রাবির জুবেরি ভবনে খসে পড়ছে পলেস্তারা: নজর নেই প্রশাসনের


রাবি প্রতিনিধি : দেয়ালে ও ছাদে ধরেছে বড় বড় ফাটল। ইট আর সিমেন্ট খসে খসে পড়ছে রুমের আশপাশে। সেগুলোর উপর সাদা কাগজ দিয়ে আঠা লাগিয়ে ধামাচাপা দেওয়ার বৃথা চেষ্টাও করা হয়েছে। নেই প্রশাসনের কোনো সুদৃষ্টি। অথচ সেখানে থাকতে হয় দূর থেকে আসা অতিথিদের। দেখে বোঝার উপায় নেই দেশের স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গেস্ট হাউস। বলছিলাম রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের জুবেরী ভবন গেস্ট হাউসের কথা।
স্বাভাবিকভাবে গেস্ট হাউসগুলো হয় নামিদামি সব জিনিসে সাজানো-গোছানো। আর সেখানে বিশ্ববিদ্যালয় গেস্ট হাউস হলে তো কথাই নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের গেস্ট হাউস  চমকপ্রদক, আরামদায়ক ও পরিপাটি থাকার কথা থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের গেস্ট হাউসে দেখা মিলেছে তার ঠিক উল্টো চিত্র। হোক সেটা এসিযুক্ত অথবা ননএসি। সেখানে ভিআইপি নামে রুম থাকলেও ভিআইপির লেশটুকুও লক্ষ করা যায়নি সেখানে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জুবেরী ভবনের রুমগুলোর ছাদ থেকে ইট পাথরের খোয়া ভেঙ্গে মেজেতে পড়ছে। বিভিন্ন জায়গায় দেখে মিলেছে বড় বড় ফাটলের। রুমগুলোর বারান্দায় পলেস্তারার পুরো আস্তর খসে পড়ছে। অনেক জায়গায় কাগজে আটা লাগিয়ে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। ভবনের বাহিরেও জরাজীর্ণ ও ঝুঁপড়ির মত গাছপালা জন্মাতে দেখা গেছে। প্রশাসনের নেই কোনো পরিচর্যা। এমন সব ঝুকিপূর্ণ ও অনিরাপত্তার মধ্যেই দূরদূরান্ত থেকে আসা অতিথিরা থাকছেন এ গেস্ট হাউসে। আগতদের মধ্যে কেউবা বাংলাদেশ সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মচারীও রয়েছেন। তাদের জন্য বরাদ্দ রয়েছে তথাকথিত ভিআইপি রুম। ভিআইপি রুমগুলোর অবস্থাও বাজে।
গেস্ট হাউস দেখভালের দায়িত্বে থাকা কয়েকজন প্রহরীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, ভবনটি অনেক পুরাতন। বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণ হওয়ার পরপরই জুবেরী ভবন নামে গেস্ট হাউসটি নির্মাণ করা হয়। কিছুদিন পরপরই গেস্ট হাউসের মেরামত করা হয় কিন্তু কোনো স্থায়ী সমাধান নিতে দেখা যায়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে।
সনদ সংগ্রহের কাজে এসে এসিযুক্ত রুমে উঠেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী আমিরুল মানিক। বিশ্ববিদ্যালয়ের গেস্টরুম কখনোই এমন হতে পারেনা জানিয়ে জাগো নিউজকে বলেন, আমি গতকাল (বুধবার)  রাতে এসিযুক্ত ৩২৭ নং রুমে উঠেছি। রুমে প্রবেশ করা মাত্রই দেখি রুমগুলোর অবস্থা বেহাল। ছাদ থেকে বালু আর সিমেন্ট খসে পড়ছে মেঝেতে। বারান্দার দেয়ালগুলোও জরাজীর্ণ ও বড় বড় ফাটল ধরেছে। যেকোনো সময় বিপদ হতে পারে বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী অধ্যাপক ড. আবুল কালাম আজাদ জাগো নিউজকে বলেন, আমি ইতোমধ্যে এ বিষয়ে অবগত। খুব দ্রুত জুবেরী ভবন মেরামতের কাজ শুরু হবে। মেরামতের পাশাপাশি বিভিন্ন জায়গায় টাইলসও বসানো হবে বলে জানান তিনি।
রুম বরাদ্দের দায়িত্বে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. আব্দুস সালাম জাগো নিউজকে বলেন, ১৯৬০ সালের দিকে নির্মাণ করা হয়েছিল জুবেরী ভবন। অনেক পুরাতন ভবন এটি। জুবেরী ভবনের বিকল্প হিসেবে ১০ ভবন নির্মাণ করা হবে ক্যাম্পাসে। আপাতত গেস্ট হাউসের রুমগুলোর মেরামত করা হবে এবং খুব শীগ্রই কাজ ধরবে বলে জানান তিনি।