শার্শায় গৃহবধূ শিখার মৃত্যু আত্মহত্যা নাকি হত্যাকান্ড


বেনাপোল প্রতিনিধি : বেনাপোল পোর্ট থানার অন্তর্গত বালুন্ডা মাঠ পাড়া গ্রামে শামসুন্নাহার শিখা(৩০) নামে এক গৃহবধূর আত্মহত্যার অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে। শিখা বালুন্ড গ্রামের তাহাজ্জত আলী মোড়লের পুত্র ওবায়দুর রহমানের(৩৭) স্ত্রী।
ঘটনাস্থল থেকে জানা যায়, শিখা চাঁদরাতে গ্যাস ট্যাবলেট খেয়ে বাড়ির পাশে ধান ক্ষেতে পরে থাকা অবস্থায় তার পরিবার ভোর ৫টায় উদ্ধার করে। পরবর্তীতে তার পরিবার চিকিৎসার উদ্দেশ্যে তাকে খুলনা নিয়ে যায়। খুলনা গাজী হসপিটালে মৃত্যুর পর খুলনা সদর হসপিটালে ময়না তদন্ত শেষে ঈদের পরের দিন লাশ দাফন হয়।
শিখার স্বামী ওবায়দুর ও তার পরিবারের ভাষ্যমতে, আমরা ভোর রাতে ঘরে খোজ না পেয়ে তার মুঠোফোনে কল দিতে থাকি একসময় তার ফোন বাজার শব্দ বাড়ির পাশ থেকে পেয়ে সেখান থেকে তাকে গ্যাস ট্যাবলেট খাওয়া অবস্থায় উদ্ধার করলাম।  শিখা বিষ খাওয়ার পর ঘরে আসলে তার বালিশের পাশে ২ পৃষ্ঠার একটি চিঠি পাই।
চিঠির ভাষ্যমতে বোঝা যায়, শিখার সাথে তার প্রতিবেশী খাদিজার সঙ্গে মামী ভাগিনীর সম্পর্ক গাড় সম্পর্ক গড়ে উঠে। সেই মতে খাদিজাকে সে নগদ অর্থ এবং গহনা দেয় কিন্তু পরবর্তীতে খাদিজা তা ফেরত দিতে অস্বীকার করে। তখন শিখা কোন কূল কিনারা না পেয়ে আত্মহত্যার পথ বেঁছে নেই এবং তার মৃত্যুর জন্য তিনি খাদিজার পরিবারকে দায়ী সহ বিচার দাবী করেন।
শিখার স্বামী ওবায়দুর দীর্ঘ দিন যাবৎ বিদেশে ছিলেন। শিখা তার একমাত্র ছোট মেয়ে এবং দেবর জিয়াউর সহ নিজ স্বামীর বাড়িতেই থাকতেন। বিদেশ থেকে যাবতীয় অর্থ তার স্বামী শিখার কাছেই পাঠাতেন কিন্তু তার স্বামী দেশে আসার পর সে তার স্বামীকে অর্থের সঠিক হিসাব দিতে পারেননি। তারউপর শিখা নিজের ও তার ছোট মেয়ের সকল গহনাও হাতছাড়া করে ফেলে। এখন সে স্বামীকে কি জবাব দেবে? অনেকে মনে করছেন একারণেও শিখা আত্মহত্যা করতে পারে।
অন্যদিকে শিখার মৃত্যু নিয়ে এলাকার মানুষের মধ্যে রয়েছে নানা প্রশ্ন, কৌতূহল এবং রহস্যের গন্ধ। এলাকাবাসীর ভাষ্যমতে এই খাদিজা  খুবই খারাপ স্বভাবের একজন মেয়ে, অপরদিকে শিখা ছিলো একজন নামাজী পরহেজগার নারী। এলাকাবাসী এই মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলে মেনে নিতে নারাজ। তাদের সন্দেহ খাদিজার দ্বারা অথবা অন্য কোন মাধ্যমে এটা মার্ডারও হতে পারে। মৃত্যুর পরপরই খাদিজা এখনও পর্যন্ত পলাতক রয়েছে। এলাকাবাসীর দাবী বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করে দেখা হোক।
এব্যাপারে খাদিজার মা বলেন, আমাদের নামে লোক মিথ্যা অপবাদ  দিচ্ছে। আমার মেয়ে খাদিজার সাথে কিছুদিন আগে শিখার ভাই আমির হামজার সহিত বিয়ে হয়েছে। আমার মেয়েকে আমির হামজা বেনাপোলে বাসা ভাড়া করে রাখে।
এবিষয়ে আমির হামজা এবং খাদিজার নাম্বারে একাধিক বার কল দিলেও তাদের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
এবিষয়ে বেনাপোল পোর্ট থানার ওসি কামাল হোসেন ভূইয়া বলেন, আত্মহত্যার বিষয়টি আমি শুনেছি এবং ৬ই মে শুক্রবার তার পরিবারের লোকজন মামলা করতে এসেছিলো কিন্তু আমি ওনাদেরকে আদালতে মামলা করার পরামর্শ দিয়েছি। কেননা এটা আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ এবং লাশ ময়না তদন্ত সহ দাফনকাজ সম্পন্ন হয়ে গেছে। এক্ষেত্রে আমাদের করণীয় আর তেমন কিছু নেই।