আরিফুল ইসলাম, নাটোর প্রতিনিধি: রাসায়নিক পদার্থের অপব্যবহার রোধ করে পরিপক্ক আম প্রাপ্তি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আজ বুধবার থেকে জেলায় গাছ থেকে আম সংগ্রহ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। সকালে নাটোর সদর উপজেলার পাইকপাড়া গ্রামে প্রসিদ্ধ আম চাষী মেহেদী হাসানের আম বাগানে গোপালভোগ জাতের আম পাড়ার মধ্য দিয়ে কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মোঃ শাহরিয়াজ।
এ সময় জেলা প্রশাসক মোঃ শাহরিয়াজ বলেন,করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধ করতে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সকলের বেশী করে শাক-সব্জি ও ফল খাওয়া উচিৎ। দেশীয় সুস্বাদু ফল আম এক্ষেত্রে সহায়ক ভ‚মিকা পালন করবে। করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতিতে আম চাষীদের আম সংগ্রহ এবং এর বিপনন ও পরিবহন কার্যক্রমে কোন প্রতিবন্ধকতা দেখা দিলে জেলা প্রশাসন তা নিরসন করবে বলে জেলা প্রশাসক উল্লেখ করেন। দীর্ঘসময় সংরক্ষণ, কষের মাধ্যমে পচন রোধ ও পরবর্ত্তীতে গাছে কুশি বের হওয়ার সুবিধার জন্য বোটসহ আম পাড়তে কৃষকবৃন্দের প্রতি আহব্বান জানিয়ে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ পরিচালক সুব্রত কুমার সরকার জনস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে ক্ষতিকর স্প্রে থেকে বিরত থাকা এবং ব্যাগিং পদ্ধতি অনুসরণে সমবেত কৃষকদের প্রতি অনুরোধ জানান।
আম চাষী মেহেদী হাসান বলেন, প্রশাসন ও কৃষি বিভাগের নির্ধারিত সময়সূচী অনুসরণ করে আমরা গাছ থেকে নিরাপদ আম সংগ্রহ এবং জনস্বাস্থ্য নিশ্চিত করবো। জেলায় আম সংগ্রহ কার্যক্রম আগামী ১৫ আগষ্ট পর্যন্ত চলবে। ৭ মে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় জেলায় গাছ থেকে আম ও লিচু সংগ্রহের সময়সূচী নির্ধারণ করে দেয়া হয়। আজ থেকে গোপালভোগ আম সংগ্রহের মধ্য দিয়ে এই সময়সূচীর অনুসরণ শুরু হবে।
পরবর্ত্তীতে ২৫ মে থেকে স্থানীয় দেশীয় জাতের গুটি ও বৈশাখী আম, ২৮ মে থেকে রাণী পছন্দ ও ক্ষীরসাপাত, ১ জুন থেকে লক্ষণভোগ ও মহান্দা, ৬ জুন থেকে ল্যাংড়া, ৭ জুন থেকে কাঁচামিঠা, ১৫ জুন থেকে দুধসর, কার্ডিমন ও মোহনভোগ জাতের আম, ১৬ জুন থেকে কৃষাণভোগ, ২০ জুন থেকে হাড়িভাঙ্গা আম, ৩০ জুন থেকে আমরুপালী, মল্লিকা ও ফজলী, ১৫ জুলাই থেকে বারি-৪, ২০ জুলাই থেকে আশ্বিনা জাতের আম এবং সর্বশেষ ১৫ আগষ্ট থেকে গৌড়মতি আম সংগ্রহের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে।
এই সময়সূচীর বাইরে আগে কোন জাতের আম ও লিচু গাছে পরিপক্ক হলে উপজেলা কৃষিবিভাগ ও প্রশাসনের অনুমতি সাপেক্ষে কৃষক বা ব্যবসায়ী গাছ থেকে আম সংগ্রহ করতে পারবেন।
নাটোর কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সুত্রে জানা গেছে, চলতি বছরে জেলায় পাঁচ হাজার ৫২০ হেক্টর জমি থেকে ৭৭ হাজার ৩০৫ টন আম উৎপাদন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।