রাজশাহী’তে ‘বঙ্গবন্ধুর ভাবনায় সমবায়ভিত্তিক কৃষি: সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক সেমিনার


স্টাফ রিপোর্টার:  শনিবার (০১ জুন) সকাল ১০ টায় রাজশাহী বিভাগীয় সমবায় কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে রাজশাহী বিভাগীয় সমবায় কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণে ‘বঙ্গবন্ধুর ভাবনায় সমবায়ভিত্তিক কৃষি: সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী মো: আব্দুল ওয়াদুদ, এমপি। ‘সমবায় ভিত্তিক চাষ, ফসল হবে দ্বিগুণ, ব্যয় হবে হ্রাস’- এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বলেন, বঙ্গবন্ধুর প্রথম পাঁচশালা পরিকল্পনা ব্যতিত বাংলাদেশের মানুষের আর্থসামাজিক, রাজনৈতিক এবং প্রাতিষ্ঠানিক মুক্তি আসতে পারে না। বঙ্গবন্ধু এ দেশের মাটি ও মানুষ, আবহাওয়া ও জলবায়ুর প্রেক্ষাপটকে বিবেচনা করে প্রথম পাঁচশালা পরিকল্পনা করেন।

যার সাথে ছিল বঙ্গবন্ধুর দিকনির্দেশনা এবং বাংলাদেশসহ উপমহাদেশের প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ, বুদ্ধিজীবী, শিক্ষক, ডাক্তার ও ইঞ্জিনিয়ারসহ সমাজের সকল পর্যায়ের মানুষকে নিয়ে তিনি প্রথম পাঁচশালা পরিকল্পনা করেছিলেন।

কৃষির আধুনিকায়নের মাধ্যমে উৎপাদন বাড়ানোই ছিল প্রথম পাঁচশালা পরিকল্পনার মূখ্য উদ্দেশ্য, যা সমবায়ীদের মাধ্যমে বাস্তবায়ন সম্ভব।
সমবায় কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে প্রতিমন্ত্রী বলেন, সীমাবদ্ধ সম্পদ ও অর্থনৈতিক কাঠামোর মধ্যে থেকে দেশকে ভালো কিছু দেয়ার চেষ্টা করতে হবে। আপনারাই সমবায়ীদের অভিভাবক।

আপনারাই তাদের পরামর্শ দেবেন। সরকার আমাদের পাশে আছে। আমরা যদি দেশকে কিছু দিতে পারি, সরকারের অর্পিত দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে পারি তাহলে সরকারও আমাদের পাশে থাকবে। সরকার সমবায়ভিত্তিক কৃষি উন্নয়ন দেখতে চায়।

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক আমার উপর অর্পিত দায়িত্ব সঠিকভাবে বাস্তবায়নের মূল চালিকাশক্তি আপনারা। আপনারা আমার মাঠকর্মী। সমবায়ের যেসকল জায়গা বেদখল হয়ে গেছে সেগুলোর নিয়ন্ত্রন নিতে হবে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করে সমবায়কে যুগোপযোগী করতে হবে। রেজিষ্ট্রেশন কার্যক্রমকে সহজ করতে হবে। আগামী এক বছরের মধ্যে উত্তবঙ্গকে কৃষি-হাব বানাতে চাই, আপনাদের হাত ধরে।

তিনি আরও বলেন, কাজ করতে চাইলে ইচ্ছা শক্তিই যথেষ্ট। কাজ বাস্তবায়নে প্রয়োজন হলে আমাদের মন্ত্রণালয়ের অন্যান্য দপ্তর ও সংস্থার সহযোগিতা আমরা নিতে পারবো। পাঁচটি বছর সঠিকভাবে কাজ করলেই এক’শ বছরের সুবিধা পাবো। আমাদের দেশের সীমিত সম্পদের সঠিক ব্যবহারের মধ্যদিয়ে অসম্ভবকে সম্ভব করতে হবে।

এটিই বড় চ্যালেঞ্জ, আর কোন চ্যালেঞ্জ নেই। আমরা যে যে পথ বা মতের হইনা কেন, আমরা সকলে মিলে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখবো। তাহলে বঙ্গবন্ধুর ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত সোনার বাংলাদেশ ও প্রধানমন্ত্রীর স্মার্ট বাংলাদেশ অর্জন করতে আমরা সক্ষম হবো।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সমবায় অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব মো: শরিফুল ইসলাম, রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর এবং রাজশাহী রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম।

স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন বিভাগীয় সমবায় কার্যালয়, রাজশাহী’র উপনিবন্ধক মোছা: শাহানাজ শিল্পী। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন ও সভাপতিত্ব করেন বিভাগীয় সমবায় কার্যালয়ের যুগ্ম নিবন্ধক মোঃ মোখলেছুর রহমান।

উন্মুক্ত আলোচনায় জেলা ও উপজেলা সমবায় কর্মকর্তাগণ সমবায় কার্যক্রমকে গতিশীল করতে তাদের ইনোভেশন আইডিয়া শেয়ার করেন এবং প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া যায় তার প্রস্তাবনা তুলে ধরেন।

সেমিনার শেষে উন্নত জাতের গাভী পালনে মহিলাদের জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ঋণ সুবিধার চেক প্রদান করেন।