রাবি প্রতিনিধি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) দুই দিনব্যাপী ২৩তম আন্তর্জাতিক গণিত সম্মেলন শুরু হয়েছে। বাংলাদেশ গণিত সমিতি ও রাবি গণিত বিভাগ ‘দ্যা ল্যাঙ্গুয়েজ অব সায়েন্স’ শীর্ষক প্রতিপাদ্য নিয়ে এই সম্মেলন আয়োজন করেছে।
বৃহস্পতিবার সকাল ৯:৩০ মিনিটে রাবির শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবনে সম্মেলন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয়, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী মো. আব্দুল ওয়াদুদ, এমপি। রাবি গণিত বিভাগের অধ্যাপক মো. জুলফিকার আলীর সভাপতিত্বে এই অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ গণিত সমিতির সভাপতি অধ্যাপক মো. শহিদুল ইসলাম ও রাবি বিজ্ঞান অনুষদের অধিকর্তা অধ্যাপক নাসিমা আখতার।
অনুষ্ঠানে পৃষ্ঠপোষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মো. সুলতান-উল-ইসলাম ও উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মো. হুমায়ুন কবীর। গণিত বিভাগের সভাপতি ও সম্মেলনের সচিব অধ্যাপক মো. আসাবুল হক অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বলেন, বিজ্ঞান ও বিজ্ঞানের প্রক্রিয়া মানুষকে আজ এই জায়গাতে নিয়ে এসেছে। আমরা নানা ঔপনিবেশিক ও রাজনৈতিক কারণে পিছিয়ে পড়েছি। কিন্তু আমাদের পূর্বপুরুষরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাদের অবদান রেখেছে। আমাদেরকে পথ দেখিয়েছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তাঁর নাম ধরে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর সেই চেতনায় কাজ করে যাচ্ছেন।
ড. শামসুজ্জোহা রক্ত দিয়ে আমাদের দেখিয়ে গেছেন শিক্ষক ও ছাত্ররা মিলে কি করতে পারে। আমাদের শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীরা তাদের বিজ্ঞানকে প্রচার করছে এবং করবে। জীবন যখন শুরু হয় তখন থেকে অংক শুরু হয় এবং শেষ দিন পর্যন্ত তা স্থায়ী হয়। বাঙালি সাহসী, মেধাবী ও শক্তিশালী জাতি। আমরা নিজ মেধা ও মননশীলতায় সব বাধা উপেক্ষা করে এগিয়ে যাচ্ছি। আগামীতে এই ধারা অব্যাহত থাকবে।
সম্মেলন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) তাঁর বক্তৃতায় বলেন, বিজ্ঞানের অন্যতম স্তম্ভ হচ্ছে গণিত। এই বিষয়কে কেন্দ্র করে বিজ্ঞানের অন্যান্য বিষয়ও প্রভাবিত হয়। জ্ঞান-বিজ্ঞানের উন্নয়নের এই যুগে গণিত অপরিহার্য। সম্মেলনে উপস্থাপিত প্রবন্ধসমূহ থেকে গণিত ও প্রাসঙ্গিক বিষয়ে গবেষণার ধারা ও আগামীর করণীয় সম্পর্কে পথরেখা পাওয়া যাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানে উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) তাঁর বক্তৃতায় বলেন, বর্তমান বিশ্বে জ্ঞান-বিজ্ঞানে উদ্ভাবন ও উন্নয়নের অন্যতম চালিকাশক্তি হচ্ছে গণিত। গণিতই হচ্ছে মূল ধারার বিজ্ঞানের ‘দর্শন’। আমরা পদার্থবিজ্ঞান বা রসায়ন অথবা কম্পিউটার সায়েন্স যে বিষয়ের কথাই বলি না কেন তার ব্যাকরণ হচ্ছে গণিত। কাজেই মৌলিক বিজ্ঞানে দক্ষতা অর্জন করতে হলে আমাদের অবশ্যই গণিত জানতে হবে। এই সম্মেলন সেই লক্ষ্য পূরণে সহায়ক হিসেবে কাজ করবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (আইআইটি)- বোম্বে’র অধ্যাপক দীপঙ্কর চৌধুরী। তিনি ‘অ্যাপ্লাইড ম্যাথেমেটিক্স ইন সাসটেইনেবল আর্থকোয়েক রেজিস্টেন্ট ডিজাইন অব জিও-স্ট্রাকচার্স’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
সম্মেলনে ২০টি টেকনিক্যাল সেশনে প্রায় ১৩০টি গণিত ও সংশ্লিষ্ট বিষয়ের গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপিত হবে। প্রথম দিনে আজ বৃহস্পতিবার ৯টি ও পরদিন ১১টি সেশন অনুষ্ঠিত হবে।
সম্মেলনে বাংলাদেশ ও বিদেশ থেকে প্রায় দুইশত জন গণিত ও সংশ্লিষ্ট বিষয়ের শিক্ষক, গবেষক ও পেশাজীবী অংশ নিচ্ছেন।