সব বাধা পেরিয়ে দেশকে স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তর করব-পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী


স্টাফ রিপোর্টার: পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো: শাহ্রিয়ার আলম বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিকল্পনা অনুযায়ী আমরা বাংলাদেশকে ডিজিটাল করতে সক্ষম হয়েছি। যত বাধাই আসুক না কেন, সব বাধা পেরিয়ে তাঁরই পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০৪১ সালের মধ্যে আমরা বাংলাদেশকে একটি স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তর করব।
প্রতিমন্ত্রী রবিবার (২১ মে) চারঘাট উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে ‘রাজশাহী স্মার্ট কর্মসংস্থান মেলা-২০২৩’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতা প্রদানকালে এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক উদ্বোধনী বক্তৃতা করেন।
শাহ্রিয়ার আলম বলেন, সরকারের ওপর আস্থা এবং বিশ^াস রেখে সামনে এগিয়ে যেতে হবে। প্রধানমন্ত্রী যত প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, সব বাস্তবায়ন করেছেনÑ এটা সবার কাছে দৃশ্যমান। অবকাঠামো উন্নয়ন থেকে শুরু করে সকল পর্যায়ের উন্নয়নের রোল মডেল প্রধানমন্ত্রী।
আইসিটিতে রাজশাহীর অগ্রগতি তুলে ধরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, রাজশাহী বিভাগ শুধু আম, ধান, গম, চাল উৎপাদনে প্রথম হবে না; এখন আইসিটিতেও প্রথম হবে। রাজশাহীতে বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্ক করা হয়েছে। যেখান থেকে হাজার হাজার ছেলে-মেয়ে প্রশিক্ষণ নিয়ে উদ্যোক্তা তৈরি হচ্ছে। প্রত্যেকটা গ্রামে মানুষ এখন স্মার্ট ফোন ব্যবহার করে। এর মাধ্যমে অনেকেই ফিল্যান্সিং করে অর্থ উপার্জন করে স্বাবলম্বী হচ্ছে।
দেশের আইসিটি খাতে ব্যাপক অগ্রগতির জন্য প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের প্রশংসা করে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপকার সজীব ওয়াজেদ জয় আর এই ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার জন্য যে জোয়ারের দরকার ছিল তা এনে দিয়েছেন জুনাইদ আহমেদ পলক।
এ সময় শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের চ্যালেঞ্জ এবং সুযোগের কথা ভেবেই পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করা হচ্ছে। ডিজিটাল ব্যবস্থার কারণে চারঘাটের চিত্র এখন অনেক বদলে গেছে। তরুণদেরকে নিজের ভবিষ্যত গড়তে হবে, ব্যর্থ হলে দমে যাওয়া যাবে না। সঠিক লক্ষ্য স্থির করে তা বাস্তবায়নে ক্ষুধার্ত বাঘের মতো ঝাঁপিয়ে পড়তে হবেÑ তবেই লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবে।
অনুষ্ঠানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, বিদেশে না যেয়েও দেশের মাটিতে বসে বিদেশি কোম্পানিতে কাজ করে ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছে আমাদের তরুণরাÑ এটাই স্মার্ট বাংলাদেশ। প্রধানমন্ত্রী তরুণদেরকে চাকরির সব সময় পেছনে না ছুটে উদ্যোক্তা হতে উৎসাহিত করেন। চাকরি করলে কেউ একটি পরিবারের দায়িত্ব নিতে পারে আর উদ্যোক্তা হলে হাজারও পরিবারের দায়িত্ব নেওয়া যায়।
বাংলাদেশে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ক্ষেত্রের অগ্রগতি তুলে ধরে তিনি বলেন, লন্ডনের শিক্ষার্থীরা যে সুযোগ পায় আমাদের দেশের গ্রামের শিক্ষার্থীরাও যেন সে সুযোগ পায় সেই লক্ষ্য নিয়ে আমরা কাজ করছি। আমরা ইন্টারনেটের খরচ কমিয়েছি, গতি বৃদ্ধি করেছি; যাতে সকল পর্যায়ের মানুষ সহজেই ইন্টারনেট ব্যবহার করে সুবিধা ভোগ করতে পারে।
পরে তিনি স্মার্ট কর্মসংস্থান মেলার বিভিন্ন স্টলের কর্মকা-ে সন্তোষ প্রকাশ করে এর মাধ্যমে ভবিষ্যতে আরও অনেকের কর্মসংস্থান হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন, চারঘাট উপজেলা চেয়ারম্যান ফখরুল ইসলাম, চারঘাট পৌরসভার মেয়র একরামুল হক, শেখ রাসেল প্রকল্প পরিচালক এস এম এ রফিকুন্নবী বক্তৃতা করেন। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, বীর মুক্তিযোদ্ধা, রাজনীতিক, ব্যবসায়ী, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, প্রিন্ট ও ইলেট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে ৩০ জন স্মার্ট নারীর হাতে এককালীন ৫০ হাজার করে মোট ১৫ লাখ টাকার অনুদানের চেক তুলে দেয়া হয়। লার্নিং এন্ড আর্নিং প্রকল্পের আওতায় ৫ জনকে সনদ প্রদান করা হয়। পরে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী মেলার বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেন। মেলায় ২৮টি স্টল অংশগ্রহণ করে।