পুঠিয়া (রাজশাহী) প্রতিনিধি : রাজশাহীর পুঠিয়া পৌরসভার এলাকায় পানি নিস্কাশনের জন্য হাইওয়ে মহাসড়কের এরিয়ায় ড্রেন নির্মাণের ঢালাই কাজ ইতিমধ্যে শুরু করেছে। অভিযোগ উঠেছে সড়ক ও জনপদের এরিয়ায় খাল খনন করে ড্রেন নির্মাণ করছে। তবে পৌর কর্তৃপক্ষ বলছে, আমরা অনুমতি নিয়ে ড্রেন নির্মাণের কাজ শুরু করেছি। অপরদিকে এলাকাবাসী বলেন, রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়কটি ভবিষৎ এ ফোর লেন হবে। পৌর কর্তৃপক্ষ জেনেশুনে মহাসড়কের এরিয়ায় এক কোটি টাকা ব্যায়ে ড্রেনটি নির্মাণ করছে। যদি রাস্তাটি ফোর লেন হয়, তবে এই ড্রেনটি নষ্ট হবে। তাহলে এই এক কোটি টাকা প্রকল্প ভেস্তে যাবে বলে মনে করছেন এলাকাবাসী। বর্তমানে পানি জমে থাকায় কাজটি বন্ধ রেখেছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।
পৌরসভা অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থ বছরে রাজশাহী জেলার পুঠিয়া পৌরসভার ৭ ও ৮ নং ওয়ার্ডের তাছের স্বর্ণকারের বাড়ি থেকে ঝলমলিয়া মূসা খাঁ নদী পর্যন্ত জলাবদ্ধতা নিরসন করতে প্রায় এক কিলোমিটার ড্রেন নির্মাণ কাজ শুরু করে। যার দৈর্ঘ্য মাত্র ২৯৭ মিটার এবং প্রস্ত ও উচ্চতা দুই মিটার। আর বাঁকি টুকু মাটির ড্রেন তৈরি করা হবে। আবহাওয়া ও জলবাযু অধিদপ্তরের অধিনে প্রকল্পের আওতায় এক কোটি টাকা ব্যয়ে টেন্ডার প্রাপ্ত হয়ে কাজ শুরু করে নাটোরের গোলাপ কন্সট্রাকশন।
ঘটনাস্থলে গিয়ে জানা গেছে, কালিতলা তাছের স্বর্ণকারের বাড়ির নিকট ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক উত্তরে খালে ড্রেন নির্মাণ করা হচ্ছে। সেই খাল থেকে আরো উত্তরে ৫ হাত পর সড়ক ও জনপদের পিলার পুতা রয়েছে। অনুরুপ কাঁঠালবাড়িয়া আবুল কালাম আজাদ এর বাড়ির পার্শ্বে মহাসড়ক এরপর উত্তরে ড্রেন এরপর আরো উত্তরে ১৬ হাত পরে সড়ক ও জনপদের পিলার পুতা রয়েছে। এছাড়া ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজের শুরুর দিকে নিম্ন মানের ইট দিয়ে কাজ শুরু করে। কয়েক বার অভিযোগ দেওয়া হয়। পৌর প্রকৌশলী কয়েকবার এসে সেই নিম্ন মানের ইট পরিবর্তন করায়।
এলাকাবাসী জানান, রাস্তার জায়গায় এক কোটি টাকা খরচ করে খাল খনন ও ড্রেন তৈরি করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক ফোর লেনে উন্নতি করা হলে ড্রেন রাস্তার ভেতর চলে যাবে তাহলে এতোগুলো টাকা পানিতে পড়বে। এতোগুলো টাকা যাতে নষ্ট না হয়, তাই সঠিক জায়গা নির্ধারণ করে পৌরসভার ড্রেন নির্মাণের দাবী করেন।
পৌর মেয়র রবিউল ইসলাম রবি জানান, আমরা উপজেলা পরিষদে মিটিংএ আলোচনার মাধ্যমে রেজুলেশন করে পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং সড়ক ও জনপদকে জানানোর পর তারা এসে আমাদেরকে দেখিয়ে দেওয়ার পর আমরা ড্রেনের কাজ শুরু করেছি। রাস্তা ফোর লেন হওয়ার সময় সেই ড্রেন রাস্তার ভেতর ঢুকে যাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ফোর লেন রাস্তার জন্য কোন সমস্য হলে সড়ক বিভাগ আমাদেরকে বললে আমরা আরো চাপিয়ে দেবো।
পুঠিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ ওলিউজ্জামান জানান, এ ব্যাপারে উপজেলা পর্যায়ে একটি কমিটি আছে। সেই কমিটির মাধ্যমে আমরা প্রস্তবনা দিয়েছি ড্রেনটা নির্মান করা হলে জন দূর্ভোগ কমবে। রাস্তা ফোর লেন হওয়ার সময় সেই ড্রেন রাস্তার ভেতর ঢুকে যাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, এইটা সড়ক ও জনপদ তাদের দুই পার্শ্বেই জায়গা আছে সেই মোতাবেক রাস্তা করবে। তবে আমি পৌরসভার সাথে কথা বলছি তারা যেন রাস্তটি বড় হতে গেলে সেই ড্রেন যাতে ক্ষতিগ্রস্থ না হয় সেই মোতাবেক কাজ করার জন্য বলবো।
রাজশাহী সড়ক ভবনের উপ-সহকারী প্রকৌশলী এবং সার্ভেয়ার আনোয়ারুল ইসলাম (সোহাগ) জানান, পৌরসভা আমাদের কোন লিখিত ভবে জানাননি। তবে আমরা খবর পাওয়ার পর সেখানে গিয়েছিলাম। কিন্তু তাদেরকে কোন লিখিত অনুমতি প্রদান করা হয়নি। আর রাজশাহী-নাটোর মহাসড়ক এর রাস্তার জমি অধিগ্রহণকৃত না তাই বিষয়টি আমরা এতোটা ক্লিলিয়ার না।
রাজশাহী সড়ক ভবনের নির্বাহী প্রকৌশলী শামসুজোহা জানান, তারা আমাদেরকে কিছু জানায়নি। তবে বিষয়টি জানানোর পর আমাদের সার্ভেয়ার সোহাগ সেখানে গিয়েছিলো তিনি আপনাদেরকে বিস্তারিত বলতে পারবে।
এ ব্যাপারে রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ কোহিনুর আলম এর মন্তব্য নেওয়ার জন্য ০১৩১৮-২৩৫১৭৮ নম্বর মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেনি। যার কারনে মতামত নেওয়া সম্ভব হয়নি।