
প্রধানমন্ত্রী ও সংসদনেতা শেখ হাসিনা আবারও এই করোনাকালে সবাইকে স্বাস্থ্য-সুরক্ষাবিধি মেনে চলার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। এমনকি যাঁরা টিকা নিয়েছেন, তাঁদেরও তিনি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দেন।
শেখ হাসিনা আজ মঙ্গলবার একাদশ জাতীয় সংসদের চতুর্দশ অধিবেশনে জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনের সদস্য অধ্যাপক মাসুদা এম রশিদ চৌধুরীর মৃত্যুতে আনা শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় এসব কথা বলেন।
গতকাল সোমবার বিকেলে অধ্যাপক মাসুদা এম রশিদ চৌধুরী চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাজধানীর বারডেম হাসপাতালে মারা যান।
বর্তমান সংসদে এত জন সংসদ সদস্য হারানোকে ‘দুঃখজনক’ আখ্যায়িত করে আর কোনো শোক প্রস্তাব যেন নিতে না হয় সে জন্য প্রধানমন্ত্রী মহান আল্লাহ তা’য়ালার কাছে সবার সুস্থতাও কামনা করেন।
প্রধানমন্ত্রী অধ্যাপক মাসুদা এম রশিদ চৌধুরী ‘বিদুষী’ আখ্যায়িত করে বলেন, ‘তিনি ছিলেন একাধারে রাজনীতিবিদ, সমাজসেবক, নারী উদ্যোক্তা ও চিত্রশিল্পী। এ রকম বহুগুণসম্পন্ন মানুষ আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন। এটা আমাদের সমাজের জন্য একটা বিরাট ক্ষতি হলো।’
‘আর দুর্ভাগ্য হলো, আমরা এই সংসদে একের পর এক জনকে হারাচ্ছি’, যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘সংসদের এই অধিবেশন শুরুর পর পর দুদিন দুজন সংসদ সদস্যকে আমরা হারালাম। আবার কালই যখন খবর পেলাম আরেকটি মৃত্যু সংবাদ, সত্যি হৃদয় দুঃখ ভারাক্রান্ত হলো।’
নয় দিন বিরতির পর সংসদের মুলতবি হওয়া বৈঠক আজ বেলা ১১টায় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে শুরু হয়।
গত ১ সেপ্টেম্বর শুরু হওয়া অধিবেশন চার কার্য দিবস চলার কথা ছিল। কিন্তু, অধিবেশনের প্রথম দিন প্রয়াত সংসদ সদস্য আলী আশরাফের ওপর আনা শোক প্রস্তাবের আলোচনা শেষে রেওয়াজ অনুযায়ী সংসদের বৈঠক মুলতবি করা হয়। পরদিন সিরাজগঞ্জের সংসদ সদস্য হাসিবুর রহমান স্বপনের মৃত্যুতে আবারও শোক প্রস্তাবের পর অধিবেশন মুলতবি করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী প্রয়াত অধ্যাপক মাসুদা এম রশিদ চৌধুরীকে একজন ‘মিষ্টভাষী’ ও ‘জ্ঞানী মানুষ’ বলে অভিহিত করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তিনি বেঁচে থাকলে আমাদের সমাজকে এবং সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে আরও অবদান রাখতে পারতেন।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘তাঁর শিক্ষা-দীক্ষা এবং বহুমুখী প্রতিভা আমাদের নারী সমাজকে আরও প্রেরণা জোগাবে। সামনে এগিয়ে যাওয়ার শক্তি ও সাহস জোগাবে।’
প্রধানমন্ত্রী মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তাঁর ছেলে-মেয়েদের আল্লাহ রাব্বুল আল-আমিন এই শোক সইবার শক্তি দিন, সেটাই আমি চাই।’
আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মোসলেম উদ্দিন আহমেদ, মো. আব্দুস সোবহান মিয়া, জোহরা আলাউদ্দিন, সিমিন হোসেন রিমি ও ওয়াসেকা আয়েশা খান শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন।
জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য এবং সংসদের বিরোধী দলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের, বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ মশিউর রহমান রাঙ্গা, ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, কাজী ফিরোজ রশিদ, নাজমা আখতার এবং শামীম হায়দার পাটোয়ারী এবং বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশিদ ও আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন।
শোক প্রস্তাবটি সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হলে অধ্যাপক মাসুদা এম রশিদ চৌধুরীর সম্মানে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এর পর অধ্যাপক মাসুদা এম রশিদ চৌধুরীর রুহের মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাত শেষেই রেওয়াজ অনুযায়ী এ দিনের অধিবেশনও মুলতবি হয়ে যায়।