নিয়ামতপুরের প্রধান সড়ক যেন মৃত্যু ফাঁদ, চলাচলের অযোগ্য, ভোগান্তির যেন শেষ নাই!


নিয়ামতপুর, (নওগাঁ) প্রতিনিধিঃ নওগাঁর মান্দা-নিয়ামতপুর-শিবপুর-পোরশা রাস্তা প্রসস্তকরণ সড়কের ৮৭,৩৩,৫৬০০০টাকা ব্যায়ে ২৬ কিলোমিটার রাস্তার কাজ দীর্ঘ দুই বছরেও শেষ হয়নি। দীর্ঘদিন ধরে রাস্তার কাজ বন্ধ থাকায় ভরা বর্ষা মৌসুমে খানা খন্দকে ভরপুর হয়ে গেছে। এছাড়া দুএকদিন রোদ হলে ধুলা বালীর কারণে রাস্তায় চলাচল করা কষ্টকর হয়ে পড়েছে। ইতি মধ্যে সকল কালর্ভাটএর কাজ শেষ হলেও কালর্ভাটের মুখগুলোতে নেই মাটি।

 

রাস্তায় পাথর ও বালু মিশেয়ে রুলার দিয়ে ডলে দেওয়ায় এখন যেন প্রতিটি পাথর হয়ে উঠেছে এক একটি বন্দুকের গুলি। ফলে এলাকার লাখ লাখ মানুষের ভোগান্তির যেন শেষ হচ্ছে না। কবে নাগাদ শেষ হবে এই রাস্তার কাজ? এমন ভাবনা যেন সাধারণ মানুষকে ব্যকুল করে তুলেছে। দীর্ঘদিন ধরে রাস্তার কাজ একদম বন্ধ থাকায় হতাশায় পরেছেন এলাকাবাসি। যেন দেখার কেউ নেই।

জানা গেছে, নওগাঁর মান্দা-নিয়ামতপুর-শিবপুর-পোরশার রাস্তাটি ছিল এলজিইডি’র আওতায়। সড়কে অতিরিক্ত যান বাহন চলাচল এবং দীর্ঘ এলাকা জুড়ে মানুষের জীবন মান উন্নয়নের লক্ষে গত চার বছর আগে এলজিইডি থেকে সড়ক জনপদ বিভাগে হস্তান্তর করা হয়। রাস্তাটি প্রসস্ত এবং মজবুত পাকা করণের জন্য গত ২০১৮ সালে টেন্ডার দেয়া হয় ১৬ জানুয়ারী ২০০১৯ কাজ শুরু হয়। দীর্ঘ ২৬ কিলোমিটার রাস্তা এবং ৩১টি কালভার্ট ও তিন টি সেতু নির্মান হয়। রাস্তা, কালভার্ট ও সেতু নির্মানে সময় দেয়া হয় ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত। কিন্তু ওই সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে না পারায় সংষিøষ্ঠ ঠিকাদাররা একের পর এক অতিরিক্ত সময় চেয়ে আবেদন করতে থাকেন।

স্থানীয়রা বলছেন, এখন পর্যন্ত রাস্তার কেবলমাত্র কার্পেটিং তুলে কোন রকমে রোলার দিয়ে ফেলে রাখা হয়েছে। দীর্ঘদিন এমন অবস্থায় পরে থাকায় রাস্তা জুড়ে ছোট বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এতে বৃষ্টির পানি জমাট হয়ে অনেক জায়গায় হাঁটু কাদায় পরিণত হয়েছে। ফলে যানবাহন চলাচল করছে অত্যন্ত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে। গত প্রায় ৬ মাস ধরে রাস্তার কাজ একদম বন্ধ থাকায় হতাশায় পরেছেন এলাকাবাসি। রাস্তার এমন বেহাল দশার অযুহাতে পরিবহন মালিকরা দফায় দফায় ভাড়া বৃদ্ধি করছেন।

 

ফলে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন পথচারীরা। এদিকে কাজের ধীর গতির কারনে সাংবাদিকদের কাছে এলাকাবাসির দূর্ভোগের কথা তুলে ধরে মাননীয় খাদ্য মন্ত্রি সাধন চন্দ্র মজুমদার এমপি চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে দ্রুত কাজ শেষ করার তাগিদ দিয়েছিলেন। এরপর কাজের কিছু তোর জোর শুরু হলেও করোনা ভাইরাসের কারনে আবারও কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এরপর এখনো কাজ শুরু হয়নি।

রাস্তার যাত্রী বাতপাড়া গ্রামের মাসুদ রানা, নুরপুর গ্রামের সুলতান মাহমুদ, কাপাস্টিয়া গ্রামের বদিউজ্জামান, আদেলসহ কয়েকজন চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, গত দুই বছর ধরে আমরা ভোগান্তি পোহাচ্ছি। ভারি মালামাল পরিবহন, জরুরী রোগী নিয়ে রাস্তায় চলাচল করা অত্যন্ত কষ্ট সাধ্য হয়ে পরেছে। এলাকার অভিভাবক মাননীয় খাদ্য মন্ত্রি সাধন চন্দ্র মজুমদার তাগিদ দিয়েও রাস্তার কাজ শেষ হয়নি। কবে নাগাদ শেষ হবে এই রাস্তার কাজ একমাত্র সৃষ্টিকর্তাই ভাল জানেন।

 

এ ব্যাপারে নওগাঁ সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী হামিদুল হক বলেন, করোনা ভাইরাসের প্রভাবে এবং লকডাউনের কারনে লেবার সংকট এবং মালপত্র না পাওয়ায় ঠিকাদার ঠিকমত কাজ করতে পারেনি। আশা করছি খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ শুরু হবে এবং চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই কাজ শেষ হবে।