জামালপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ঘুষ ছাড়া সংযোগ মেলে না


রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি: জামালপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আওতায় রৌমারী উপজেলায় বিদ্যুৎ সংযোগে মিটার প্রতি ৭/৮হাজার  টাকা ঘুষ গ্রহণের লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। একই সঙ্গে নতুন এলাকায় বিদ্যুতের আওতায় আনার ক্ষেত্রে গ্রাহকের কাছ থেকে অর্থ আদায় করা হচ্ছে। গ্রাহকের কাছ থেকে ঘুষের দরদামসহ অর্থ আদায় করা হচ্ছে দালালের মাধ্যমে। 

উপজেলার দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নের টাপুরচরচর এলাকায় গোলাম মোস্তফা মুকুল ও ফরিদ উদ্দিনসহ ১০/১২জনের একটি দালাল চক্র রয়েছে যারা গ্রাহক পল্লী বিদ্যুতের মাঠ পরিদর্শক থেকে ডিজিএম পর্যন্ত সরাসরি যোগাযোগ করে থাকেন। দালালের অনুমতি ঘুষ ছাড়া নুতন কোনো সংযোগ বা মিটার পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। ২২ আগস্ট (শনিবার) অনুসন্ধান চালিয়ে গ্রাহক ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে ওইসব তথ্য পাওয়া গেছে।

পল্লী বিদ্যুৎ বোর্ড এর নিয়ম অনুসারে বিদ্যুতের আওতাভুক্ত এলাকায় গ্রাহক হওয়ার জন্য অনলাইনে নতুন বিদ্যুৎ সংযোগের আবেদন করতে হবে। এতে আবেদন ফি ১০০ টাকা, এবং মিটারের জামানত হিসেবে ৪৫০ টাকা পরিশোধের ১০ দিনের মধ্যেই নতুন সংযোগ দেয়ার নিয়ম। ঘুষ নেয়ার নিয়ম না থাকলেও রৌমারীতে নিয়মে পরিনত ঘুষ। কিন্তু পল্লী বিদ্যুতের ওই নিয়ম মেনে চললে ৫ বছরেও ভাগ্যে জোটবে না  বিদুতের সংযোগ। এমন অভিযোগ করেছেন অনেকেই।

রৌমারী উপজেলার টাপুরচর, পুরান টাপুরচর, সোনাভরি নদীর মুখতলা ও হামিদপুরসহ কয়েকটি গ্রাম নতুন সংযোগের আওতায় আনা হয়েছে। এতে প্রায় ১ হাজার নতুন গ্রাহকের সৃষ্টি হয়েছে। এজন্য নতুন সংযোগের পোল ও তার লাগানোর সময় এক দফা অর্থ আদায় করা হয়েছে। দ্বিতীয় দফায় মিটার প্রতি ২হাজার ৮’শ টাকা করে আদায় করা হয়েছে। দালালরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ওই অর্থ আদায় করেছে। অবৈধ ভাবে আদায় করা ওই অর্থ পল্লী বিদুৎ সংশ্লিষ্ট অসাদু ব্যক্তি ও দালালরা ভাগবাটোয়ারা করে নেয়।

টাপুরচর গ্রামের মুক্তিযোদ্দা খুরশিদ আলম অভিযোগ করে বলেন, আমি ২০১৬ সালে নভেম্বর মাসে বিদুৎ অফিসে আবেদন করি। বিদুৎ লাইন স্থাপনের জন্য টেন্ডারও হয়। টেন্ডার হওয়ার পর স্থানীয় কয়েক জন দালাল বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে ৬/৭ হাজার টাকা ঘুষ আদায় করে। এসব কর্মকান্ড বাধা দিতে গেলে আমাকে চাঁদাবাজ ও জীবনাশের হুমকি দেওয়া হয়। অবশেষে আমি বাদী হয়ে রৌমারী নির্বাহী অফিসারসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করি।

দাঁতাভাঙ্গা ইউপি সদস্য নুর মোহাম্মদ ডন বলেন, অভিযোগকারীর  ঘটনা সত্য। অর্থ আদায়কে কেন্দ্র করে উভয়ের মধ্যে ঝগড়াঝাটিও হয়। আমি মিমাংসার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছি। ওই গ্রামের বিদুৎ গ্রাহক এরশাদ আলী জানান, বিদুৎ সংযোগ নিতে প্রথমে ৪ হাজার টাকা ও পরে মিটার নিতে ৩ হাজার টাকা দিতে হয়েছে দালালদের। একই কথা বললেন আজিম উদ্দিনসহ অনেকেই।

অভিযুক্ত গোলাম মোস্তফা মুকুল ও ফরিদ উদ্দিনের কাছে অর্থ আদায়ের বিষয় জানতে চাইলে তারা কথা না বলে পাশ কাটিয়ে যান। এব্যাপারে রৌমারীর পল্লী বিদ্যুৎ এর জোনাল অফিসের  ডিজিএম ভজন কুমার বর্মন জানান, বিদুৎ সংযোগ দিতে গিয়ে আমাদের অফিসের অর্থ দিতে হয় না। তবে মিটার নিতে শুধু মাত্র জামানত হিসেবে ৪৫০ টাকা দিতে হয়।