লকডাউনে চরম বিপাকে গরু ব্যবসায়ী ও হাট ইজরাদারা


নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনাভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবেলায় বৃহত্তর রাজশাহীর পশু হাটগুলো সাময়িক বন্ধ ঘোষণা করেছে প্রশাসন। এতে করে চরম বিপাকে পড়েছেন হাট ইজরাদার ও গরু ব্যবসায়ীরা। কোটি কোটি টাকা দিয়ে এইসব পশুহাট নেওয়া ইজরাদাররা পথে বসার আশঙ্ক করছেন।

জানা গেছে, দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সমাগম ঘটে বৃহত্তর রাজশাহীর পশুর হাটগুলোতে। সমাগমের মাধ্যমে হাটগুলোর মাধ্যমে করোনাভাইরাস ছড়াতে পারে এমন আশঙ্কায় স্থানীয় প্রশাসন বন্ধ করে দেয়। এতে চরম লোকসানের মুখে পড়ে ইজারাদাররা।

তবে হাট ইজরাদারা বলছেন, সামাজিক দুরুত্ব বা সরকার যেভাবে চাই সেইভাবে তারা হাট পরিচালনা করতে প্রস্তুত রয়েছে। এতে করে গরুর হাট বা ব্যবাসার সাথে যারা সংশ্লিষ্ট রয়েছেন তারা বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পাবেন।

রাজশাহী অঞ্চলের বড় পশু হাটগুলোর মধ্যে রয়েছে রাজশাহী সিটি হাট, কাকনহাট, রাজাবাড়ি, মন্ডুমালাহাট, কেশরহাট, তাহেরপুর হাট, রুস্তমপুর হাট, চন্ডিপুর, বানেশ্বর, চাঁপাইনবাবগঞ্জের সুনাইকান্দি, মান্দার সুতিহাট, চৌবাড়িয়া।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে হাট ইজরাদাররা জানান, প্রত্যক এক বছররের জন্য তারা হাট স্থানীয় প্রশাসনের কাছ থেকে ইজারা নিয়ে থাকেন। এর মধ্যে প্রায় এক মাস কেটে গেছে হাট বন্ধ রয়েছে। কবে নাগাদ হাট খোলা হবে এ বিষয়ে সুস্পষ্ট কোন ধারনা বা প্রশাসন ইজারার মেয়াদ বাড়াবেন কি না এ বিষয়গুলো নিয়ে ধোঁয়াসার মধ্যে রয়েছেন তারা। এছাড়াও গরুর হাট মাসব্যাপি বন্ধ থাকার ফলে অর্থনীতিতে চরম প্রভাব পড়ছে। ফলে সরকার যেমন তার রাজস্ব হারাচ্ছেন পাশাপাশি হাট ব্যবসায়ীরা চরমভাবে আর্থিক সংকটে পড়েছেন।

অন্যদিকে, খাদ্য সংকটে চরম বিপাকে পড়েছে রাজশাহী অঞ্চলের অধিকাংশ গরুর খামারি ও ব্যবসায়ীরা। এছাড়াও পশু হাট না বসার বন্ধ রয়েছে মাংস বিক্রি। অনেক গরু ব্যবসায়ী গরু কেনার পর হঠাৎ হাটবাজার বন্ধ হওয়ায় বিপাকে পড়েছে তারা। খামারিদের পাশাপাশি গরুর ব্যবসায়ীরা বাড়িতে বন্দী গরুর খাদ্য জোগাতে গিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন।

বাজারে খড়, খুদ-ভুষির পর্যাপ্ত সরবরাহ না থাকায় দুই থেকে তিনগুন দাম বেড়েছে। ১২০ টাকা পনের (৮০ আটি) খড়ের দাম দুই সপ্তার ব্যবধানে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩২০ টাকায়। ঘরবন্দি হয়ে মানুষের পাশাপাশি আটকা পড়া গরু ছাগলের খাবার জোগাতে হিমশিম খাচ্ছে এই অঞ্চলের খামারি ও ব্যবসায়ীরা। কোন উপায়ন্তর না দেখে একদম নিরুপায় হয়ে খামারিরা ঝোপঝাড়, ডোবা নালায় নেমে জংলী-কাশি, বার্তাজ (দল) কেটে গরুকে খাওয়াতে বাধ্য হচ্ছে।