রাবি শিক্ষকের সংবাদ সম্মেলন : রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় বিচারকে প্রভাবিত করছেন ডা. রাজু


রাবি প্রতিনিধি : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) চিকিৎসা কেন্দ্রের উপ-প্রধান চিকিৎসক ও রাজশাহী মহানগর যুবলীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রাজু আহমেদের বিরুদ্ধে নিজ সন্তানকে যৌন হয়রানি করার অভিযোগ করে সংবাদ সম্মেলন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত রসায়ন ও রসায়ন প্রকৌশল বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোছা: সাবিনা ইয়াসমিন। তার দাবি ‘রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় ডা. রাজু ন্যায় বিচারকে প্রভাবিত করছেন।

বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) বেলা ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ায় ‘ তার (ডা. সাবিনা ইয়াসমিন) বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং যৌন নিপীড়ক ডা. রাজুর দ্রুত বিচারের দাবিতে’ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তিনি। অধ্যাপক ড. সাবিনা ইয়াসমিনের সাথে একাত্মতা পোষণ করে একই দাবি জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, রাবি মহিলা পরিষদ, রাবি মহিলা ক্লাব এবং মহিলা আইনজীবী সমিতিসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকবৃন্দ। সংবাদ সম্মেলনে এই সহযোগী অধ্যাপক বলেন, আমি ৪ডিসেম্বর আদালতে গিয়ে জানতে পারি ডাঃ রাজু আমার নামে পাল্টা মামলা করেছে।

ঘটনার ১৪ দিন পর ১৩ নভেম্বর আসামী ডা. রাজু আমিসহ আরো দুইজনের নামে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে বিভিন্ন ধারায় (১৪৯/৪৪৮/৩২৩/৩২৪/৩০৭/৪২৭/১৪/৩৪) রাজশাহী কোর্টে মামলা করেছে। যা সম্পূর্ন মিথ্যা, বনোয়াট এবং প্রকৃত ঘটনাকে অন্যদিকে প্রবাহিত করার চেষ্টা। রাজুর করা যৌন হয়রানির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং আমার নামে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহারের জন্যে আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী, বিশ্ববিদ্যালয় প্রসাশন, ইউজিসি এবং প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষন করেন তিনি। তিনি আরো বলেন, ডা. রাজু যুবলীগের দায়িত্বে থাকায় পুলিশ থাকে গ্রেফতার করেনি। তার দলীয় অনেক ডাক্তার ও আইনজীবী তার পক্ষে কাজ করছে। মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের ডক্টররা পুলিশ কমিশনার কাছে চাপ দেয় তাকে গ্রেফতার না করার জন্যে।

এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক বর্তমান অনেক লোক তার পক্ষে কাজ করছে। এ সময় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক সফিকুন্নবী সামাদী বলেন, পুলিশের কাছে সুযোগ ছিল ও আইনগত ভিত্তি ছিল তাকে গ্রেফতার করার কিন্তু পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেনি বরং তাকে সুযোগ দিয়েছে হাইকোর্ট থেকে জামিন নেওয়ার। তিনি আরো বলেন, চার সপ্তাহ গেলে তাকে সংশ্লিষ্ট কোর্টে আত্মসমার্পন করতে হবে। তারপর সিদ্ধান্ত দেওয়ার কথা সেই কোর্টের। কিন্তু সেখানে না গিয়ে সিএনএম কোর্টে গিয়ে আত্মসমর্পণ করেছিল। সেখানে উপস্থিত প্রভাবশালী আইনজীবীরা ছিলেন, আবার তাদের রাজনৈতিক পরিচয়ও ছিল।

তারা প্রভাব খাটিয়ে এটা করেছে। যদিও আদালতের বিচারের ব্যাপারে আমাদের কোন এখতিয়ার নেই। তবে আমরা যে নিগৃহীত হচ্ছি এবং এটা বলার অধিকার আছে যে,আমরা সুবিচার পাচ্ছি না। উল্লেখ্য, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত রসায়ন ও রসায়ন প্রকৌশল সহযোগী অধ্যাপক ড. মোছা: সাবিনা ইয়াসমিনের মেয়ে (১৩) কে যৌন হয়রানি করার অভিযোগে নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানায় ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে’ একটি মামলা করেছিলেন। ঘটনার ১৪ দিন পর ১৩ ই নভেম্বর ডা. রাজু ওই সহযোগী অধ্যাপকের বিরুদ্ধে পাল্টা মামলা করে৷ এ মামলাকে মিথ্যা ও বানোয়াট দাবি করেন এই সহযোগী অধ্যাপক।