ফয়সাল আজম অপু: উজানের ঢলে চাঁপাইনবাবগঞ্জে প্রতিদিনই পদ্মার পানি হু-হু করে বাড়ছে। ইতিমধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জের অনেক স্থানে পদ্মার পাড় ভাঙতে শুরু করেছে। ঝুঁকিতে রয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার দেবিনগর ও ইসলামপুর ইউনিয়ন। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে এখন পর্যন্ত কার্যকর কোনো উদ্যোগ নিতে দেখা যায়নি।
সরজমিনে শনিবার ভাঙ্গন কবলিত চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার দেবীনগর ইউনিয়নের মহানন্দা নদীর ভাঙ্গনে ফেরিঘাট এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে এলাকাবাসী। প্রায় অর্ধ কিলোমিটার জুড়ে ভাঙ্গনে এরই মধ্যে বিলীন হয়েছে ফসলের মাঠ। বর্তমানে কয়েকটি বাড়ি হুমকির মুখে রয়েছে। ধুলাউড়ি হাট, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও রাস্তাসহ বহু ঘরবাড়ি বন্যার পানিতে তরিয়ে যেতে বসেছে।
দেবিনগর ইউনিয়নের স্থায়ী বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুদ্দীন বলেন, আমরা দেবিনগর বাসী ভয়ে দিনকাটাচ্ছি, কারন এলাকায় যেভাবে নদীর তীব্র ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। তাতে যেকোনো মূহুর্তে পুরো এলাকা নদীতে বিলীন হয়ে যাবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট শীঘ্রই ব্যবস্থা নেয়ার আকুল আবেদন জানান তিনি।
দেবিনগর ইউনিয়নের ভাঙ্গন কবলিত এলাকার ৪ নং ওয়ার্ড সদস্য বকুল ইসলাম বলেন, আমরা এলাকাবাসী ঐক্যবদ্ধ হয়ে জেলা প্রশাসক মহদয়, পানি উন্নয়ন বোর্ড সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সদর উপজেলা চেয়ারম্যানের মাধ্যমে লিখিত আবেদন জানিয়েছি। কেবল ভাঙ্গন শুরু হয়েছে শীঘ্রই উদ্যেগ না নিলে আমরা ভিটামাটি হারিয়ে সর্বশ্রান্ত হয়ে যাবো।
সোনালী ব্যাংক কর্মকর্তা নাসির আলি জানান, আমাদের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষিত জণপদ দেবিনগর ইউনিয়ন পদ্মা, মহানন্দার ভাঙ্গনে হুমকির মূখে। এখুনি ব্যবস্থা না নিলে ধুলাউড়ি হাট, দিয়ার কলেজ, ২ টি উচ্চ বিদ্যালয়, মাদ্রাসা, ৪ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দেবিনগর ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স, মসজিদ সহ পুরো এলাকা নদী গর্ভে বিলিন হয়ে যাবে।
জানা যায়, এমন অবস্থায় ভাঙ্গন এলাকা পরিদর্শন করে ভাঙ্গন রোধে স্থায়ীভাবে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডে ডিও লেটার দিয়েছেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান তসিকুল ইসলাম তসি।
এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ সাহেদুল আলম জানান, দেবীনগরের ভাঙ্গনের ব্যাপারে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। দেবিনগর এলাকায় খুব দ্রুত ১০০ মিটার ভাঙ্গন রোধে কাজ শুরু হবে বলে তিনি জানান। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান তসিকুল ইসলাম তসি জানান, দেবীনগরের ভাঙ্গন প্রতিরোধের বিষয়টি নিয়ে তিনি সদর আসনের সংসদ সদস্য হারুনুর রশিদ হারুনসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এলাকাবাসীও জোর অনুরোধ জানিয়েছেন ভাঙ্গন এলাকা যেন দ্রুত সংস্কার করা হয়। আমরা ভাঙ্গনরোধে যে কোনো ব্যবস্থা নিতে বদ্ধপরিকর বলেও জানান তিনি।