বগুড়ায় জালিয়াতির অভিযোগে আটক ২২, বহিষ্কার ২৬


বগুড়া প্রতিনিধি: বগুড়ায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় মোবাইল ফোন ও ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস ব্যবহারের অভিযোগে ২২ পরীক্ষার্থীকে আটক করা হয়েছে। এরমধ্যে নারী পরীক্ষার্থী রয়েছেন ১৫ জন। এছাড়া বহিষ্কার করা হয়েছে ২৬ জনকে। আটক পরীক্ষার্থীদের বগুড়া সদর ও শাজাহানপুর থানায় সোপর্দ করেছে জেলা প্রশাসন। তবে পুলিশ রাতে দুটো থানায় ১২টি পৃথক মামলা দায়ের হয়েছে।

শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত বগুড়া শহরের ৩৭টি কেন্দ্রে একযোগে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
জানা গেছে, পরীক্ষার্থীরা মোবাইল ও কানে ছোট ডিভাইস ব্যবহার করে পরীক্ষা দেওয়ার সময় তাদের সন্দেহজনক হিসেবে চিহ্নিত করেন কক্ষ পরিদর্শক মোঃ আবু সুফিয়ান শিক্ষক মাধ্যমিক শাখা বিয়াম মডেল স্কুল এন্ড কলেজ। এসময় তাদেরকে কর্তব্যরত অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মোছাঃ আফসানা ইয়াসমিনের উপস্থিতিতে দেহ তল্লাশি করে আনোয়ার ও আসাদুজ্জামানের কানে ও হাতে ডিভাইস এবং জাকিরুলের হাতে পরিহিত পোশাকের ভিতর মোবাইল পাওয়া যায়।

এ ঘটনায় জেলায় মোট ২৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত বগুড়া শহরের ৩৭টি কেন্দ্রে একসাথে এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষা চলাকালে আটক পরীক্ষার্থীরা গোপনে মোবাইল ফোন কেন্দ্রে নিয়ে যায়। তারা প্রশ্নপত্রের ছবি তুলে বাইরে পাঠায়। এরপর বাইরে থেকে উত্তর তৈরি করে ইলেকট্রনিক ডিভাইসের মাধ্যমে উত্তর পাঠিয়ে দেওয়া হয়। পরীক্ষার্থীদের কানে ব্যবহার করা ইলেকট্রনিক ডিভাইসের সাহায্যে উত্তরপত্র পূরণ করার সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বিভিন্ন পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে ২২ জনকে আটক করেন।

আটকদের মধ্যে এপিবিএন পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ কেন্দ্র থেকে ১ জন, সরকারি আজিজুল হক কলেজ থেকে ৪ জন, বিয়াম মডেল স্কুল এন্ড কলেজ থেকে ৩ জন, বগুড়া সিটি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ৩ জন, পুলিশ লাইন স্কুল এন্ড কলেজ থেকে ১ জন, বগুড়া টেকনিক্যাল ট্রেনিং ইনস্টিটিউট থেকে ১ জন, সরকারি মুজিবুর রহমান মহিলা কলেজ থেকে ১ জন, বগুড়া সরকারি কলেজ থেকে ১ জন এবং বগুড়া পলিটেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট থেকে ৪ জন রয়েছেন। এছাড়া শাজাহানপুর উপজেলা থেকে ৩জনকে আটক করা হয়েছে। বহিস্কার করা হয়েছে ৬জনকে। করতোয়া মাল্টিমিডিয়া স্কুল এন্ড কলেজ কেন্দ্র থেকে ১জন, সরকারি শাহ সুলতান কলেজ থেকে ৪জন এবং সরকারি মুজিবুর রহমান মহিলা কলেজ থেকে ১জনকে বহিস্কার করা হয়েছে।

বগুড়া সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) শাহিনুজ্জামান বলেন, আটককৃতদের নামে পাবলিক পরীক্ষা আইনে পৃথক ১০টি মামলা দায়ের করেছে শিক্ষা অফিস। তবে আটককৃতদের আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। শাজাহানপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম বলেন, এ থানা এলাকায় দুটো কেন্দ্র থেকে তিনজন নারী পরীক্ষার্থীকে সোপর্দ করে থানায়। তাঁদের বিরুদ্ধে পৃথক দুটো মামলা দায়েরের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।

বগুড়া জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম বলেন, জেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় ৩৭টি কেন্দ্রে ৩২ হাজার ১৭৯ জন পরীক্ষার্থী ছিলেন। এর মধ্যে পরীক্ষায় উপস্থিত হয়েছেন ২৩হাজার ৫৬৫ জন। পরীক্ষায় অসুদোপায় অবলম্বনের জন্য ২৬ জনকে বহিস্কার করা হয়। আর ২২ জনকে পরীক্ষায় মোবাইল ডিভাইস ব্যবহার করার জন্য আটক করা হয়েছে।