পুঠিয়া (রাজশাহী) প্রতিনিধি : ‘যার কেউ নাই, তার পাশে না কি আল্লাহ আছে! হ্যাঁ গ্রামীন প্রবাদের মতোই হটাৎ করেই দেবদূত হয়ে এতিম ও মাদ্রাসার ছাত্রদের পাশে দাঁড়ালেন পুঠিয়া পৌরসভার মেয়র রবিউল ইসলাম রবি। “এতিমরা আমার ভাই” পবিত্র মাহে রমজানে এতিমদের ইফতার ও খাবারের সকল সুব্যবস্থার পুরো দায়িত্ব আমার। শুধু রমজান নয় সারা জীবন আমার পৌর এলাকার এতিমদের জন্য আমি কাজ করবো, তাদের পাশে থাকবো। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এতিমদের জন্য সবসময় কাজ করে যাচ্ছেন। বাংলাদেশের সকল এতিম শিশুকে তিনি নিজের সন্তানের মতো করে রেখেছেন। এতিম শিশুরা এখন আর এতিম নয়! বাংলাদেশ সরকারের রাষ্ট্র প্রধান শেখ হাসিনা এতিমদের একমাত্র মা! এ জন্য বিভিন্ন ভালো কাজের জন্য জাতিসংঘ প্রধানমন্ত্রীকে ‘মাদার অব হিউমিনিটি’ অ্যাওয়ার্ডে অজীবন সন্মাননা প্রদান করেছে।
রাষ্ট্র পরিচালনায় সফল চারবারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আদর্শ নিয়েই এ কাজের উদ্দ্যোগ নিয়েছি। এবং এতিমদের নিয়ে কাজ ও তাদের পাশে থাকতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি।
এদিকে, পুঠিয়া পৌরসভার চারআনী রাজবাড়ি বাজারের মিফতাহুস সন্নাহ মাদরাসাটি পুঠিয়া পৌরসভার একমাত্র বড় এতিমখানা এবং মাদ্রাসা। মাদ্রাসাটিতে এতিম শিশুদের কোরাআনের হাফেজি শিক্ষাসহ অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষা দেওয়া হয়। প্রতিষ্ঠাটি সরকারি না হওয়ায় বিভিন্ন সাহায্য সহযোগিতার মাধ্যমে (প্রায় ৪২ বছর) ধরে সুন্নামের সহিত পরিচালিত হচ্ছে। মাঝে মাঝে প্রতিষ্ঠানটি চালাতেও অনেক কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে, তখন সমাজের বিত্তবানদের দারস্থ হতে হয়। আর এবার পবিত্র মাহে রমজান মাসে হটাৎ পৌর মেয়রের এমন আশ্বাসে এতিম শিশুরা যেন নতুনভাবে বেঁচে থাকার অক্সিজেন পেয়েছে এমন মন্তব্য প্রতিষ্ঠানের পরিচালক মুফতি আতিকুর রহমানের। তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠানটি ১৯৭৮ সাল থেকে একজন মুফতি ও ৮ জন শিক্ষকমন্ডলী নিয়ে আল্লাহর দ্বীন শিক্ষার পাশাপাশি বাংলা, ইংরেজী, গণিতসহ অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষা দেয়া হয়। এখানে প্রতিবছর এতিম শিশুরা আল্লাহর দ্বীন শিক্ষা নিয়ে নিজেদের কর্ম উপযোগী হিসাবে গড়ে তোলা হয়। এছাড়াও মাদ্রাসাটি প্রায় ১৮ জন এতিম ও ৭০ জন ছাত্রদের সার্বিক বিষয়ে দেখাশুনা ও লেখাপড়া খরচ বহন করেন বিনা পয়সায়। বতর্মানে নিত্যপণ্যের বাজার উর্দ্ধো হওয়ায় বিত্তবানদের সামান্য সহযোগিতা ও যাকাতে অর্থে এতিমদের লালন-পালনসহ মাদ্রসাটি পরিচালনা দূরসাধ্য হয়ে পড়ছে। যা চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল। সরকারি ভাবে কোন বরাদ্দ বা মাসিক প্রণোদনার ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী করে সকলের সার্বিক সাহায্য সহযোগিতা কামনা করেন প্রতিষ্ঠান পরিচালক মুফতি আতিকুর রহমান।
বর্তমান পুঠিয়া পৌর মেয়রের মতো এমন সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিলে প্রতিষ্ঠানটির আরো অনেক সমস্যা দুরীভূত হতো। কোভিট-১৯ মহামারির এই দুর্যোগকালীন সময়ে এতিমদের সহযোগিতার এমন অভিনবো ঘটনায় এলাকায় এখন চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
এ বিষয়ে মেয়র রবিউল ইসলাম রবি জানান, পবিত্র রমজান মাস চলছে। রমজানের দ্বিতীয় দিনে আমার এক ছোট ভাই বিষয়টি আমায় অবহিত করলে বিষটি আমি নজরে নিই, আমি সাথে সাথে মাদ্রাসার কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলি। মাদ্রাসার মুফতি সাহেবকে ফোন দিয়ে এতিম ও মাদ্রাসার সকল সমস্যার বিষয়ে শুনি। পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আদর্শকে সামনে রেখে এতিমদের পাশে থাকার সিদ্ধান্ত নিলাম।
সেই মানবিক চেতনা থেকে এতিমদের রোমজানের সারা মাস ইফতার ও রাতের খাবার সরবারাহ করবো। সপ্তাহের সাত দিনে একদিন মাংস, দুইদিন মাছ, দুইদিন ডিম ও দুইদিন বিভিন্ন সবজি ও ইফতারে সময় ফলসহ ইফতারির মজাদার খাবার আইটেম থাকবে। এছাড়াও মাদ্রাসাটির বিষয়ে কি ভাবে আরো উন্নতি করা যায় এবং যেকোন সময় সকল এতিম ছেলেদের স্বাস্থ্য বিধি নিশ্চিতে আমি সকল প্রকার সহযোগিতা করবো। আর সরকারি ভাবে কোন সুযোগ থাকলে প্রতিষ্ঠানটির বিষয়ে উপরে মহলে জানিয়ে ব্যবস্থা নিবার আশ্বাস প্রদান করেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, যেহেতু আমরা দুর্যোকালীন সময় পার করছি, তাই সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। মহামারির দুর্যোগ সময়ে এতিমদের ঘরে থাকার পরামর্শ দিয়ে কোভিট-১৯ থেকে নিজেকে নিরাপদ থাকার সু-পরামর্শ দেন। প্রতিষ্ঠানটিকে কোভিট-১৯ থেকে মুক্ত রাখার যাবতীয় পদক্ষেপ গ্রহন করেন।