সাইদ সাজু, তানোর থেকে : তানোর পৌর এলাকার গোল্লাপাড়া গ্রামের আদর্শ কৃষক বিজ্ঞানী নূর মোহাম্মদের গবেষনায় বেগুনী রঙ্গের ধান। রয়েছে লাল, খয়েরী, সোনালী, সবুজসহ সাদা রঙ্গের ধান। তার নতুন এই উদ্ভাবনী নতুন জাতের বেগুনীসহ রঙ্গিন ধানের জমি দেখতে আসছেন বিভিন্ন এলাকার কৃষকরা। জমিতে বাহারী রঙ্গে অপরুপ শোভা ছড়ানো এই রঙ্গির ধান দেখে কৃষকরা যেমন উৎসাহ পাচ্ছেন তেমনি আগ্রহী হয়ে উঠছেন।
দীর্ঘদিন থেকে ধান নিয়ে গবেষনা করা এই ধান বিজ্ঞানী সংক্রায়নের মাধ্যমে একের পর এক নতুন নতুন ধানের জাত উদ্ভাবন করেছেন প্রায় ২শতাধীক। চলতি রোপা আমন মৌসুমে বিলকুমারী বিল সংলগ্ন গোল্লাপাড়ার ১একর জমিতে তিনি পদর্শনী ৭৪ প্রকার জাতের ধান রোপন করেছেন। ক্ষেতজুড়ে শোভা পাচ্ছে ছোট ছোট অনেকগুলো সাইন বোর্ড।
গ্রামের প্রান্তিক কৃষক নূর মোহাম্মদের নিজস্ব ধান গবেষণায় প্রদর্শনী প্লটের পাশাপাশি তার সংগ্রহে রয়েছে বিলুপ্ত প্রায় ২শতাধীক জাতের ধান বীজ। কৃষক বাবার চাষ করা সেই ধানগুলো যখন বিলুপ্ত হওয়া শুরু করে তখনই তিনি শুরু করেন সংরক্ষন করা। সেই সংরক্ষন করা ধান থেকে সঙ্করায়ণ করে তিনি লাল, বেগুনী, সাদা, সবুজসহ সোনালী রঙ্গের ধান বীজসহ বিভিন্ন প্রজাতির নতুন নতুন ধানের উদ্ভাবন করছেন।
ধান নিয়ে গবেষনা করে নতুন জাতের ধান বীজ উদ্ভাবন করার স্বীকৃতি স্বরুপ পেয়েছেন রাষ্ট্রীয় স্বর্ন পদকসহ একাধীক স্বর্ণ পদক। রাষ্ট্রীয় স্বর্বচ্চ সম্মাননায় পদক পাওয়া এই ধান বিজ্ঞানীকে সম্মাননা দেয়ার পাশাপাশি কৃষি মন্ত্রনালয়ের পক্ষ থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে গিয়ে তিনি কৃষকদের চাষাবাদে সংগ্রহ সৃষ্টির পাশাপাশি বিভিন্ন এলাকায় রোপন করেছেন তাল বীজ। জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধী এলাকায় তিনি রোপন করেছেন তাল বীজ।
এলাকার কৃষকরা বলছেন, নুর মোহাম্মদ এখন দেশের বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে রোপন করছেন তাল বীজ। কৃষকরা বলছেন নূর মোহাম্মদ দীর্ঘদিন থেকেই ধান নিয়ে গবেষনা করে আসছেন, তার চিন্তা ও গবেষনায় একের পর এক নতুন নতুন জাতের ধান উদ্ভাবন করে এলাকার কৃষকদের মাঝে ঝড়িয়ে দিয়েছেন।
তার উদ্ভাবনী ধান এখন অনেক কৃষক চাষাবাদ করছেন। তার উদ্ভাবনী ধান চাষ করে কৃষকরা কম খরচে কম সময়ে অধিক ফসল ঘরে তুলতে পারছেন। ফলে নুর মোহাম্মদ স্থানীয় কৃষি বিভাগসহ এলাকায় ‘ধান বিজ্ঞানী’ হিসাবে বেশ পরিচিত।
এবিষয়ে স্বর্ণপদক প্রাপ্ত আদর্শ কৃষক নূর মোহাম্মদ বলেন, চলতি রোপা আমন মৌসুমে ১একর জমিতে ৭৪ জাতের ধান সঙ্করায়ণের মাধ্যমে উদ্ভাবন করছেন, এর মধ্যে নতুন প্রজাতির একটি জাত উদ্ভাবন করা হয়েছে। তিনি বলেন, সংক্রায়নের মাধ্যমে গবেষনা করতে করতে বেরিয়ে এসেছে লাল বেগুনীসহ বিভিন্ন রঙ্গের ধান যা জমিতে যেমন সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি করেছে তেমনি সময় কম লাগবে এবং কম খরচে এবং ফলেন বেশী হবে। তিনি বলেন, এই ধান নিয়ে আরো গবেষনা বাকি রয়েছে, গবেষনা শেষে ভোটের মাধ্যমে ধানের জান নির্ধারন করা হবে।
এব্যাপারে তানোর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শামিমুল ইসলাম বলেন, ধান গবেষক নূর মোহাম্মদের এই সব রঙ্গিন ধানের প্লট বিজ্ঞানীরা পরিদর্শন করেছেন। তিনি বলেন, নুর মোহাম্মদের গবেষনা শেষ হলেই তা জাত ও বীজ হিসেবে নির্বাচনের মাধ্যমে ঠিক করা হবে।