রাসিকের উদ্যোগে বিভিন্ন কর্মসূচি জেল হত্যা দিবস পালিত


 অজয় ঘোষ, রাজশাহী: রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে যথাযথ মর্যাদায় জেল হত্যা দিবস পালিত হয়েছে। জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহীদ এ.এইচ.এম কামারুজ্জামানের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ, মৌনর‌্যালি, রক্তদান কর্মসূচি , আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

মঙ্গলবার সকালে রাসিকের কাউন্সিলর, কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ নগর ভবন হতে মৌন র‌্যালি বের করা হয়। র‌্যালিটি নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে কাদিরগঞ্জে শহীদ এ.এইচ.এম কামারুজ্জামান এঁর কবরস্থানে গিয়ে শেষ হয়। এরপর শহীদ কামারুজ্জামানের কবরে ফুলেল শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপন করা হয়।

দিবসটি উপলক্ষে নগর ভবনের ওয়ান স্টপ বুথ চত্বরে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের স্বাস্থ্য বিভাগের উদ্যোগে রক্তদান কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। এরপর নগর ভবনের সিটি হলরুমে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন কর াহয়। রাসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. এবিএম শরীফ উদ্দিন এর সভাপতিত্বে আয়োজিত সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাসিকের প্যানেল মেয়র-১ ও ১২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ সরিফুল ইসলাম বাবু।

সভায় প্রধান আলোচক প্রফেসর ড. শাহ আজম শান্তনু বলেন, বঙ্গবন্ধু হচ্ছেন সূর্য্য সন্তান আর চারদিগন্তের জোতিষ্ক পুরুষ জাতীয় চার নেতা। ৩রা নভেম্বরের কথা আসলে অবধারিতভাবে ১৫ আগস্টের কথা এসে যাই। পচাঁত্তরের পনেরই আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর দ্বিতীয় কলঙ্কজনক অধ্যায় এই দিনটি। পনেরই আগস্টের নির্মম হত্যাকা-ের পর তিন মাসেরও কম সময়ের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম বীর সেনানী ও চার জাতীয় নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমেদ, ক্যাপ্টেন মনসুর আলী ও এ.এইচ.এম কামারুজ্জামানকে এই দিনে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের অভ্যন্তরে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। এর আগে এই চার জাতীয় নেতাকে কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। এ নির্মম ও বর্বরোচিত ঘটনার পরদিন তৎকালীন উপ-কারা মহাপরিদর্শক (ডিআইজি প্রিজন) কাজী আবদুল আউয়াল লালবাগ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

জাতি আজ মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম বীর সেনানী ও চার জাতীয় নেতাকে যথাযথ শ্রদ্ধা প্রদর্শনের মাধ্যমে দেশের ইতিহাসের অন্যতম বর্বরোচিত এই কালো অধ্যায়টিকে স্মরণ করেছে। রাষ্ট্রীয়ভাবে এবং আওয়ামী লীগ সহ বিভিন্ন দল সংগঠনের উদ্যোগে সারাদেশে পালিত হচ্ছে শোকাবহ এই দিবস। ইতিহাসের নৃশংসতম হত্যাকা- জেলহত্যার ৪৫ বছর পার হয়ে গেলেও এখনো এই হত্যা মামলার রায় কার্যকর হয়নি। এই হত্যাকা-ের রায় অতিদ্রুত কার্যকর করার দাবী আজও প্রতিধ্বনিত হচ্ছে। এই হত্যার বিচার করার মধ্যে দিয়ে জাতি কলঙ্কমুক্ত হবে। আগামী প্রজন্মকে এ দেশের প্রকৃত ইতিহাস জানতে হবে। বীর বাঙালিরা রক্তদিয়ে যুদ্ধ করে এদেশ স্বাধীন করে ছিলো। আমরা চাই স্বাধীনতার বাংলাদেশ, আমরা চাই বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ।

তিনি বলেন, ধানমন্ডির ৩২ নম্বর ছিলো বাংলাদেশের কেন্দ্র বিন্দু তেমনি রাজশাহীর কাদিরগঞ্জ ছিলো কেন্দ্র বিন্দু। শহীদ এ.এইচ.এম কামারুজ্জামান এর অনন্য গৌরব গাথা জীবন এবং তাঁর পরিবারের দুইশ বছরের চার পুরুষের ঐতিহ্য রাজশাহীবাসীকে গৌরবান্বিত করেছে। সেই পরিবারের সন্তান রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন রাজশাহী উন্নয়নে নিবেদিত প্রাণ হয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। এজন্য এদিবসে জাতীয় চার নেতার প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অন্যতম সহযোগী জাতীয় চারনেতার অন্যতম শহীদ এ.এইচ.এম কামারুজ্জামান এর সুযোগ্য পুত্র রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন তাঁর পিতার অসমাপ্ত কাজগুলোকে এগিয়ে যেতে নিরলস প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।

 

আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন ৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর কামরুজ্জামান, রাসিক কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মোঃ আজমীর আহম্মেদ মামুন। মে উপবিষ্ট ছিলেন রাসিকের ২৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ আনোয়ারুল আমিন আজব, সচিব আবু হায়াত মোঃ রহমতুল্লাহ। আলোচনা সভা শেষে জাতীয় চার নেতার আত্নার মাগফিরাত কামনায় দোয়া করা হয়। দোয়া পরিচালনা করেন রাজশাহী মহানগর ওলামা কল্যাণ পরিষদের সভাপতি মাওলানা মোঃ আইয়ুব আলী। দুপুরে এ উপলক্ষে নগরভবন জামে মসজিদ ও সোনাদিঘি জামে মসজিদে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।

আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে রাসিকের কাউন্সিলর ও কর্মকর্তা-কর্মচারী, কর্মচারী ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।