
অনুষদ ঘুরে দেখা যায়, বাঙ্গালিয়ানার ঐতিহ্যবাহী শীতলপাঠি, কাগজ কেটে কারুকার্যের মাধ্যমে নির্মিত সূর্যমুখী ফুলের বাগান, কাগজ দিয়ে অতিথি পাখি তৈরি করে সজ্জিত করেছেন বটগাছ এবং চারুকলা অনুষদ মাঠের এককোণে পুকুর খনন করে পদ্ম পুকুর তৈরী করেছেন শিক্ষার্থীরা। সেখানে বিভিন্ন কৃত্তিম ফুল রাখা রাখা হয়েছে। এ উৎসবের মাধ্যমে শীতকালীন আবহটিকে উপস্থাপন করছেন শিক্ষার্থীরা। শিল্পীদের রংয়ের ছোঁয়ায় পাল্টে গেছে পুরো চারুকলা অনুষদের মূল চেহারা।
বাঙালি ঐতিহ্যকে ধারণ করতে এ উৎসবে বসানো হয়েছে ৭টি স্টল। এতে পাওয়া যাচ্ছে বাহারি রকমের তৈরি সব পিঠা। চারুকলা শিক্ষার্থীদের দ্বারা তৈরি নকশীকাঁথা, হ্যান্ড পেইন্ট শাড়ি, হ্যান্ড পেইন্ট চাদর, কাঠের গহনা, হ্যান্ড ব্লকের পাঞ্জাবি, হ্যান্ড পেইন্টের বিজয় দিবসে উত্তরীয়, মাঠির আসবাব পত্র, ফুলদানি, বেতের ঝুড়ি, পাটের ব্যাগ, কাঠের তৈরি গহনা, হ্যান্ড পেইন্টের স্কার্ফ ও ওড়না, বিভিন্ন রকম চুরি,কানের দুলসহ বিভিন্ন আসবাব পত্র। স্বল্প মূল্যে এসব বিক্রি করছেন বলে জানিয়েছেন স্টল নিয়ে বসা শিক্ষার্থীরা।

নিজস্ব কাজের ব্র্যান্ড আরিন্দা নামে এক স্টল নিয়ে বসেছেন গ্রাফিক ডিজাইন এন্ড ক্রাফ্টস এন্ড হিস্টোরি অফ আর্টস বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী আরুবা তাসনিম অর্থী। তিনি বলেন, বাঙালি সংস্কৃতি ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে সেটা যেন হারিয়ে না যায় সেই জন্য আমাদের নিজস্ব কাজে ও ডেকোরেশনে তা ফুটিয়ে তুলার চেষ্টা করছি। আমাদের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে দেশীয় শিল্পকে সর্বস্তরের মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়া। সিল্ক বাংলাদেশে ঐতিহ্যবাহী পণ্য। সিল্ক ও মসলিনের তৈরি বিভিন্ন শাড়ি, স্কার্ফ, মাফলার নিয়ে আমরা স্টল বসিয়েছি।
বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা অনুষদে শীত আগমনী উৎসব দেখতে আসেন বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী রনি আহমেদ। তিনি বলেন, বাংলা সংস্কৃতির বিষয়ে শুধু কাগজে কলমে পড়ি। আজকে বাংলার সংস্কৃতিকে নিজে চোখে কিছুটা দেখার সৌভাগ্য হয়েছে। গাছে গাছে অতিথি পাখির মেলা, পদ্ম পুকুর ও সূর্যমুখি চত্বর সবগুলোতেই বাঙ্গালীর সংস্কৃতি ধারা। খুবই ভালো এ উৎসবে আসতে পেরে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা এম তারেক নূর বলেন, এ আয়োজনের মাধ্যমে শীতকে বরণ করে নিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বাঙালি হিসেবে বাঙালির সংস্কৃতি ধারণ করা আমাদের কর্তব্য। চারুকলা অনুষদের হারিয়ে যাওয়া সংস্কৃতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে সামনে তুলে ধরার জন্য তাদের ধন্যবাদ জানাই। এমন উৎসব শুধু এবার নয় প্রতিবার চালু থাকা প্রয়োজন বলে মনে করছেন এ অধ্যাপক।