ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি ‘মৃতুদণ্ডে’ সরকারের সায়, কালই অধ্যাদেশ


সম্প্রতি দেশব্যাপী ‘ধর্ষণবিরোধী’ তীব্র আন্দোলনের মুখে ‘ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃতুদণ্ড’-এর বিধান রেখে এ সংক্রান্ত আইনটির একটি সংশোধনী প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।

সোমবার (১২ অক্টোবর) সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে আইন সংশোধনের ওই প্রস্তাবটি পেশ করা হলে তাতে নীতিগত অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা।

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, আগামীকালই রাষ্ট্রপতি অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে এটি কার্যকর হবে। অর্থাৎ কাল থেকে এটি আইনে পরিণত হবে। এর আগে এটির আইনি যাচাই (ভেটিং) হবে।

নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের সংশোধনী প্রস্তাবটি অনুমোদন করার ফলে বিদ্যমান নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় সংশোধনী আনা হবে।

মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে আইনমন্ত্রী জানিয়েছেন, যেহেতু সংসদ অধিবেশন আপাতত চলমান নেই, তার সরকার সংশোধিত আইনটি একটি অধ্যাদেশ হিসেবে জারি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ধর্ষণের বিরুদ্ধে আন্দোলনে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড কারার দাবি আসায় সেটি বিবেচনায় নিয়েছে সরকার।

এর আগে গেল শুক্রবার (৯ অক্টোবর) এক অনলাইন ব্রিফিংয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে বাংলাদেশের আইনে ধর্ষণের সর্বোচ্চ সাজা বৃষ্টি করা হচ্ছে।’ তার এই ইঙ্গিতের ৭২ ঘণ্টার মধ্যেই আইনটি সংশোধনের প্রস্তাবে নীতিগত অনুমোদন মিলেছে।

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে বিবস্ত্র করে নারীর শ্লীলতাহানি, সিলেটের এমসি কলেজে তুলে নিয়ে নববধূকে ধর্ষণসহ সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘটে যাওয়া নারীর ওপর ধর্ষণ-গণধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের প্রতিবাদে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে দেশজুড়ে বিক্ষোভ চলছে।

এরইমধ্যে আন্দোলনকারী বিভিন্ন ছাত্র ও অধিকার সংগঠনের দাবির প্রেক্ষিতে সরকার ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি বাড়িয়ে ‘মৃত্যুদণ্ড’ করার উদ্যোগ নেয়।

আইন ও সালিম কেন্দ্রের এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সারা দেশে ৯৭৫টি ধর্ষণকাণ্ড সংঘটিত হওয়ার অভিযোগ এসেছে। দেশে গড়ে মাসে শতাধিক ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে।