মিয়ানমারের বাণিজ্যিক মিত্রদের পণ্য বর্জনের আহবান জানিয়েছেন দেশটির গবেষকরা


বাণিজ্যিক মিত্রদের সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের লেনদেনের কারণে বাড়ছে মিয়ানমারবাসীর দুর্ভোগ। এজন্য বাণিজ্যিক পণ্য বর্জনের আহবান জানিয়েছেন মিয়ানমারের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের গবেষকরা। যেসব পণ্যের লেননে এবং মুনাফা দেশটির অভ্যন্তরীণ সামরিক ক্ষমতায়নকে সাহায্য করে সে পণ্যগুলোকে বর্জন করতে বলেছেন তারা। সংবাদ সূত্র: A24 News Agency
গবেষকদের মতে, এসব পণ্য বিক্রয়ের প্রাপ্ত মুনাফা সামরিক শাসনে ব্যবহৃত হচ্ছে, যা জনসাধারনের ক্ষতি করছে। নিরাপত্তার কারণে নাম প্রকাশ করতে অস্বীকার করা আন্তর্জাতিক সম্পর্কের গবেষক, এনগা লিন (ডাকনাম) বলেছেন যে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী ’তাতমাদাও’ এর সামরিক নেতারা, বিদেশী বিনিয়োগ থেকে লাভবান হয়েছে। তারা তাদের প্রভাবকে ত্বরান্বিত করার জন্য, বিদেশী বিনিয়োগগুলিকে পরোক্ষভাবে কাজে লাগিয়ে তা থেকে লাভবান হচ্ছে। তাঁর মতে, ”রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা খলের পর থেকে রাশিয়া ’তাতমাাও’ এর অস্ত্রের সমর্থন যোগাচ্ছে কিন্তু চীনেরটা অত স্পষ্ট নয়।
কিন্তু চীন বাণিজ্যিক স্বার্থরক্ষার জন্য ’তাতমাদাও’ কে সমর্থন দিচ্ছে; উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, এখানে প্রচুর চীনা কারখানা রয়েছে এবং এসব সুবিধার জন্য তাদের ’তাতমাদাও’ এর সাথে সুসম্পর্ক রাখতে হয়। তাই ’তাতমাদাও’ তাদের কাছে যা দাবি করে তারা তা সমর্থন করে।” তিনি মনে করেন, যে দেশগুলির সাথে ’তাতমাদাও’ বাণিজ্য করছে, বিশেষ করে চীন, যতক্ষণ পরোক্ষভাবে ’তাতমাদাও’ দেশটির স্বার্থ রক্ষা করবে ততক্ষণ পর্যন্ত তারা ’তাতমাদাও’ কে সমর্থন করতে থাকবে।
এটি লক্ষণীয় যে, বেইজিং মিয়ানমারের সাে সংশ্লিষ্ট কয়েকটি দেশের মধ্যে একটি ছিল যারা ’তাতমাদাও’ এর সরকার চালানো পদ্ধতির নিন্দা করেনি এবং মিয়ানমারের সব পক্ষকে তাদের বিরোধ সমাধানের জন্য অনুরোধ করেছিল। এনগা লিন আরো বলেন, ”চীন প্রকৃতপক্ষে ’তাতমাদাও’ কে সমর্থন করছে না, তারা শুধু তাদের সুবিধাগুলো সমর্থন করছে। আরেকভাবে বললে, এটি আসলে পরোক্ষভাবে সমর্থন করার মত।
চীন তখনও সমর্থন করবে যদি ’তাতমাদাও’ তাদের সুবিধাগুলি রক্ষা করে এবং চীন ’তাতমাদাও’ এর সাথে মিলিত হবে। সুবিধার উদ্দেশ্যে, চীন এনএলডি সরকারের (নির্বাচিত সরকার) সাথে যেতে পারে। সুতরাং, চীনের সুবিধা থাকলে, তারা তা বজায় রাখার জন্য একাধিকভাবে চেষ্টা করবে। আমি এটা বলতে পারি যে, চীন সবসময়ই তাদের সুবিধা নীতি বজায় রাখে যখন তাদের অন্যান্য দেশের সাথেও সম্পর্ক স্থাপন করতে হয়।” উল্লেখ্য যে, চীনের সীমান্তে অবস্থিত হওয়ায় মিয়ানমারে বেইজিংয়ের প্রভাব খুব বেশি কারণ দুটি দেশের মধ্যে কার্যকর এবং প্রাচীন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক রয়েছে। ১৯৪৯ সালে গণ চীনের প্রতিষ্ঠার পর মিয়ানমার ছিল প্রথম অ-কমিউনিস্ট শে যারা কমিউনিস্ট পার্টির গণপ্রজাতন্ত্রী চীনকে নেতৃত্বের স্বীকৃতি দেয়।
২০১৮ সাল থেকে, মিয়ানমারে চীনা প্রকল্পের সংখ্যা আশ্চর্যজনকভাবে বৃদ্ধির খবর পাওয়া গেছে, যার ফলে চীনের “ঋণের ফাঁদে” পড়তে যাচ্ছে মিয়ানমার, ঠিক যেভাবে শ্রীলঙ্কা পড়েছে।