শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, দেশে করোনার উচ্চ সংক্রমণের সময়কালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার দাবি একেবারে অবান্তর। এটা এই পরিস্থিতিতে সম্ভব না। তবে শিগগিরই এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।
‘কী পদ্ধতিতে আমরা করব সবকিছুই জানাব। তবে, শিক্ষার্থী-অভিভাবকসহ সবাইকে বলব উদ্বিগ্ন হবেন না। বৈশ্বিক সংকট চলছে। এই সংকট মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে সকল ক্ষেত্রে সেভাবে সিদ্ধান্ত নিচ্ছি’, যোগ করেন দীপু মনি।
আজ বুধবার সংসদে বাজেট পাসের প্রক্রিয়ার সময় বিরোধী দলের সংসদ সদস্যদের বিভিন্ন ছাঁটাই প্রস্তাবের জবাব দিতে গিয়ে শিক্ষামন্ত্রী এসব কথা বলেন।
দীপু মনি আরও বলেন, ‘বিশ্বের বহু দেশ, এমন কী উন্নত বিশ্বের দেশগুলোও পাবলিক পরীক্ষা বাতিল করেছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্রেডিকটেড গ্রেড দিচ্ছে। আমরা সেখানে ২০২০ সালের এসএসসি পরীক্ষা নিয়ে ফেলেছিলাম। এইচএসসি পরীক্ষা শুরুর দুই-তিনদিন আগে বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছিলাম। পরে আমরা জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে তার ফলাফল দিয়েছিলাম। আমরা যেভাবে বিচার-বিশ্লেষণ ও টালি করে ফলাফল দিয়েছি দুই একটি ব্যতিক্রম ছাড়া পরীক্ষা হলে শিক্ষার্থীদের ফলাফল এরকমই হতো। কাজেই কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।’
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যত দ্রুত সক্ষম হয়েছি, বিশ্বের আর কোথাও এত দ্রুত শুরু করেনি। যে কারণে বিশ্বে শিক্ষা নিয়ে কোনো সভা হলে বাংলাদেশের দ্রুততম সময়ের মধ্যে অনলাইনে এবং টেলিভিশনের মাধ্যমে পাঠদানের বিষয়টির প্রশংসা করা হয়।’
শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবক সবার মধ্যে অ্যাসাইনমেন্টের বিষয়ে সন্তুষ্টি রয়েছে বলে শিক্ষামন্ত্রী মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, এই পদ্ধতি ভালো বলে সবাই গ্রহণ করেছেন। বিশেষজ্ঞরাও এটার পক্ষে মত দিয়েছেন। আমরা বিশেষজ্ঞদের সম্পৃক্ত করে বিকল্প যেকোনো পদ্ধতি গ্রহণ করছি। সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছি।
ডা. দীপু মনি বলেন, ‘অধিকাংশ ক্ষেত্রে আমাকে বাইরে যেতে হয়। যখনই শিক্ষার্থীদের অভিভাবকের সঙ্গে দেখা হয় তখনই আমি তাদের জিজ্ঞাসা করি, অনেকে বলছেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার জন্য, আপনারা কী বলেন? তাঁরা আমাকে বলেন, এখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিলেও আমাদের ছেলে-মেয়েদের পাঠিয়ে বিপদে ফেলতে পারি না। ক্লাসের মধ্যে সংক্রমণ ছাড়াবে। বিজ্ঞান বলছে, শিশুদের মধ্যে ছাড়ানোর ঝুঁকি বেশি। একজন শিক্ষার্থী সংক্রমিত হলে বয়সের কারণে তার হয়তো কোনো উপসর্গ নাও থাকতে পারে, কিন্তু তার থেকে পরিবারের মা, বাবাসহ অন্য সদস্যদের মধ্যে ছড়িয়ে যেতে পারবে।’
মন্ত্রী বলেন, শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন সারা বিশ্বেই ব্যত্যয় ঘটেছে। আমাদের এখানেও কিছুটা ঘটেছে। কিন্তু তাদের যাতে দীর্ঘমেয়াদে কোনো ক্ষতি না হয়ে যায় তার জন্য সর্বোচ্চ নজর রাখছি। আমরা কভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় পরামর্শক কমিটির পরামর্শ গ্রহণ করেই আমরা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে থাকি বলে জানান তিনি।