কামাল তরুণ-যুবকদের যুদ্ধের জন্য সংঘবদ্ধ করেছিল : প্রধানমন্ত্রী


জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ পুত্র শেখ কামালের জন্মদিন উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি : সংগৃহীত

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘যে জাতির জন্য আমার বাবা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এতো ত্যাগ স্বীকার করলেন, বছরের পর বছর জেল খাটলেন, পাকিস্তানিরা বাবাকে ফাঁসিতে ঝোলাতে চেয়েছে। বাবা এ জাতিকে একটি স্বাধীন দেশ ও একটি পতাকা দিলেন, স্বাধীনতার পরে সীমিত সম্পদ দিয়ে দেশ গঠনের উদ্যোগ নিলেন, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনীকে গঠন করার কাজ শুরু করলেন, সেই দেশের মানুষ, কিছু দুষ্কৃতকারী বাবাকে হত্যা করল—এটি ভাবতেই অবাক লাগে।’

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ পুত্র শেখ কামালের জন্মদিন উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী তাঁর সরকারি বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ সভায় অংশ নেন।

সভায় যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেলসহ মন্ত্রণালয় ও ক্রীড়া পরিষদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বক্তব্য দেন।

এ সময় ছোট ভাই শেখ কামালের কর্মময় জীবনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কামাল অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে দলের কার্যক্রম পরিচালনা করতো, দেশের দুর্গম এলাকাগুলোতে গিয়ে দলের নির্বাচনি কাজে অংশ নিতো, লোকদের সমবেত করে নির্বাচনি প্রচার চালাতো সে।’

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘৭ মার্চে জাতির পিতার ঐতিহাসিক ভাষণের সময়েও শেখ কামাল ওই মঞ্চে উপস্থিত ছিল। সে জনগণকে ৭ মার্চের জনসভায় সংঘবদ্ধ করার ক্ষেত্রেও বড় ভূমিকা রেখেছে। ২৫ মার্চ সন্ধ্যা থেকেই কামাল ধানমণ্ডি এলাকার তরুণ ও যুবকদের সংঘবদ্ধ করে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত করে।

ওইদিন জাতির পিতা যখন প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য নির্দেশ দেন, তখনই কামাল যুবকদের নিয়ে রাস্তায় নেমে পড়ে। আবাহনী মাঠ, সাত মসজিদ রোড থেকে শুরু করে পুরো ধানমণ্ডিতে ব্যারিকেড দেওয়ার কাজটি সে তরুণ ও যুবকদের নিয়ে করে।’

শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি ও জাতির পিতার ছেলে হিসেবে কামাল কখনোই অহংকার করতো না। অত্যন্ত সাদাসিধে জীবনযাপন করতো সে। অর্থবিত্ত, ব্যবসা-বাণিজ্য ও ভোগ-বিলাসের প্রতি কামালের কোনো লোভ ছিল না। এটিই ছিল আমার বাবার শিক্ষা। যে জাতির জন্য আমার বাবা এতো ত্যাগ স্বীকার করলেন, বছরের পর বছর জেল খাটলেন, পাকিস্তানিরা বাবাকে ফাঁসিতে ঝোলাতে চেয়েছে।

একটি স্বাধীন দেশ ও একটি পতাকা দিলেন, সীমিত সম্পদ দিয়ে দেশ গঠন ও সেনাবাহিনীকে গঠন করার কাজ করলেন, সেই দেশের মানুষ, কিছু দুষ্কৃতকারী বাবাকে হত্যা করলো। এটি ভাবতেই অবাক লাগে। মুক্তিযুদ্ধের সময় শেখ কামাল ও নূর একসঙ্গে কর্নেল ওসমানির এডিসি হিসেবে কাজ করেছে। সবচেয়ে বেদনার ঘটনা হলো কামালের জন্য।

১৫ আগস্ট সেনাবাহিনীর লোকেরা যখন আমাদের বাড়ি আক্রমণ করে তখন কামাল নিচে নেমে নূর ও হুদাকে দেখে বলে, আপনারা এসেছেন, দেখেন তো আমাদের বাড়িতে কারা আক্রমণ করেছে। আর তখনই হুদার গুলি কামালের বুক ঝাঁঝরা করে দেয়।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার বাবা এই দেশ ও জাতির জন্য অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছেন। আমরাও যেন দেশের জন্য কিছু করে যেতে পারি, সেই চেষ্টাই আমাদের করতে হবে।’