স্টাফ রিপোর্টার: পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী মোঃ আব্দুল ওয়াদুদ, এমপি বলেছেন, মানুষ যা খায় তার অধিকাংশই জমি থেকে আশে। আর এই জমিতে যদি কৃষক ফসল না ফলাতো তাহলে মানুষ বাঁচতো না। আগে মানুষ বলত কোনো রকম দুটো খাবার খেয়ে বাঁচি, কিন্তু এখন আমরা খাচ্ছি এবং অন্যদেরকে খাওয়ানোর সামর্থ্য অর্জন করেছি। এটা সম্ভব হয়েছে কৃষি ক্ষেত্রে উন্নয়নের ফলে।
শনিবার (০৮ জুন) সকালে রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে International Fisheries and Aquaculture conference-২০২৪’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। মৎস্য চাষে জড়িতদের উদ্দেশে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা কিন্তু জমি হারানোর হুমকির মুখে আছি। জমির সর্বোত্তম ব্যবহার করে যে কোনো ধরনের ডেভেলপমেন্ট মৎস্যসহ সকল ক্ষেত্রে এমন ভাবে জমি ব্যবহার করতে হবে যাতে জমির ক্ষতি না হয়। বাঙালির মূল খাদ্যÑ ধান, চাল, গম, ভুট্টা, আলু এগুলোর দরকার। মিষ্টি পানিতে মাছ উৎপাদন করতে গিয়ে চাষের জমি হারাচ্ছি কী নাÑ সেদিকে খেয়াল রাখার পরামর্শ দেন তিনি।
আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, আমরা মাছ রপ্তানি করে অনেক টাকা পাচ্ছি। বাজারে আমাদের মাছের চাহিদাও ব্যাপক কিন্তু ব্যবসায়ীদের অসাবধানতার কারণে সঠিক বাজার ধরতে পারছি না। আমাদের মাছ ভারত, নেপাল এবং বার্মা অন্য দেশে হয়ে রপ্তানি হচ্ছে কিন্তু আমরা সঠিক রপ্তানি আয় পাচ্ছি না।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অত্যন্ত গুরুত্বে সাথে গণতান্ত্রিক চর্চার সাথে গবেষণা চর্চার কথা বলেছেন। সরকার গবেষণার জন্য অনেক বৃত্তি প্রদান করছে। যাতে শিক্ষার্থীরা বিদেশ থেকে ডিগ্রি নিয়ে আসতে পারে। গবেষণা ছাড়া অন্যের গবেষণালদ্ধ জ্ঞান নিজের করে সাজাতে গেলে অনেক ক্ষেত্রে কার্যকর হয় না। কারণ এদেশের মানুষ, মাটি, চিন্তা এবং ধারণার সাথে ধার করা জ্ঞান খুব একটা কাজে আসে না।
তিনি বলেন, একটি সমাজ যদি তার ব্যবস্থাপনার সামনে দিয়ে এগোতে না পারে সেখানে কোনো গবেষণা, রাজনীতি এবং অর্থনীতি ফলপ্রসূ হবে না। অর্থনীতির চাকা সচল রাখবে যে মানুষগুলো তাদের স্মার্ট করে গড়ে তুলতে হবে। মানুষ স্মার্ট হলে দেশ স্মার্ট হবে।
তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৫০ বছর আগে সমবায়ভিত্তিক বাজার ব্যবস্থাপনার কথা বলেছেনÑ তাতে কৃষিবিদ জ্ঞান দিবে, কৃষক জ্ঞানী হয়ে উৎপাদন করে বাজারে পৌঁছে দিবে মানুষের কাছে। সেই চেইন ব্যবস্থা এখনো বাংলাদেশে চালু হয়নি। প্রধানমন্ত্রী সমবারভিত্তিক কৃষিকে অনুপ্রাণিত করছেন। কোথাও যেন এক ইঞ্চি জমিও ফাঁকা না থাকে। অনুষ্ঠানে ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কল্যাণী বিশ^বিদ্যালয়ের প্রফেসর আনিলাভা কবিরাজ।
রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের (রাবি) মৎস্য অনুষদের ডীন প্রফেসর ড. মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান মন্ডলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে রাবির উপাচার্য প্রফেসর ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার, উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. সুলতান-উল-ইসলাম, প্রফেসর ড. হুমায়ুন কবীর, সিলেট কৃষি বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. জামাল উদ্দিন ভূঁইয়া, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সৈয়দ মোঃ আলমগীর, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইন্সটিটিউটের মহাপরিচালক ড. জুলফিকার আলী, বিশ^ মৎস্য বিষয়ক বাংলাদেশের অন্তবর্তী প্রতিনিধি ড. বিনয় কুমার বর্মন বক্তৃতা করেন। অন্যান্যের মধ্যে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, দেশ-বিদেশের শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।