পাবনায় বাংলার কবি সাহিত্যিকদের নিয়ে বৈশাখী সাহিত্য উৎসবের সমাপনী 


পাবনা প্রতিনিধি: পাবনা ঈশ্বরদী উপজেলার সাহাপুর ইউনিয়নের পদ্মানদী তীরবর্তী চর গড়গড়ি গ্রামে তিনদিনব্যাপী শুরু হওয়া দুই বাংলার কবি সাহিত্যিকদের নিয়ে বৈশাখী সাহিত্য উৎসবের সমাপনী হয়েছে মঙ্গলবার।
বাংলা বছরের প্রথমদিন থেকে এই উৎসবের আয়োজন করেছেন বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ওসাকার চরনিকেতন কাব্যমঞ্চ।
উৎসবের প্রথমদিনে মঙ্গলশোভাযাত্রা ও নবীণ প্রবীণ কবি সাহিত্যিকদের উপস্থিতিতে চর গড়গড়ির কাব্যমঞ্চ উৎসবমুখোর হয়ে উঠেছে। দেশ ও দেশের বাহির থেকে আমন্ত্রিত দুই বাংলার প্রায় তিন শতাধিক কবি-সাহিত্যিক এই উৎসবে অংশগ্রহণ করেন।
দেশ ও দেশের বাহিরের বিশেষ করে ওপার বাংলার বাংলা ভাষাভাষি কবি সাহিত্যিকদের অংশ গ্রহণে তিনদিনের এই বৈশাখী সাহিত্য উৎসব।
বাংলা সাহ্যিতের প্রচার প্রসারের লক্ষে বাংলা ভাষাভাষি এই সময়ের নবীণ ও প্রবীণ কবি সাহিত্যিকেরা এসেছেন এই উৎসবে আমন্ত্রিত হয়ে। উৎসবের দ্বিতীয় দিনে আসা ভারতে ওপার বাংলার প্রায় ২০জন সাহিত্যিক অংশ গ্রহণ করেছেন এবারের বৈশাখী উৎসবে।
বাংলা সাহিত্যের যুগপ্রবর্তক কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত এর নামে উৎসর্গ করা হয়েছে এবারের উৎসব। মাইকেল মধুসূদন দত্ত ছিলেন আধুনিক বাংলা সাহিত্যের প্রথম মহাকবি। তাই কবির প্রতি ভালোবাসা ও তার স্মরণে উৎবের মূল আয়োজন।
এছাড়া এবারের উৎসবে ছিল বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামকে নিয়ে বিশেষ আলোচনা পর্ব। অনুষ্ঠানে অতিথি বরণ থেকে শুর করে কবি কন্ঠে আবৃত্তি ও বর্তমান সময়ের সাহিত্যের নানা বিষয় নিয়ে হয়েছে উন্মুক্ত আলোচনা।
দিনব্যাপী নানা অনুষ্ঠানের পরে সন্ধ্যাকালী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে সমাপ্ত হয় এবারের উৎসব। তিনদিনব্যাপী এই সাহিত্য উৎসবের সভাপতিত্ব করছেন উৎসব উদ্যোক্তা কবি প্রাবন্ধিক সব্যসাচি বাংলা একাডেমি পুরস্কার প্রাপ্ত কবি মজিদ মাহমুদ। তিনদিনের উৎসবের উদ্বোধক ছিলেন পাবনার কৃতিসন্তান কবি জাহিদ হায়দার।
দেশবরেণ্য অর্ধশত কবি সাহিত্যিক এবারে উৎসবে অংশ গ্রহণ করেছেন। প্রতিদিন সকাল থেকে নানা আনুষ্ঠানিকতা মধ্যদিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়ে চলছে রাতপর্যন্ত।দেশ বরেণ্য কবি সাহ্যিকেরা বিশেষ করে কবি নাসির আহম্মেদ, কবি আসাদ মান্নান,
কবি আসলাম সানী, কবি ফরিদ আহম্মেদ, কবি মাহামুদ কামাল, কবি ড. তসিকুল ইসলাম, কবি অনিকেত শামীম, কবি অধীরকৃষ্ণ মন্ডল, অধ্যাপক ড. বরেন্দু মন্ডল, অধ্যাপক ড. সুরঞ্জন মিদ্দে, কবি জসীম উদ্দিন উল্লেখযোগ্য কবি সাহ্যিক এবারের উৎসবে অংশ গ্রহনে করেছেন।
চরনিকেতন কাব্যমঞ্চে উন্মুক্ত আলোচনা ছাড়াও হয়েছে কবি ভবনের সেমিনার কক্ষে বিশেষ আলোচনা পর্ব। ১০ম বারের মত ওসাকার চরনিকেতনের এই আয়োজনে বৈশাখী সাহিত্য উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গ্রামীণ জনপদের সবুজে ঘেরা প্রাকৃতিক পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে উৎসবের কার্যক্রম। সমাপনী দিনে আলোচনাসভা, কবি সম্মাননা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে সমাপ্ত হয়েছে এবারের উৎসব।
উৎসব দেখতে প্রতিদিন চরনিকেতন মঞ্চ প্রাঙ্গণে স্থানীয় সকল বয়সের মানুষের সমাগমে মুখরিত হয়ে উঠে অনুষ্ঠানস্থল।
অনুষ্ঠানে ভারত থেকে আসা শিল্পিরা নাচ গান কবিতা পাঠ করেন। ভষার আদান প্রদানের সাথে আধুনিক কবিতা লিখনিতে ভাষার ব্যবহার। কলম কালী ছাড়া প্রযুক্তি ব্যবহারে কবিতা লিখা।
সেই কবিতা নিজে প্রচার মাধ্যমসহ বন্ধুদের কাছে সহজ ভাবে পৌছে দেয়ার নানা উপায় নিয়ে হয় মতবিনিময়।
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কুঠিবাড়ি ও লালণ স্মৃতিবিজড়িত এই জনপদে দেশবরেণ্য কবি সাহিত্যিকদের আগমনে মিলনমেলায় পরিনত হয় চর গড়গড়ির কাব্যমঞ্চ প্রাঙ্গণ।
দেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম, ভাষা আন্দোলন ও মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্যদিয়ে অর্জিত এই বাংলাদেশ স্বাধীনতার স্বপক্ষের সৃজনশীল মানুষদের একটি স্থানে নিয়ে আসার এক অপার প্রচেষ্টা বৈশাখী সাহিত্য উৎসব এমনটি দবী আয়োজকদের।