আত্রাইয়ে টর্নেডোর আঘাতে বিধ্বস্ত ৬ শতাধিক ঘর-বাড়ি পূর্ণবাসনে দ্রুত টিন ও নগদ অর্থ সহায়তার দাবি


নওগাঁ প্রতিনিধিঃ নওগাঁর আত্রাইয়ে জগদাশ ও ইসলামগাঁতি গ্রামের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া আকস্মিক টর্নেডোর আঘাতে দুই গ্রামের প্রায় ৬ শতাধিক ঘরবাড়ি ভেঙ্গে লন্ডভন্ড হয়েছে। সরকারি ভাবে দ্রুত ক্ষতিগ্রস্থ্যদের খাদ্যে সহায়তা দিলেও এখনো খোলা আকাশের নীচে বসবাস করছেন। ক্ষতিগ্রস্থ্যরা খাদ্য সহায়তার চেয়ে ঘরবাড়ি পূর্ণ নির্মাণের টিনসহ নগদ টাকা দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

জানা গেছে, নওগাঁর আত্রাইয়ের জগদাশ ও ইসলামগাঁতি গ্রামে যে যার নিজ মতো সুখে বাসবাস করছিলেন। তখন হঠাৎ এক সপ্তাহে আগে সন্ধ্যায় রাত ৮টার দিকে আকস্মিক ভাবে প্রবল বেগে দক্ষিণ দিক থেকে ধেয়ে আসে টর্নেডো। মাত্র কয়েক মিটিন স্থায়ী এই টর্নেডোর আঘাতে জগদাশ ও ইসলামগাঁতি প্রায় ৬ শতাধিক পরিবারের সুখের মাটি ও ইটের তৈরী ঘরবাড়ি ভেঙ্গে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। ভেঙ্গে গেছে বহু গাছপালা।

ঘটনার পর ক্ষতিগ্রস্থ্যদের মধ্যে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষে থেকে দ্রুত খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ্যদের হাতে নগদ টাকা না থাকায় অনেকেই এখনো ঘরবাড়ি নির্মাণ করতে পানেননি। ফলে খোলা আকাশের নিচেই থাকা-রান্না-খাওয়া করছেন। তার উপর মাঝে মধ্যে ভারি ও মাঝারি বৃষ্টি। এতে তাদের কষ্টের পরিমাণ আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে।

জগদাশ গ্রামের হামিদা বিবি জানান, তাদের পরিবারের ৭জন সদস্য। ঝড়ে ঘরবাড়ি ভেঙ্গে তছনছ হয়ে গেছে। রান্না ঘরও নেই। তাই বাধ্য হয়ে খোলা আকাশের নীচে রান্না করা হচ্ছে। একই গ্রামের ছানা মৃধা জানান, সন্ধ্যা রাতে মিনিট খানেকের ঝড়ে শতশত ঘরবাড়ি ও গাছ পালা ভেঙ্গে গেছে। অনেকের থাকার জায়গা নেই। অনেকেই অন্যের বাড়ি গিয়ে রাতে ঘুমাচ্ছেন। একই গ্রামের সাবিত্রী সরকার জানান, তার কোন টাকা পয়সা নেই। ঔষুধ কেনারও টাকা নেই। তারপর আবার মাটির ঘরে ভেঙ্গে গেছে। সাবত্রীর ছেলে পবিত্র জানান, মাঠে ধান আবারও বন্যায় তলিয়ে গেছে। এখন এই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সরকারি টিন ও নগদ অর্থ দেওয়ার দাবি জানান।

ইসলামগাঁতি গ্রামের আবু বক্কর ও আমজাদ হোসেন জানান, ঘটনার পর দ্রুত সরকারি ভাবে খাদ্য সহায়তাও দেওয়ায় হয়েছে। মাঝে মধ্যে বৃষ্টি তাদের আরো কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অপরদিকে বন্যায় মাঠে ফসল নষ্ট ও হাতে কোন নগদ টাকা না থাকায় ক্ষতিগ্রস্থ্যরা খাদ্য সহায়তার চেয়ে ঘরবাড়ি পূর্ণ নির্মাণের টিনসহ নগদ টাকা দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

পাঁচুপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মাহাবুর রহমান জানান, ক্ষতিগ্রস্থ্যদের অনেকেই অসহায় হওয়ায় তাদের হাতে কোন নগদ অর্থ নেই। অনেকেই ঋণ নিয়ে কোন মতে ঘরবাড়ি মেরামত করছেন। সরকারি সহায়তা দ্রুত না করা হলে অনেকেই ঋণের ফাঁদে জড়িয়ে পরবেন।

পাঁচুপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আফসার আলী প্রামানিক জানান, স্থানীয় ইউপি সদস্যদের মাধ্যমে ইত্যে মধ্যে ক্ষতিগ্রস্থ্যদের তালিকা করে উপজেলা প্রশাসনের কাছে দেওয়া হয়েছে। এর প্রক্ষিতে সরকারি ভাবে কি দেওয়া হবে তারা জানেন না।

আত্রাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ছানাউল ইসলাম জানান, টর্নেডোর আঘাতে জগদাশ ও ইসলামগাঁতি গ্রামের আংশিক ৪শ’ ও সম্পন্ন ২শ’ পরিবার ক্ষতিগ্রস্থ্য হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ্যদের তালিকা জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে দুযোর্গ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। টিনসহ নগদ অর্থ হাতে পেলেই দ্রুত ক্ষতিগ্রস্থ্যদের মধ্যে দেওয়া সম্ভব হবে।