উন্নত ঘাসে বিপ্লবের স্বপ্ন শাহজাদপুরে


মোঃ আব্দুল কুদ্দুস, শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি : গবাদি প্রাণী ও দুধের রাজধানী খ্যাত সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলায় প্রায় ৩ লক্ষ ৮২ হাজার গবাদী প্রাণী রয়েছে। প্রতিদিন প্রায় ৫ লক্ষ লিটার দুধ উৎপাদন হয় যার বাজার মূল্য প্রায় ৩ কোটি টাকা। এখানে প্রায় ৩০ হাজার একর জমিতে মৌসুমী সহ সারা বছর ঘাস চাষ হয়ে থাকে যার অধিকাংশই লোকাল নেপিয়ার জাম্বু ও গামা জাতের। এই ঘাস গুলির বাৎসরিক উৎপাদন প্রতি এক্রে ৩০ থেকে ৪০ টন ।
এ ঘাসগুলির প্রোটিন মাত্র ৬ থেকে ১১ ভাগ। উচ্চ ফলনশীল অধিক পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ জারা ওয়ান, সি ও ০৪ পাকচং ঘাসের সম্পর্কে খামারিদের ধারণাই নাই। জারা ওয়ান, সিও ০৪, পাকচং এর বাৎসরিক উৎপাদন প্রতি একরে প্রায় ১৫০ থেকে ২০০ টন এবং এই ঘাস গুলির প্রোটিন প্রায় ১৮ ভাগ। এই ঘাস গুলির কান্ড যেমন নরম তেমন মিষ্টি যার ফলে গরু খায়ও বেশি এবং অপচয় করে না। এই ঘাসগুলি শীতকালেও বাড়ে।
শাহজাদপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের সহযোগিতায় প্রায় ৬০০ খামারিকে জারা ওয়ান, সিও ০৪ , পাকচং এর কাটিং সরবরাহ করা হয়েছে। ঘাস গুলির চাষ করে খামারীরা অত্যন্ত আনন্দিত ও খুশি।
মুয়াকোলা গ্রামের খামারি আলী আক্কাস বলেন এই ঘাসগুলি গরু খুব খায় ফলে স্বাস্থ্যও বাড়ে। ঘাস খাওয়ার সময় গরুর মাড়ি ছিলে যায় না। একই গ্রামের খামারি শাকিল বলেন আমি এবছর দেড় বিঘা জমিতে যারা ওয়ান লাগিয়েছি। গত বছরের চেয়ে আমার এক একটা গরু তিন থেকে চার লিটার দুধ বেশি দিতেছে। এই ঘাসের ফলনও খুব বেশি। এদিকে রেশমবাড়ি বাথান এলাকার খামারি নয়ন বলেন এই ঘাস খাওয়ানোর পরে আমার গরুর দুধ ১০ লিটার থেকে বেড়ে প্রায় ২০লিটার হয়ে গেছে। এ এলাকার আরেক খামারি ময়েন ফকির বলেন, এই ঘাস খাওয়ানোর পরে গরুর দুধ বেড়ে যায় অন্য ঘাস দিলে দুধ কমে যায়। এই ঘাস পেয়ে আমরা খুব খুশি।
এ বিষয়ে শাহজাদপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাক্তার মোঃ বেলাল হোসেন বলেন বর্তমানে দানাদার খাদ্যের উচ্চমূল্য থাকায় খামারিরা বেশ বিপাকে পড়েছে। মান্দাতার যুগের ঘাস চাষের কারণে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় তারা খামার করে লাভবান হচ্ছে না। বর্তমান সময়ের ঘাসের রাজা জারা ওয়ান, সিও ৪, পাকচং ঘাস চাষে খামারিদের অভ্যস্ত করতে পারলে তাদের উৎপাদন খরচ যেমন কমবে তেমনি বেশি দুধও পাবে। ফলে তারা খামার করে লাভবান হবে। উচ্চ ফলনশীল হওয়ায় এ ঘাসগুলি চাষের ফলে কম জমিতে ঘাসের উৎপাদনও বেড়ে যাবে।