পাবনা প্রতিনিধি : পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজম্যান্ট বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী শারমীন সুলতানা মীমের (২৬) ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় তার স্বামী আসিফ মোর্শেদকে (২৬) পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
এর আগে সোমবার (২৫ মার্চ) দুপুর ১২টার দিকে পাবনা শহরের মুনসুরাবাদ আবাসিক এলাকার ৫ নম্বর রোডের গ ব্লকের একটি ফ্ল্যাট থেকে মীমের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
নিহত শারমীন সুলতানা মীম মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার আজিজুল ইসলামের মেয়ে। আর মীমের স্বামী আসিফ মোর্শেদ পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও উন্নয়ন পরিকল্পনা বিভাগ থেকে অনার্স শেষ করেছেন। তিনি নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার পূর্ব এখলাসপুরের আবদুল মালেকের ছেলে।
নিহতের স্বামী আসিফ মোর্শেদ জানান, গতকাল বিকেল ৪টার সময় মীমের সঙ্গে তার সর্বশেষ কথা হয়। এরপর থেকে তার ফোন বন্ধ পান। সেহেরির সময় কল করলেও ফোনে পাওয়া যায়নি।
রাত সাড়ে ৪টায় তিনি ঢাকা থেকে রওনা হন। বাসায় এসে বাড়িওয়ালাকে সঙ্গে নিয়ে ফ্ল্যাটে গেলে দরজা বন্ধ দেখেন। এরপর পুলিশ এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আসে।
বাড়ির মালিক মেরিনা ইসলাম জানান, দুই মাস আগে মীম ও তার স্বামী বাসাটি ভাড়া নেন। তবে তারা সেখানে সব সময় থাকতেন না। তার স্বামী গত রাতে বাসায় ছিলেন না, ঢাকায় ছিলেন।
সকাল সাড়ে ৯টায় ঢাকা থেকে এলে একসঙ্গে ওই ফ্ল্যাটে যান। ফ্ল্যাটে গিয়ে দেখেন দরজা বন্ধ। দরজা ধাক্কাধাক্কির পরও না খুললে সবার সন্দেহ হয়। পরে পুলিশকে ফোন দিলে তারা ফায়ার সার্ভিসকে নিয়ে এসে দরজা ভাঙলে মীমকে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়।
নিহতের সহপাঠীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ হাসিনা হলের ৪০৯ নম্বর রুমের আবাসিক শিক্ষার্থী মীম। বিয়ের পর থেকে তিনি কখনো হলে থাকতেন কখনো স্বামীর সঙ্গে মনসুরাবাদে থাকতেন।
বিয়ের পর কারও সঙ্গে তেমন কিছু শেয়ার করতেন না। হঠাৎ করে এই ঘটনায় তারা বিস্মিত হয়েছেন। এটা আত্মহত্যা নাকি অন্য কিছু প্রশাসনকে সেটি তদন্ত করে বের করার অনুরোধ জানান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. কামাল হোসেন বলেন, আমরা আজ বেলা ১১টায় খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে যাই। তখন দেখি পুলিশ এবং ফায়ার সার্ভিস চলে এসেছে।
এরপর দরজা ভাঙলে তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। বর্তমানে আমরা থানাতেই আছি। তার স্বামীকে পুলিশি হেফাজতে রাখা হয়েছে।
পাবনা সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রওশন আলী বলেন, আমরা খবর পেয়ে পুলিশ পাঠাই। পুলিশ গিয়ে ফ্ল্যাট থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। রিপোর্ট এলে বিস্তারিত বলা যাবে।
তিনি আরও বলেন, তার স্বামী ঢাকায় থাকেন। সকালে এসেছেন। তাকে কিছু বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এ ছাড়া কিছু না। এ বিষয়ে বিস্তারিত পরে জানানো সম্ভব হবে।