ব্রেক্সিট নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে যুক্তরাজ্যের কড়া হুঁশিয়ারি


ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্যের বের হয়ে যাওয়ার পরবর্তী অবস্থা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই দু’পক্ষে আলোচনা চলছে। ব্রেক্সিটের পর ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে অবাধ বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে দীর্ঘ বৈঠকেও সমাধান আসেনি। এমনকি কোনও মতৈক্যও হয়নি। ফলে ধৈর্যের বাঁধ ভেঙেছে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের।

তাই এবার জনসন ব্রেক্সিট পরবর্তী বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে চরমসীমা বেঁধে দিয়েছেন। রবিবার তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, আগামী ১৫ অক্টোবরের মধ্যে ইইউ-র সঙ্গে বাণিজ্যিক চুক্তি না হলে যুক্তরাজ্য আলোচনাই বন্ধ করে দেবে।

জনসন বলছেন, ১৫ অক্টোবরের মধ্যে ইউরোপীয় কাউন্সিলের সঙ্গে চুক্তি হতেই হবে। এরপর আর আলোচনা চালানোর কোনও অর্থ হয় না। চলতি বছরের শেষ থেকে এই চুক্তি কার্যকর হবে।

এ ব্যাপারে জনসনের যুক্তি, ওই সময়সীমার পর আর আলোচনা করে লাভ নেই। আমরা যদি এতদিন ধরে আলোচনা করে কিছু করতে না পারি, তা হলে আর তা টেনে নিয়ে যাওয়ার অর্থ নেই। তারপর আমি মনে করবো, আমাদের মধ্যে অবাধ বাণিজ্য চুক্তি হওয়া সম্ভব নয়।

মঙ্গলবার থেকে ব্রেক্সিটের পর কী হবে তা নিয়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা শুরু হবে লন্ডনে। তার আগে এই হুমকি দিয়ে জনসন বাড়তি চাপ তৈরি করলেন। এর আগে ব্রাসেলসও জানিয়েছিল, অক্টোবরের মাঝামাঝির মধ্যে এই চুক্তির কাজ শেষ করে ফেলতে হবে। কেননা, তা ইউরোপীয় পার্লামেন্টে পাস করাতে হবে।

এই বছর ৩১ জানুয়ারি যুক্তরাজ্য ইইউ থেকে বেরিয়ে যায়। বহু বছর তারা ইইউ-তে ছিল। গণভোটে খুব অল্প সংখ্যাগরিষ্ঠতায় ব্রেক্সিটের পক্ষে মত দেন যুক্তরাজ্যবাসী। এরপর থেকে অবাধ বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা চলছে। দুই পক্ষই একে অন্যের বিরুদ্ধে অনড় মনোভাবের অভিযোগ এনেছে।

যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা আটকে গেছে তা হলো, যুক্তরাজ্যের সীমান্তে মাছ ধরার অধিকার এবং শিল্পগুলোকে সরকারি অনুদান দেওয়া নিয়ে। যুক্তরাজ্য দুইটি ক্ষেত্রেই পূর্ণ অধিকার দাবি করেছে।

যুক্তরাজ্যের পক্ষে প্রধান আলোচনাকারী ডেভিড ফ্রস্ট এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, তাদের আশঙ্কা, নো ডিল ব্রেক্সিট হতে চলেছে। অন্যদিকে জনসন বলছেন, ইইউ-র সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার ধাঁচে চুক্তি হলেও তাকে স্বাগত জানাবে লন্ডন। অস্ট্রেলিয়া বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার নিয়ম ও মাসুল মেনে ইইউ-র সঙ্গে বাণিজ্য করে।

জনসন বলেছেন, সরকার সব বন্দর ও সীমান্তকে এই ধরনের চুক্তির ব্যাপারে প্রস্তুত রাখছে। আইন, নিয়ম ও মাছ ধরার ব্যাপারে আমাদের পূর্ণ নিয়ন্ত্র্রণ আছে। আমরা ইইউ-র বন্ধুদের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা করতে রাজি। আমাদের দরজা বন্ধ হবে না। আমরা বন্ধু ও অংশীদারদের সঙ্গে বাণিজ্য করবো। কিন্তু আমাদের মৌলিক বিষয়গুলির সঙ্গে কোনও সমঝোতা নয়।

বরিস জনসন বলেন, ইইউ যদি তাদের বর্তমান অবস্থান বদলায়, তা হলে এখনও চুক্তি সম্ভব। অর্থাৎ, যুক্তরাজ্যে তার অবস্থানে কোনও পরিবর্তন আনবে না। বরং ইইউ-কেই তার মনোভাব বদলাতে হবে বলে মনে করছেন জনসন।