মার্কিন চাপের কথা প্রত্যাখ্যান ঢাকার


পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেছেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে কোনো চাপ নেই। আগামী মাসগুলোতে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে উচ্চ পর্যায়ের সফর হবে। এর মধ্য দিয়ে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও শক্তিশালী হবে।’

গতকাল মঙ্গলবার বিভিন্ন ইস্যুতে সরকারকে যুক্তরাষ্ট্র চাপে রেখেছে কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন,‘মোটেই না, একেবারেই না।’

এরপর মার্কিন চাপের বিষয়ে পররাষ্ট্র বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির মিডিয়া রিপোর্টের বিষয়ে তাঁর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে, তিনি এ ব্যাপারও অস্বীকার করে বলেন, ‘কমিটির কোনো সদস্য এ ধরনের কোনো মন্তব্য করেননি (বাংলাদেশের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চাপ দিচ্ছে)।’

প্রতিমন্ত্রী বলেন, “সংসদীয় স্থায়ী কমিটির যেকোনো কথোপকথন অত্যন্ত গোপনীয়। এই কথোপকথন কমিটির বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। আগামী মাসে ‘পার্টনারশিপ ডায়ালগ’সহ বেশ কয়েকটি প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা শুরু হবে।”

মো. শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনকে যুক্তরাষ্ট্র সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন।’

১৯৭২ সালের ৪ এপ্রিল মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী উইলিয়াম রজার্সের পক্ষ থেকে দেওয়া এক সংবাদ বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়।

ব্লিনকেনকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেনের আমন্ত্রণ সম্পর্কে জানতে চাইলে ওয়াশিংটনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম শহীদুল ইসলাম বার্তা সংস্থা ইউএনবিকে বলেন, ‘বাংলাদেশ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উভয়ই দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিতে একসঙ্গে কাজ করছে। আমি মনে করি এ সম্পৃক্ততাগুলোর মাধ্যমে বোঝা যাচ্ছে যে যুক্তরাষ্ট্রও বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরও জোরদার করতে আগ্রহী।’

সূত্র জানায়, ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাস এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য বাংলাদেশ মিশনগুলো দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ও সহযোগিতাকে আরও জোরদার করার পাশাপাশি বর্তমান ও সাবেক র‍্যাব কর্মকর্তাদের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের জন্য তাদের কার্যক্রম আরও জোরদার করেছে।

এর আগে, গত শুক্রবার ওয়াশিংটন ডিসিতে বাংলাদেশ মিশন পরিদর্শন করার সময় বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস বলেন, তিনি দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ককে ‘এগিয়ে ও চালিয়ে যেতে’ ঢাকার সঙ্গে কাজ করার জন্য উন্মুখ।

পিটার ডি হাস আগামী মার্চের শুরুতে ঢাকায় আসবেন বলে আশা করা হচ্ছে। পিটার আরও বলেছেন, তারা বছরব্যাপী কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০তম বার্ষিকী উদযাপন করতে চান এবং সম্ভাবনাগুলো খুঁজে বের করার চেষ্টা করতে চান এবং গত ৫০ বছরে বাংলাদেশের যে অসাধারণ অগ্রগতি হয়েছে তার স্বীকৃতি দিতে চান।

কর্মকর্তারা বলছেন, বাংলাদেশ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মার্চ মাসে ‘অংশীদারত্বের সংলাপ’র পরবর্তী রাউন্ড আয়োজনের পরিকল্পনা করছে। কারণ দুই পক্ষই পারস্পরিক স্বার্থের মূল বিষয়গুলোতে ‘গভীর সম্পৃক্ততা’ রক্ষা  করতে চায়৷

উন্নয়ন, মানবিক সহায়তা, দুর্যোগে ত্রাণ, শাসন, বিশেষ করে মানবাধিকার, নিরাপত্তা, সন্ত্রাস দমনে সহযোগিতা সম্পর্কিত বিষয় এবং অংশীদারত্ব সংলাপে করোনা মহামারি ইস্যুতে সহযোগিতা পর্যালোচনা ও আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

মার্কিন আন্ডার সেক্রেটারি ফর পলিটিক্যাল অ্যাফেয়ার্স অ্যাম্বাসেডর ভিক্টোরিয়া নুল্যান্ড পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে অংশীদারত্ব সংলাপের সহ-সভাপতিত্ব করতে ঢাকায় আসবেন।