চার লাখ ২২ হাজার মানুষ ইউক্রেন ছেড়ে পালিয়েছে : জাতিসংঘ


যুদ্ধ থেকে বাঁচতে লাখ লাখ মানুষ ইউক্রেন ছাড়ছে। ছবি : রয়টার্স

ইউক্রেনে রাশিয়ার সেনা অভিযানের পঞ্চম দিন চলছে। সোমবার সকাল থেকে রাজধানী কিয়েভজুড়ে শোনা যায় সাইরেন। শহরের বিপুল মানুষ ভবনের আন্ডারগ্রাউন্ড বা বেজমেন্টে আশ্রয় নিয়েছেন। এ ছাড়া গতকাল রাতভর শহরে শোনা গেছে গুলি ও বিস্ফোরণের শব্দ। ইউক্রেনের সেনারা বলছেন, সবদিক থেকেই লাগাতার ক্ষেপণাস্ত্র ও গোলা ছুড়ছে রুশ বাহিনী।

যুদ্ধ থেকে বাঁচতে লাখ লাখ মানুষ ইউক্রেন ছাড়ছে। শরণার্থীর সংখ্যা চার লাখ ২২ হাজার ছাড়িয়েছে বলে জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর জানিয়েছে।

এর মধ্যেই ইউক্রেন-বেলারুশ সীমান্তে আজ সোমবার স্থানীয় সময় দুপুরে প্রথম বারের মতো রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রতিনিধিরা শর্তহীন আলোচনায় যোগ দিয়েছেন। তবে, আগামী ২৪ ঘণ্টাকে যুদ্ধের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে মনে করছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।

এদিকে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, দেশটিতে গত চারদিনের যুদ্ধে পাঁচ হাজারের বেশি রুশ সেনা নিহত হয়েছে। খবর বিবিসির।

ফেসবুক পোস্টে দেওয়া এক বিবৃতিতে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত অন্তত পাঁচ হাজার ৩০০ রুশ সেনা নিহত হয়েছে। তাদের আরো দাবি, ১৯১টি রুশ ট্যাংক, ২৯টি যুদ্ধবিমান এবং ২৯টি হেলিকপ্টার ধ্বংস করা হয়েছে।

বিবিসি স্বাধীনভাবে ইউক্রেনের এই দাবিগুলো যাচাই করতে পারেনি। তবে যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বিশ্বাস করে, চলমান এ সংঘাতের প্রাথমিক পর্যায়ে রাশিয়ার ‘ব্যাপক’ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

অন্যদিকে, রুশ বাহিনী বলছে, তারা ইউক্রেনের ১৪টি সামরিক বিমানঘাঁটি ধ্বংস করেছে। এ ছাড়া ধ্বংস করা হয়েছে ১৯টি সামরিক কমান্ড পোস্ট, ২৪টি এস-৩০০ বিমান বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা এবং ৪৮টি রাডার স্টেশন। এ ছাড়া ইউক্রেনের নৌবাহিনীর আটটি জাহাজে আঘাত হেনেছে রুশ বাহিনী। সব মিলিয়ে ধ্বংস করা হয়েছে ৮০০ সামরিক স্থাপনা।

এ ছাড়া ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের কাছে হোস্তোমিল বিমানবন্দরে আন্তোনভ এএন-২২৫ মডেলের বিশ্বের সবচেয়ে বড় উড়োজাহাজটি ধ্বংস করা হয়েছে। এরই মধ্যে দক্ষিণাঞ্চলের খেরশন ও নোভা কাখোভকা এবং পূর্বাঞ্চলীয় বারদিয়ানস্ক শহর দখলে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে রুশ সেনারা। এর আগের দিন মালিতোপোল শহর দখলে নেওয়ার দাবি করে তারা। ইউক্রেনের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ শহর খারকিভের দখল নিতেও মরিয়া হয়ে উঠেছে রুশ সেনারা।