সহযোগিতা করলে সম্মান আর ষড়যন্ত্র করলে প্রতিবাদও করতে জানি : প্রধানমন্ত্রী


রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে আওয়ামী লীগ আয়োজিত বিজয় দিবসের আলোচনাসভায় বক্তব্য রাখছেন প্রধানমন্ত্রী। ছবি : ফোকাস বাংলা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, একাত্তরে মার্কিন সরকার পাকিস্তানের পক্ষে থাকলেও তাদের জনগণ আমাদের পক্ষে ছিল। আমাদের সহযোগিতা করেছে। আমরা পরে তাদের সম্মানিত করেছি। আমাদের সহযোগিতা করলে যেমন সম্মান জানাই, আবার আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করলে তার প্রতিবাদও করতে জানি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যারা মনে করে, বাঁশিতে ফু দিল আর দেশে স্বাধীন হয়ে গেল। এদের আসলে ভূগোল ও ইতিহাসের জ্ঞান আছে কিনা সন্দেহ আছে। একটা সংগ্রামের মধ্য দিয়ে দেশ স্বাধীন হয়েছে। একটা জাতি ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল জাতির পিতার নেতৃত্বে। এ বাংলাদেশকে নিয়ে জাতির পিতার যে স্বপ্ন ছিল- কীভাবে দেশটা সাজাবেন, প্রতিটি মানুষের জীবনমান উন্নত করবেন, এ জন্য তাঁর জীবনকে উৎসর্গ করেছেন।’

এ সময় বিএনপি ও বাম দলগুলোর সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন ‘বিএনপি-জামায়াত জোটের সঙ্গে আরও কিছু পার্টি দাঁড়াল। বাম, অতি বাম, তীব্র বাম, স্বল্প বাম, সব এক হয়ে গেল। যারা এত বড় বড় কথা বলেন, এত বড় তাত্ত্বিক, তারা ওদের সঙ্গে এক হয়ে যায় কীভাবে? ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলা, এতিমের টাকা আত্মসাতের দায়ে দণ্ডিতদের নেতৃত্ব কীভাবে মেনে নেয়! সেলুকাস, বিচিত্র এ দেশ!’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘পঁচাত্তরের পর যারা ক্ষমতায় এসেছিল, তারা কখনোই চায়নি এ দেশ স্বাধীন হোক। আর সেজন্যই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে যাতে স্বাধীনতা অর্থহীন হয়ে পড়ে। ধারাবাহিকতায় বারবার আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আসতে বাধা দেয়া হয়েছে। কখনো ভোট কারচুপি করে, কখনো চক্রান্ত করে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সেনাবাহিনীতে কিছু বেঈমান-মোনাফেক ছিল, যারা আমাদের বাসায় আসা-যাওয়া করত। আমার মায়ের হাতে কত খাবার খেয়েছে, বাবা তাদের সন্তানের মত ভালোবাসতেন! সেই তারাই তাকে হত্যা করল। কিন্তু তারপর যারা ক্ষমতায় এসেছিল তারা এদেশকে কী দিয়েছে? পঁচাত্তরের পর এদেশের মানুষ শোষণের শিকার হয়েছে। ২১ বছর এবং ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত এদেশের মানুষ কী পেয়েছে? শোষণ, বঞ্চনা আর নিদারুণ কষ্ট। অথচ বঙ্গবন্ধু যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গড়ে তুলেছিলেন। একটা উন্নত রাষ্ট্রের ভিত তৈরি করেছিলেন।’

আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ এবং উপপ্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলামের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, প্রেসিডিয়াম সদস্য মতিয়া চৌধুরী, শাজাহান খান, জাহাঙ্গীর কবির নানক, সিমিন হোসেন রিমি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি বজলুর রহমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির প্রমুখ।