পোর্ট সিটি কলম্বো দেশের জন্য কোন লাভ বয়ে আনে না বলে মত শ্রীলঙ্কান


বিশ্লেষকদের নবনির্মিত ভূমি পুনরুদ্ধারে পোর্ট সিটি কলম্বো একটি প্রধান শহর হয়ে উঠছে। সমুদ্রতীরবর্তী এলাকায় এটি আন্তর্জাতিক আর্থিক কেন্দ্র, আবাসিক এলাকা এবং বিলাসবহুল ইয়টের মতো সুবিধাগুলি দিচ্ছে। নতুন শহরটিতে প্রায় ৮০ হাজার লোক বাস করবে বলে আশা করা হচ্ছে এবং যারা সেখানে বিনিয়োগ করবে এবং ব্যবসা করবে তাদের ট্যাক্স ছাড় প্রদান করা হবে। চীন বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ বাস্তবায়ন শুরু করার এক বছর পর ২০১৪ সালে পোর্ট সিটি প্রকল্পটি আনুষ্ঠানিকভাবে উন্মোচন করা হয়েছিল।সূত্র: A24 News Agency

দেশটির রাজনৈতিক বিশ্লেষক আগিথ গিহান জানান, আমরা সবাই জানি, চীন আমাদের দেশের অভ্যন্তরীণ সম্পদ দখল করেছে এবং এর ফলে আমরা ঋণের মধ্যে আটকে গেছি। এমন পরিবেশে তারা কলম্বোতে একটি নতুন পোর্ট সিটি তৈরি করেছে। এই বন্দর আমাদের দেশের জন্য কী পরিণতি নিয়ে আসবে তা সত্যিই আমাদের ভাবতে হবে।

একই সুর আরেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক গয়ান পার্নান্দোর কণ্ঠেও, চীনের সাহায্যে আমাদের দেশে রাস্তা তৈরি করা হয়েছিল। বর্তমানে প্রচুর পরিমাণে এক্সপ্রেসওয়ে তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু সেসব রাস্তায় গাড়ি চালানোর জন্য যে জ্বালানি লাগে তা আমদানি করার জন্য দেশে কোনো বৈদেশিক মুদ্রা নেই। কেউ কেউ বলে সাইকেল ব্যবহার করতে।

ভবন নির্মাণ করা যাবে এমন ১৭৮ হেক্টর জমির মধ্যে, ১১৬ হেক্টর জমি প্রকল্পের কোম্পানিকে ৯৯ বছরের লিজে দেওয়া হয়েছে। বাকি ৬২ হেক্টর জমির মালিকানা সরকারের। পোর্ট সিটি বিনিয়োগকারীদের দীর্ঘমেয়াদী ট্যাক্স বিরতির অনুমোদন আছে। এত বড় ট্যাক্স বিরতি শ্রীলঙ্কার সামগ্রিক আয়ের উন্নতিতে সহায়ক নয়।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক আগিথ গিহান বলেছেন যে দেশটি পোর্ট সিটিতে বিক্রয় করে এবং পর্যটন থেকে মুনাফা অর্জন করে না। তিনি জোর দিয়ে বলেন যে শ্রীলঙ্কা এই প্রকল্প থেকে লাভবান হচ্ছে না।মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সতর্ক করেছে যে একটি শিথিল ব্যবসায়িক পরিবেশ অর্থ পাচারকারীদের জন্য একটি আশ্রয়স্থল হতে পারে। ২০১৭ সালে ঋণ পরিশোধে অসুবিধার কারণে বন্দরটি বিদেশী কোম্পানির কাছে হস্তান্তর করা হয়েছিল যা দীর্ঘমেয়াদে বিদেশী কোম্পানির কাছে কলম্বো পোর্ট সিটি হারানোর ঝুঁকি বাড়ায়।

তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশ বন্দর নগরীতে পণ্য বিক্রি এবং পর্যটন শিল্পের আয় পায় না। সে সবই চীনের। তাহলে আমাদের দেশ পোর্ট সিটি থেকে কোনো সুবিধা পাবে না। আমাদের সম্পদ হস্তগত হয়েছে। আমাদের দেশে এর জন্য কে দায়ী থাকবে?”

এ প্রসঙ্গে শ্রীলঙ্কার ট্রেড ইউনিয়ন নেতা বার্নার্ড পার্নান্দো বলেন, দেশের দরিদ্র মানুষ এই বন্দর শহরের ফলে কোনো স্বস্তি পায়নি। এর থেকে স্বস্তি পাচ্ছে চীনারা । তারাই এর সুবিধা পাবে। আজকাল এসব এলাকায় চীনাদের প্রায়ই দেখা যায়। আমার সন্দেহ হচ্ছে আগামি ১০ বছরের মধ্যে শুধুমাত্র কলম্বো না বরং পুরো দেশ চীনা উপনিবেশে পরিণত হবে।

ভিডিওটি দেখতে ক্লিক করুনঃ https://youtu.be/hoNQ3pZIqDo