বগুড়ায় অতিরিক্ত টাকা না দিলে রেজিস্ট্রি হয়না জমির দলিল


বগুড়া প্রতিনিধি: বগুড়ার শেরপুরে দলিল লেখক সমিতিতে সরকারি ফি ব্যতিত অতিরিক্ত টাকা না দিলে জমির দলিল রেজিস্ট্রি হয়না। এমন অভিযোগ রয়েছে দলিল লেখক সমিতির নেতাদের ও সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের কতিপয় কর্মচারীর বিরুদ্ধে। সেক্ষেত্রে প্রতিনিয়ত অতিরিক্ত টাকা দিয়ে জমি রেজিস্ট্রি সম্পন্ন করে নিতে বাধ্য হয় শত শত জমির ক্রেতা-বিক্রেতা। সমিতির নেতাদের দাপট দেখিয়ে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ হাতিয়ে নিলেও প্রতিবাদ করতে সাহস পাচ্ছেনা ক্রেতা-বিক্রেতারা ।

তবে এবার ওই সমিতির নেতাদের অবৈধ কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে অর্থ হাতিয়ে নেয়াসহ নানা হয়রানীর অভিযোগ তুলেছেন এক নারী। ৬ মার্চ বুধবার বেলা ১২ টায় শেরপুর উপেজলা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই অভিযোগ করেন। অভিযোগকারি নাজনিন পারভীন পলি বগুড়ার শেরপুর পৌর শহরের কলেজ রোড এলাকার বাসিন্দা ও বর্তমান পৌর মেয়র জানে আলম খোকার ছোট বোন।

এসময় অভিযোগকারী পলি বলেন, তিনি গত রবিবার তার দুই শতক জমি বিক্রি করার জন্য ক্রেতাকে সাথে নিয়ে শেরপুরের সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে যান। সেখানে অফিসের কর্মকর্তা সকল কাগজপত্রের সঠিকতা নিশ্চিত করে দলিল লিখে নিয়ে আসতে বলেন। এরপর তিনি শেরপুর দলিল লেখক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিনের কাছে দলিলটি লিখে নেন। কিন্তু দলিল লেখক জামাল মোটা অংকের টাকা দাবি করে দলিলটি আটকে রাখে। এরপর সমিতির সভাপতি ফেরদৌস ও অফিসের কর্মচারী জাহিদুল ইসলামও টাকা দাবি করেন। শুধু তাই নয়, অভিযুক্তরা জমির ক্রেতার কাছেও টাকা দাবি করলে তিনি জমি কিনতে অস্বীকার করেন। এতে পলি আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।

গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে পলি জানান, “আমি জমিটি সাড়ে ৫ লক্ষ টাকায় বিক্রি করতে চেয়েছিলাম। তারা আমার কাছে ১ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করেন। এভাবে তারা সমিতির নামে প্রতিদিন অসহায় মানুষদের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এর উপযুক্ত বিচার হওয়া দরকার।”

এ বিষয়ে অভিযুক্ত শেরপুর দলিল লেখক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিন বলেন, “জমিটি নিয়েএকটি মামলা চলমান রয়েছে। এজন্য দলিল রেজিস্ট্রি করা যায় নি। আমি তার কাছে কোন টাকা দাবি করি নাই।”

টাকা চাওয়ার কথা অস্বীকার করে অফিসের কর্মচারি জাহিদুল ইসলাম বলেন, “জমিটির দলিল রেজিস্ট্রি করতে আইনগত কোন বাধা নেই। কিন্তু তারা আমাদের কাছে দলিল নিয়ে আসেনি। তাই রেজিস্ট্রি করা সম্ভব হয়নি।”

এবিষয়ে শেরপুর সাব-রেজিস্ট্রিার মিজানুর রহমান বলেন,“সমিতির বিষয়ে আমি জানি না। আমার কাছে কেউ দলিল নিয়ে আসলে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সঠিক থাকলে রেজিস্ট্রি করে দেওয়া হবে।”