রাবি প্রতিনিধি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) যথাযোগ্য মর্যাদা ও নানা কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে জাতীয় জেল হত্যা দিবস পালন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টায় জেল হত্যা দিবস উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবনে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
আলোচনা সভায় রেজিস্ট্রার অধ্যাপক আব্দুস সালাম এর সঞ্চালনায় প্রধান আলোচক হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক দুলাল চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতার হত্যাকান্ডের মাধ্যমে , মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতি যে অসাধারণ গৌরব অর্জন করেছিল, সে অর্জনের জায়গা টাকে ধংস করে দেয়া হয়েছে। শুধু অর্জন না, একটা জাতির মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে তার ভিতরের যে উদ্দীপনা, উদ্দম ও আত্মশক্তির উদ্ভাবন ঘটে। আমরা লক্ষ্য করি যে এসব হত্যাকান্ডের মাধ্যমে শুধু ব্যক্তিমানুষ কে হত্যা করা হচ্ছে না বরং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে হত্যা করা হচ্ছে এবং ক্রমাগত ভাবে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের মানুষজনকে কিভাবে নিস্তব্ধ, নির্বাক করা যায় সেই চেষ্টা চলছে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাসিক সিটি মেয়র এ. ইচএ. এম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, জাতীয় চার নেতার মধ্যে অদ্ভুত ধরনের চারিত্রিক মিল ছিল। একজন কামরুজ্জামান যিনি ব্যক্তি জীবনে অত্যন্ত নির্লোভ ধরনের মানুষ ছিলেন। যাকে আমি বসে খাবার খেতেও দেখেছি।
তিনি আরো বলেন যে, জিয়াউর রহমানের মধ্যে একটা লোলুপ দৃষ্টি ছিল বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হওয়ার। এজন্যই তিনি বাংলার ইতিহাসের সবচেয়ে নিকৃষ্টতম হত্যাকান্ড চালিয়েছিলেন। তিনি এবং তার পরিবারের সদস্যরা এই দায় কখনোই এড়াতে পারে না। তারা প্ল্যান করেছিল বঙ্গবন্ধু পরিবারের কাউকে জীবিত রাখবে না। কিন্তু তাদের চক্রান্ত ব্যর্থ হয়েছে। বাংলাদেশের বর্তমান উন্নয়নই তার প্রমাণ।
রাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, আজকের এই দিনে জাতীয় চার নেতাকে নৃশংস ভাবে হত্য করা হয়েছিল। তাদের মধ্যে কামারুজ্জামান ১৯৭২ আধুনিক রাজশাহীর গোড়া পত্তন করেন। সেই ধারাবাহিকতা এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন আজো অব্যহত রেখেছেন।
উপাচার্য আগামী নির্বাচন প্রসঙ্গে বলেন, বাঙালি জাতীয়তাবাদের বঙ্গবন্ধু রাষ্ট্রে দেশ কেমন হবে তার সিদ্ধান্ত আমাদের আগামী নির্বাচনে নিতে হবে।
এর আগে দিবসটি উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮টায় রাবি’র উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার , উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান -উল -ইসলাম , কোষাধ্যক্ষ মো অবায়দুর রহমান প্রামানিক, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মো আব্দুস সালাম, জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক ড প্রদীপ কুমার পান্ডে, প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক, ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক তারেক নূরসহ অন্যান্য শিক্ষক ও প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ জেল হত্যাকাণ্ডে কাদিরগঞ্জস্থ শহীদ এ এইচ এম কামারুজ্জামানের কবরে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন।
এ সময় তারা শহীদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন ও রুহের মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাত করেন।
উল্লেখ্য, ১৯৭৫ সলের এইদিনে কেন্দ্রীয় কারাগারে জাতীয় চার নেতা সৈয়দ নজারুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমদ, ক্যাপ্টেন মনসুর আলী ও এএইচএম কামারুজ্জানকে হত্যা করা হয়।