তানোরে জৈষ্ঠতা লঙ্ঘন করে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দিয়েছেন ইউএনও


 

তানোর প্রতিনিধি : রাজশাহীর তানোর পৌরসভা নেকনিক্যাল এ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট (বিএম) কলেজ সভাপতি ও তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুশান্ত কুমার মাহাতো একক ক্ষমতা বলে নীতিমালা এবং জৈষ্ঠতা লঙ্ঘন করে (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যক্ষের দিয়েছেন। এ অনিয়মের প্রতিবাদে কলেজ পরিচালনা কমিটির তিনজন সদস্য সভা বয়কট করে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। 

এঘটনায় কলেজ ম্যানেজিং কমিটির অন্যান্য সদস্যসহ অভিভাবক ও শিক্ষক/শিক্ষিকাসহ শিক্ষার্থীদের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে। সেই সাথে তানোর উপজেলা সর্বত্রই চলছে আলোচনা ও সমালোচনা।

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও এলাকাবাসী সুত্রে জানা গেছে, তানোর পৌরসভা নেকনিক্যাল এ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট (বিএম) কলেজের অধ্যক্ষ ইলিয়াস আলী মৃধা ৯ই অক্টোবর/২০২০ইং তারিখে অবসর গ্রহন করেন। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে কলেজের সিনিয়র প্রভাষক মরিয়ম বেগম, কামরুজ্জামান ও জুনিয়র প্রভাষক অসিম কুমার হালদার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের জন্য আবেদন করেন।

ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেয়ার বিষয়ে ৭ অক্টোবর ইউএনও’র কার্যালয়ে পরিচালনা কমিটির সভা আহবান করা হয়। কিন্তু সভা আহবান করা হলেও কমিটির সদস্যদের মতামত না নিয়েই কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একক ক্ষমতা বলে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে অসিম কুমার হালদারের নাম ঘোষণা করেন।

এসময় কমিটির বিদ্যুৎসাহী সদস্য ও পৌর যুবলীগের সভাপতি রাজিব সরকার হিরো, শিক্ষা অনুরাগী সদস্য ও পৌর আ’লীগ সাংগঠনিক সম্পাদক ওয়াজির হাসান প্রতাপ সরকার এবং এমপির প্রতিনিধি উপজেলা মহিলা লীগ সভাপতি ও তানোর উপজেলা পরিষদ নারী ভাইস চেয়ারম্যান সোনিয়া সরদার এঘটনার প্রতিবাদ করে সভা বয়কট করেন।

১১অক্টোবর শনিবার ইউএনও একক ক্ষমতা বলে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে তানোর পৌরসভা কারিগরি কলেজে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে অধ্যক্ষ ইলিয়াস আলী মৃধারকে বিদায়ী সংবর্ধনা দিয়ে জুনিয়র প্রভাষক অসিম কুমার হালদারকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ঘোষনা দিয়ে দায়িত্ব অর্পন করেন।

এবিষয়ে তানোর পৌরসভা নেকনিক্যাল এ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট (বিএম) কলেজ   ম্যানেজিং কমিটির এমপি প্রতিনিধি তানোর উপজেলা পরিষদ নারী ভাইস চেয়ারম্যান সোনিয়া সরদার, কলেজের সিনিয়র প্রভাষক মরিয়ম বেগম ও কামরুজ্জামান তাদের যেকোন একজনকে না দিয়ে ইউএনও একক ক্ষমতার দাপটে জুনিয়র প্রভাষক অসীম কুমার হালদারকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দিয়েছেন যা নিয়ম বর্হিভূত। তিনি বলেন এই অনিয়মের কারনে আমরা তিনজন সভাসহ বিদায় ও অনুষ্ঠান বয়কট করেছি।

এর আগে তানোর গোল্লাপাড়া হাটের কোটি টাকা মুল্যে’র সরকারী খাস জায়গা ব্যাক্তিগত ক্ষমতা দেখিয়ে চিহিৃত জামায়াত ও বিএনপি’র পদধারী ৩ নেতাকে লীজ দিয়ে বিরল ঘটনার সৃষ্টি করে গোল্লাপাড়া হাটের প্রায় শতাধীক দোকান ঘর ভেঙ্গে ফেলেন ইউএনও।

অপর দিকে তানোর উপজেলার মাদারীপুর হাটের সরকারী জায়গা দখল করে গড়ে উঠা অর্ধশতাধীক দোকান ঘর উচ্ছেদ না করে মাদারীপুর বাজারে মাজার পাহারার জন্য মাজার সংলগ্ন জৈনক ব্যাক্তির নামীয় ওয়ারিশ সুত্রে দলিল মুলে কাজনা খারিজ করা সম্পত্তিতে ঘর তৈরি করা অবস্থায় নির্মানযন্ত্রাংশ ও মালামালসহ সার্টার গেট খুলে নিয়ে আসেন ইউএনও সুশান্ত কুমার মাহাতো।

এলাকাবাসী বলছেন, ইউএনও একক ক্ষমতায় কাজকর্ম করেন, সাধারণ মানুষ তার কার্যালয়ে কোন কাজ নিয়ে গেলে ঘন্টার পর ঘন্টা অফিস কক্ষের বাহিরে দাড়িয়ে অপেক্ষা করেও কথা বলার সুযোগ না পেয়ে ফিরে আসেন। যদিও কেউ দেখা সাক্ষাৎ করে তাদের অভাব অভিযোগের কথা বলেন তাদের সাথেও অসৌজন্য মুলক আচরণ করেন। একের পর এমন নিয়ম বর্হিভূত কর্মকান্ড নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় চলছে আলোচনা ও সমালোচনার পাশাপাশি ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে।

এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও কলেজ সভাপতি সুশান্ত কুমার মাহাতোর মোবাইলে একাধীকবার ফোন দেয়া হলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য পাওয়া যায়নি।