দীপক কুমার সরকার, বগুড়া প্রতিনিধি: দিন দিন বগুড়ায় করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছেই। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রাখার চেষ্টায় জেলা প্রশাসন পৌরসভায় ৯টি এলাকাকে ‘রেড জোন’ ঘোষণা করেছে।
জেলা প্রশাসক ফয়েজ আহাম্মদ স্বাক্ষরিত গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, শহরের চেলোপাড়া, নাটাইপাড়া, নারুলী, জ্বলেশ্বরীতলা, সূত্রাপুর, মালতিনগর, ঠনঠনিয়া, হাড়িপাড়া ও কলোনি এলাকা রেড জোন হিসেবে চিহ্নিত করে ঘোষণা দেয়া হয়। গত ১৪ জুন বিকাল ৫টা হতে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এসব এলাকা রোড জোন থাকবে।
জেলা প্রশাসক জানান, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে বিষয়টি দেখার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, সোমবার সকাল থেকে সিদ্ধান্ত পুরোপুরি বাস্তবায়ন হবে। এ নিয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বৈঠক করা হবে।
গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, রেড জোন এলাকায় সব ধরনের ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, রাজনৈতিক গণজমায়েত নিষিদ্ধ করা হলো। সকল জনসাধারণ আবশ্যিকভাবে নিজ নিজ আবাসস্থলে অবস্থান করবেন। সকল প্রকার যানবাহন বন্ধ থাকবে।
কোভিড-১৯ মোকাবিলায় দায়িত্বপ্রাপ্ত বেসরকারি গাড়ি চলাচলে জেলা প্রশাসকের অনুমতি নিতে হবে। অ্যাম্বুলেন্স, রোগী পরিবহন, স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী ব্যক্তির পরিবহন, কোভিড-১৯ মোকাবিলা ও জরুরি পরিষেবা প্রদানকারী কর্তৃপক্ষের গাড়ি, জরুরি সংবাদকর্মীর গাড়ি এর আওতার বাইরে থাকবে।
এলাকার সকল প্রকার দোকান, মার্কেট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। ওষুধের দোকান, ইন্টারনেট সেবা ও মোবাইল ব্যাংকিং পরিষেবা এর আওতার বাইরে থাকবে। কোভিড-১৯ মোকাবিলা ও জরুরি সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান সীমিত আকারে খোলা থাকবে। সকল হাসপাতাল, চিকিৎসাসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান ও কোভিড-১৯ মোকাবিলায় পরিচালিত ব্যাংকিং সেবা এর আওতার বাইরে থাকবে। বগুড়া জেলায় আন্তঃ উপজেলা যানবাহন ও জনসাধারণের চলাচল বন্ধ থাকবে। জরুরি প্রয়োজনে বের হলে সকলকে আবশ্যিকভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে ও যথাযথভাবে মাস্ক পরিধান করতে হবে। এছাড়া প্রকাশ্য স্থানে বা গণজমায়েত করে কোনও প্রকার ত্রাণ, খাদ্য সামগ্রী বা অন্য কোনও পণ্য বিতরণ করা যাবে না।
এদিকে রবিবার বিকাল ৫টা থেকে বগুড়া পৌরসভার ৯টি এলাকাকে রোড জোন ঘোষণা করা হলেও তা কেউ মানছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। সবকিছু আগের মতো চলছে। অনেক এলাকার জনগণ রেড জোন কী তা বোঝেন না। আবার বুঝলেও তা মানছেন না। কোথায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কোনও সদস্যকে দেখা যায়নি।
বগুড়া স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্র জানায়, ররিবার রাত পর্যন্ত জেলায় মোট ১ হাজার ৪০২ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। করোনা আক্রান্ত হয়ে দুই নারীসহ ১৭ জন মারা গেছে। এছাড়া ঢাকায় চিকিৎসা নিতে গিয়ে আরও ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে।