![](http://rajshahipratidin.com/wp-content/uploads/2021/09/oka_photo-300x169.jpg)
‘দৈনিক ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা লোডশেডিং বিএনপির তথাকথিত উন্নয়ন ছিল’ বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘শুধু বিদ্যুৎ খাত নিয়ে তুলনা করলেই বিএনপির দাম্ভিকতা চূর্ণ হতে বাধ্য।’
সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে আজ সোমবার এক ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।
বিএনপির নেতাদের উদ্দেশ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তাঁরা নিশ্চয়ই ভুলে যাননি, তাঁদের সময়ে সারের জন্য কৃষকদের প্রাণ দিতে হয়েছিল, এসব কি স্থিতিশীলতার নজির?’
এ সময় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, ‘আর্থ-সামাজিক প্রতিটি সূচকে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে বলেই বিএনপির গাত্রদাহ হচ্ছে।’
বিএনপির শাসনামলে স্থিতিশীল সামষ্টিক অর্থনীতির সফল বাস্তবায়ন হয়েছে—বিএনপির নেতাদের এমন দাবি প্রসঙ্গে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘এটা আদৌ সত্য নয়। তাঁদের এ দাবি অন্যান্য বক্তব্যের মতোই অসত্য ও অন্তঃসারশূন্য।
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘বিএনপির শাসনামলে অর্থনৈতিক উন্নয়নে ছিল চরম স্থবিরতা, বাজেট ছিল পরনির্ভর, ছিল না বাস্তবায়নে কোনো সক্ষমতা। বিএনপির উন্নয়ন নীতি ও কৌশল ছিল ভ্রান্ত এবং গণবিরোধী। উৎপাদন ব্যবস্থার মূল চালিকাশক্তি বিদ্যুৎ ব্যবস্থাকে বিএনপি ধ্বংস করে দিয়েছিল।’
‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদক্ষ নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ ঘুরে দাঁড়িয়েছে’ উল্লেখ করে সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপির ক্ষয়িষ্ণু, মুখোশ পরা অর্থনীতির বিপরীতে টেকসই ও স্থিতিশীল অর্থনৈতিক উন্নয়ন আজ অদম্য গতিতে এগিয়ে চলছে। বাংলাদেশ আজ বিশ্ব অর্থনীতির বিস্ময়।’
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘শেখ হাসিনার সরকারের উন্নয়নবান্ধব নীতি ও কৌশলের কারণে ৪৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি রেকর্ড পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ অর্জিত হয়েছে। বর্তমানে মাথা পিছু আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে দুই হাজার ২২৭ ডলার।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘ক্রমাগত রাজস্ব আয় বৃদ্ধি, ঈর্ষণীয় প্রবাসী আয়, রপ্তানি আয়, কর্মসংস্থান, অতিদারিদ্র হ্রাস, দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধি, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণসহ প্রতিটি সূচকে যে অগ্রগতি সাধিত হয়েছে, তা সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা ও টেকসই উন্নয়নের পথকে মসৃণ করেছে। বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা সূচক এবং মানব উন্নয়ন সূচকেও বাংলাদেশ দিন দিন উন্নতি করছে।’
বিএনপির নেতাদের উদ্দেশ করে ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘বিএনপির সময়কালে অর্থনৈতিক সূচকের পরিবর্তে যেসব সূচকে তারা উন্নতি করেছিল, তা হচ্ছে—রাজনৈতিক নিপীড়ন, দুর্নীতি, লুটপাট, সন্ত্রাস, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ওপর নির্যাতন, মুদ্রাপাচার, সাম্প্রদায়িক শক্তির তোষণ ইত্যাদি। বিএনপি কল্যাণমুখী অর্থনীতির বিপরীতে প্রতিষ্ঠা করেছিল লুটপাটের অর্থনীতি।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের অর্থনৈতিকে অন্ধকার গহ্বর থেকে সমৃদ্ধির সোপানে উন্নীত করেছেন উল্লেখ করে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘তাঁর (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল অর্থনীতির মর্যাদায় অভিষিক্ত। বাংলাদেশ আজ বিশ্বের সমৃদ্ধ দেশগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে ইলিশ উৎপাদনে প্রথম ও আউট সোর্সিংয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে। অন্যদিকে, তৈরি পোশাক রপ্তানিতে দ্বিতীয়, প্রবাসী আয়ে অষ্টম, ধান উৎপাদনে চতুর্থ, পাট রপ্তানিতে প্রথম ও উৎপাদনে দ্বিতীয় এবং মিঠাপানির মৎস্য উৎপাদনে তৃতীয় স্থানে উন্নীত হয়েছে।’
সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি দেশকে পরনির্ভরশীল ও নতজানু দেখতে চায়, চায় তাবেদার হয়ে থাকতে। আওয়ামী লীগ দেশকে একটি মর্যাদাশীল ও সমৃদ্ধ অবস্থানে উন্নীত করতে চায়। বিএনপির নেতারা দুর্নীতির কথা বলেন, অথচ তাঁদের শাসনামলে বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বেশি দুর্নীতির সময়কাল ছিল। বিএনপির সময়কাল ছিল দুর্নীতির স্বর্গরাজ্য এবং যে কারণে পর পর পাঁচবার দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বাংলাদেশ।’
সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘আজ বিএনপির নেতারা মুখরোচক কতো কথাই বলেন। অথচ তাঁদের সময়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, তারেক রহমানের পাচারকৃত টাকা আটক করেছিল যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিস।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘অথচ আজ বিএনপির নেতারা দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলেন। দুর্নীতির বিরুদ্ধে শেখ হাসিনার সরকার তার কঠোর অবস্থান এর মধ্যেই স্পষ্ট করেছে। বিএনপির শাসনামলে দুর্নীতির অভিযোগে দলীয় কোনো নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নজির ফখরুল সাহেবরা দেখাতে পারবেন কি?’