পার্লামেন্ট বিলুপ্ত, ক্ষমতা ছাড়লেন মালির প্রেসিডেন্ট


আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পশ্চিম আফ্রিকার দেশ মালির প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম বোবাকার কেইতা সেনাবাহিনীর হাতে আটক হওয়ার পর সংসদ ভেঙে দিয়ে নিজের পদত্যাগ ঘোষণা করেছেন। মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী বোবোউ চিসে ও প্রেসিডেন্ট কেইতাকে আটকের পর দেশটির বিদ্রোহী সেনারা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখলে নেয়ার একদিন পরই বুধবার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে পার্লামেন্ট বিলুপ্ত ঘোষণা করে পদত্যাগ করেন কেইতা।

এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘আমাকে ক্ষমতায় রাখার জন্য কোনও রকম রক্তপাত হোক, সেটা আমি চাই না। আজ সেনাবাহিনীর কিছু অংশ হস্তক্ষেপকেই জরুরি মনে করেছে। আমার কি সত্যিই অন্য কোনও উপায় আছে? এই মুহূর্ত থেকে আমি দায়িত্ব ছাড়লাম।’

স্থানীয় সময় গতকাল মঙ্গলবার মালির রাজধানী বামাকো থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরের একটি প্রধান সামরিক ঘাঁটিতে গুলি ছোঁড়ার মধ্য দিয়ে অভ্যুত্থানের সূচনা হয়। এরপর দিনভর বিচ্ছিন্নভাবে রাজধানীতে সরকারি ভবনগুলোতে আগুন দিতে থাকে বিদ্রোহী সেনারা। রাতে সামরিক বাহিনীর একদল অফিসার প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীসহ দেশটির ঊর্ধ্বতন সামারিক কর্মকর্তাদের গ্রেফতার করে।

এভাবে মালিতে সেনা অভ্যুত্থান ও প্রেসিডেন্ট কেইতাসহ অন্যান্য শীর্ষ কর্মকর্তাদের গ্রেফতারের ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘ ও আফ্রিকান ইউনিয়ন (এইউ)। একইসঙ্গে তাদের দ্রুত মুক্তিরও দাবি জানানো হয়েছে।

এইউ কমিশনের চেয়ারম্যান মোসা ফাকি মাহামাত এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘মারির প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী ও মালিয়ান সরকারের অন্যান্য কর্মকর্তাদের জোর করে গ্রেফতারের ঘটনায় আমি তীব্র নিন্দা জানাই। তাদের দ্রুত মুক্তি দেয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’

বেতন-ভাতা এবং জিহাদিদের সঙ্গে চলমান সংঘাত নিয়ে মালির সেনা সদস্যদের মধ্যে অসন্তোষ ছিল বলে জানা গেছে। ২০১৮ সালে দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসলেও শুরু থেকেই দুর্নীতি, অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা ও সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের কারণে তোপের মুখে ছিলেন প্রেসিডেন্ট কেইতা।

২০১২ সালে মালিতে সংঘটিত বড় ধরনের বিদ্রোহের পর থেকেই দেশটিতে জিহাদিদের প্রভাব বাড়তে থাকে। প্রতিবেশী আলজেরিয়া, নাইজার ও মৌরিতানিয়ার মতো দেশগুলোও একই সংকট মোকাবিলা করে চলেছে।