নিয়ামতপুরে প্রাইভেট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের মানবেতর জীবন দেখার কেউ নাই!


নিয়ামতপুর (নওগাঁ) প্রতিনিধিঃ নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার বিভিন্ন কিন্ডার গার্টেন (কেজি) ও বেসরকারী হাইস্কুলগুলো করোনা মহামারির কারণে দীর্ঘদিন থেকে বন্ধ রয়েছে। এ কারনে স্কুলসমূহের ছাত্র-ছাত্রীদের নিকট থেকে কোন বেতন আদায় করতে পারছেনা স্কুল কর্তৃপক্ষ। কেজি ও বেসরকারী হাইস্কুলগুলো ছাত্র-ছাত্রীদের বেতনের উপর নির্ভর করে শিক্ষকের বেতন, স্কুল ভাড়া, বিদ্যুৎ বিলসহ অন্যান্য খরচ প্রতিষ্ঠান করে।

 

সরকারী নির্দেশে মোবাইলের নোটিশে গত ১৭মার্চ অনাকাঙ্খিত ভাবে স্কুল বন্ধ করা হয়। স্কুল বন্ধের পর থেকে বেতন আদায় না হওয়ার ফলে মার্চ মাস থেকে শিক্ষক-কর্মচারীগণ বেতন থেকে বি ত হয়ে পড়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ঘর ভাড়া দিতে পারছেনা বলে বাড়িওয়ালা নোটিশ দিচ্ছে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের। এর মধ্যে স্কুল ভাড়া, শিক্ষক, কর্মচারীর বেতন দিতে না পারায় প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ার পথে।

 

এমন কি অনেক প্রতিষ্ঠানের ভাড়া পরিষোধ করতে ব্যার্থ হওয়ায় বাড়িওয়ালা প্রতিষ্ঠানে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে। ইতিমধ্যেই অনেক শিক্ষক-কর্মচারী পেটের তাগিদে অন্য পেশায় জড়িয়ে পড়েছেন। অত্র উপজেলায় ২৯ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রায় ৮ হাজার ছাত্র-ছাত্রী প্লে শ্রেণি থেকে ১০ শ্রেণি পর্যন্ত অধ্যয়নরত রয়েছে। এক সমীক্ষায় দেখা গেছে সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর চেয়ে কেজি ও বেসরকারী হাইস্কুলগুলোর ছাত্র-ছাত্রীরা ভাল ফলাফল করে আসছে।

 

বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে নিয়ামতপুর প্রাইভটে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও উত্তরা মডেল কিন্ডারগার্টেন এন্ড হাইস্কুলের অধ্যক্ষ সাহাদত হোসেন নাইম জানান, সরকারের নিকট থেকে আর্থিক প্রণোদনা পেলে শিক্ষক-কর্মচারীগণ তাদের পরিবার পরিজনকে নিয়ে দুমুঠো ডাল-ভাত খেয়ে জীবনযাপন করতে পারতো। নিয়ামতপুর প্রাইভটে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক ও নিয়ামতপুর আইডিয়াল স্কুলের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান বলেন, সরকারের শুভদৃ®িট কামনা করছি এবং দ্রুত সরকারের প্রণদনা নিশ্চিতের দাবি জানাচ্ছি।

 

নিয়ামতপুর প্রাইভটে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঐক্য পরিষদের সভাপতি ও নিয়ামতপুর কিন্ডারগার্টেন এন্ড হাইস্কুরের অধ্যক্ষ বলেন, স্কুল বন্ধ ও ছাত্র-ছাত্রীদের বেতন আদায় না হওয়ার কারণে শিক্ষক-কর্মচারীদের জীবন-যাপন করা কষ্টকর হয়ে পড়েছে। না পারছে কারও কাছে হাত পাততে, না পারছে সাহায্য চাইতে। করোনা পরিস্থিতিতে প্রাইভেট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরাই সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। গত মে মাসে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবর আবেদন করা হয়েছে।

 

এ ছাড়াও সরকারের দৃষ্টি আকর্ষন করে শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য আর্থিক প্রণোদনা চেয়ে সারাদেশে ন্যায় নিয়ামতপুরেও মানববন্ধন করা হলেও কোন ফল পাওয়া যায়নি। শিক্ষা বিষেøষকদের দাবি, প্রাইভেট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের জীবন মান রক্ষা না হলে দেশে বেকারত্ব বেড়ে যাবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ভেঙ্গে পড়বে।ফলে শিক্ষা ব্যবস্থা মুখথুবড়ে পড়বে বলে মনে করেন।