলতে দিবেনা মর্মে বিভিন্ন লোক মারফতে হুমকি দিচ্ছে। আমি এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। এলাকায় ভয়ে তাদের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খোলার সাহস পায়না। যারা  তাদের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছে তারাই মার খেয়েছে। জেলখানা যাওয়া আসা তাদের কাছে তুচ্ছ ঘটনা মাত্র।
হামলাকারিরা হলো, উপজেলার ধুরইল উত্তরপাড়া গ্রামের ভুলনের ছেলে রাজু হোসেন(৩০) বড় ছেলে শফিকুল ইসলাম(৩২)। তালুকদার পাড়া গ্রামের এরশাদ হোসেনের ছেলে  কিশোর গ্যাংয়ের দলনেতা একাধিক মামলার আসামী রনি হোসেন(২৮)৷ সহ অঙ্গাতনামা৩/৪জন।
মোহনপুর থানা কর্মকর্তা ওসি তৌহিদুল ইসলাম বলেন, এই বিষয়ে সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে অপরাধী যেই হোক না  কেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিবেন।