বগুড়া প্রতিনিধি: ৬ষ্ঠ উপজেলা নির্বাচনের ৪র্থ ধাপের শেষ হয় ৫জুন। কিন্তু নির্বাচন অনুষ্ঠানের ২দিন পর এবার কারচুপির অভিযোগ করেছেন বগুড়ার শেরপুরের কয়েকজন পরাজিত প্রার্থী। প্রাপ্ত ভোট সংখ্যা পরিবর্তন করা, জাল ভোট প্রদানে সহায়তা করা সহ বিভিন্ন অনিয়মের কথা জানিয়ে তারা পুননির্বাচনের দাবি জানানো হয়।
এসব বিষয়ে শনিবার(০৮ মে) রাতে শেরপুর শহরের একটি রেস্তোরাঁয় এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন এসব প্রার্থীরা। এসময় চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী এমএ হান্নান (জোড়া ফুল), ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী বিধান ঘোষ (টিয়াপাখি), মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী ফাতেমা খাতুন ময়না (কলস), মর্জিনা খাতুন (ফুটবল) ও ফিরোজা খাতুন (প্রজাপতি) উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী এমএ হান্নান বলেন, নির্বাচনে জনগণ স্বতস্ফুর্ত ভাবে ভাট দিয়েছেন। কিন্তু সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার ইন্ধনে প্রিজাইডিং ও সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তারা পক্ষপাতিত্ব করে নির্বাচনের ফলাফল পরিবর্তন করেছেন। বিভিন্ন কেন্দ্রে ঘোষিত ফলাফলের সাথে উপজেলা কন্ট্রোল রুমে ঘোষিত নির্বাচনী ফলাফল ঘোষণার কোন মিল নেই।
অনেক কেন্দ্রে প্রিজাইডিং অফিসারের সামনেই ব্যালটে সীল মেরে বাক্স ভর্তি করা হয়েছে। ফলাফল ঘোষণা করার আগে লিখিত অভিযোগ করা হলেও একতরফা ভাবে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়াও হাঁস মার্কা প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শিখা খাতুন একজন নির্বাচিত ইউপি সদ্যস্য। কিন্তু তিনি উপজেলা নির্বাচনের হলফনামায় তথ্যগোপন করেছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়।
পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ফিরোজা খাতুন বলেন, ভোট গণনা শেষে উপজেলার বিশালপুর ইউনিয়নের পানিসারা সরাকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ফলাফল ঘোষণার সময় আমার প্রজাপতি মার্কায় ভোট ছিলো ১৪৪টি ও হাঁস মার্কায় ভোট ছিলো ২৫৩টি। কিন্তু উপজেলায় এসে আমার ভোট দেখানো হয়েছে ৬৭টি আর হাঁস মার্কার ভোট ৫১৩টি। চুড়ান্ত ফলাফল ঘোষনার আগে আমি সহকারি রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছি। কিন্তু হাঁস মার্কার প্রার্থীকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে।
টিয়া প্রতিকের প্রার্থী বিধান কুমার ঘোষ বলেন, নির্বাচনের আগে আমাকে যে নমুনা প্রতীক দেওয়া হয়েছে ব্যালটের সাথে তার মিল নেই। তাই ভোটারগণ বিভ্রান্ত হয়েছেন। আমি মৌখিক অভিযোগ করলেও তা আমলে নেওয়া হয়নি।
উপস্থিত পরাজিত প্রার্থীগণ এই নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে পুননির্বাচনের দাবি করেন। পাশাপাশি এজন্য তারা আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার ঘোষণা দেন।
এ বিষয়ে শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারি রিটার্নিং অফিসার মো. সুমন জিহাদী বলেন, “নির্বাচনের অনিয়ম সংক্রান্ত কোন লিখিত অভিযোগ আমার কাছে করা হয়নি। তবে নির্বাচনের দিন রাত ৮টায় একজন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী আমার মাধ্যমে রিটার্নিং অফিসার বরাবর একটি অভিযোগ করেছেন। আমি তৎক্ষণাত সেটি রিটার্নিং অফিসারের কাছে পাঠিয়েছি। তিনি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।”