
অপহরণের এতদিন পরও মেয়ের কোনো খোঁজ না পেয়ে শোকে স্তব্ধ পরিবার। মেয়েকে উদ্ধারে থানা পুলিশের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও কোনো সহযোগিতা পাননি বলে দাবি পরিবারের।
বৃহস্পতিবার (১৬ মে) সকাল সাড়ে ১০টায় পর্যন্ত অপহৃত স্কুলছাত্রী উদ্ধার হয়নি। গত মার্চ মাসের ২৫ তারিখে অপহৃত শিক্ষার্থীর বাবা উত্তম কুমার সাহা বাদী হয়ে আমিনপুর থানায় অপহরণ মামলা দায়ের করেছেন।
অপহৃত রূপন্তী সাহা পুরান ভারেঙ্গা ইউনিয়নের হরিনাথপুর এসএসডি মডেল হাই স্কুল থেকে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এ বছর মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষা দিয়েছে। ফলাফলে সে জিপিএ ৪.৮৯ অর্জন করেছে।
মামলার এজহার সূত্রে জানা গেছে, পাবনার বেড়া উপজেলার আমিনপুরের পুরান ভারেঙ্গার হরিনাথপুর গ্রামের উত্তম কুমার সাহার মেয়ে রুপন্তী সাহা হরিনাথপুর এসএসডি মডেল হাই স্কুল থেকে এ বছর বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল।
স্কুলে পড়াশুনা অবস্থায় জাতসাখিনী ইউনিয়নের নন্দিয়ারা (বড়বাড়ি) গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে আবির ইসলাম রুপন্তীকে বিভিন্ন সময়ে নানাভাবে প্রেমের প্রলোভন ও বিবাহের প্রস্তাব দিয়ে উত্ত্যক্ত করে আসছিল। তার প্রস্তাবে রাজী না হওয়ায় বিভিন্ন হুমকি-ধামকি দেওয়া হচ্ছিল।
মেয়েটি এই বিষয়টি তার বাবা উত্তম কুমার সাহাকে জানায়। এরপর আবিরের বাসায় গিয়ে বিষয়টি বোঝানো হলে সে তার মেয়েকে অপহরণের হুমকি দেয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত মাসের ২৪ মার্চ রাত ১টার দিকে ঘর থেকে বাইরে বের হলে রুপন্তীকে আবিরসহ ৭/৮ জন মিলে জোরপূর্বক মাইক্রোবাসযোগে অপহরণ করে নিয়ে যায়। এরপর অনেক জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও কোনো সন্ধান পাওয়া না গেলে থানা পুলিশের দারস্থ হয়।
এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে আমিনপুর থানায় আবিরসহ ৫ জনের নামে অপহরণ মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মেয়ের মা ফাল্গুনী সাহা বলেন, মেয়ে এসএসসি পরীক্ষায় ভালো ফলাফল অর্জন করলেও বিষাদে দিন কাটছে আমাদের। আসলে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে আমার মেয়েকে অপহরণ করা হয়েছে। ছেলের মা ও বাবা এর সঙ্গে জড়িত রয়েছে। পুলিশ আমাদের কোনো সহযোগিতা করছে না। আমার মেয়েকে আমাদের মাঝে ফিরিয়ে দিতে পুলিশের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
অপহৃত শিক্ষার্থীর বাবা উত্তম কুমার সাহা বলেন, দীর্ঘ দেড় মাস অতিবাহিত হলেও মেয়েকে ফিরে পাওয়া যায়নি। থানায় মামলা করলেও মেয়েকে উদ্ধার করা তো দূরের কথা একজন আসামিকেও গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ। আমি মেয়েকে উদ্ধারে প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরছি। আমার মেয়ে জীবিত আছে না মেরে ফেলছে তার কিছুই বলতে পারছি না। মামলার তদন্তেরও কোনো অগ্রগতি নেই।
আমিনপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুনর রশীদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ ঘটনায় অপহরণ মামলা দায়ের করা হয়েছে। অপহৃত স্কুলছাত্রীকে উদ্ধারে আমাদের অভিযান চলছে। আসামিদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এ সম্পর্কে পরে বিস্তারিত জানাব।