সন্ত্রাসের জণপদ মর্দানায় সন্ত্রাসী হামলায় নিহতের ভাইয়ের অভিযোগ, আটক ৬


ফয়সাল আজম অপু: চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ পৌর এলাকার মর্দানায় প্রতিপক্ষের ককটেল বিস্ফোরণে একজন নিহত হয়েছে। নিহতের বড় ভাই মুকুল আলি বাদী হয়ে শিবগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছে। এ ঘটনায় পুলিশ ৬ জনকে আটক করেছে। সুত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ৯টার দিকে প্রথমে ব্যাপক ককটেল বিস্ফোরনের পর হামলার ঘটনা ঘটে। 

প্রত্যক্ষদর্শী ঐ এলাকার আব্দুল হক জানান, আমি মৃত সাইফুদ্দীন সহ কয়েকজন চা স্টলে বসে ছিলাম। হঠাৎ অতর্কিত ভাবে ২৫/৩০ জনের একটি সন্ত্রাসী দল বোমা ফাটিয়ে দেশীয় অস্ত্র সস্ত্র সহ সন্ত্রাসী হামলা চালায়। হামলায় সাইফুদ্দিন মাটিতে লুটিয়ে পড়ে, ছটপট করতে থাকলে সন্ত্রাসীরা উল্লাস করতে করতে পালিয়ে যায়। পরে পুলিশের উপস্থিতিতে আহত ব্যাক্তিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে অবস্থার অবনতি হয়। 

এতে করে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হলে কর্তব্যরত ডাক্তার মৃত ঘোষণা করে। নিহত ব্যক্তি হচ্ছেন, শিবগঞ্জ পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের মর্দানা আইয়ুব বাজার এলাকার মৃত ফজলুর রহমানের ছেলে সাইফুদ্দিন আহমেদ (৩৫)। এ ঘটনায় শিবগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ করা হয়েছে। পুলিশ ৬জনকে আটকও করেছে। এলাকায় উত্তেজনা ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। এদিকে বুধবার সরজমিনে ঐ এলাকায় পুলিশের টহল লক্ষ্য করা গেছে।পুলিশের দাবী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে। তবে স্থানীয়দের দাবী আবারো যেকোন সময় বেধে যেতে পারে সংঘর্ষ। 

এ দিকে এ ঘটনার জন্য সাবেক কাউন্সিলর আঃ সালাম তার প্রতিপক্ষ বর্তমান কাউন্সিলর খাইরুল ইসলাম জেম কে দায়ী করেন। তিনি জানান, নিহত ব্যক্তি আওয়ামীলীগের ও তার একনিষ্ট কর্মী হওয়ায় জেম তার বাহিনী নিয়ে তার কর্মীর উপর হামলা চালিয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় মারাত্মক জখম করলে চিকিৎসার বিলম্বের কারনে তার মৃত্যু হয়। অন্যদিকে মঙ্গলবার রাতে ৯নং ওয়ার্ড কমিশনার খাইরুল ইসলাম জেম নিজেকে নির্দোষ দাবী করে জানান, আইয়ুর বাজার মোড়ে গরুর ঘাষ খাওয়াকে কেন্দ্র করে মমিন ও কেরামতের গ্রুপের সাথে মারামারি হয়েছে বলে শুনেছি। 

তবে বুধবার দুপুরে মামলা দায়েরের পর একাধিকবার তার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। অন্যদিকে শিবগঞ্জ থানার ওসি শামসুল আলম শাহ জানান, পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের মরদানা গ্রামের আইয়ুব বাজার এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দু’গ্রুপের মধ্যে ককটেল বিষ্ফোরণের ঘটনার সংবাদ পেয়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। ককটেল বিস্ফেরনে আহত সাইফুদ্দিনকে উদ্ধার করে প্রথমে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর হাসপাতালে ও পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত প্রায় সোয়া ১২টার দিকে মারা যায়। 

লাশ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। বুধবার দুপুরে নিহত সাইফুদ্দিনের বড় ভাই মুকুল একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে এবং মামলার প্রস্তুতি চলছে। এতে ৩৪ জন এজাহার নামীয় এবং ৮-১০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করা হয়েছে। কয়েকজনকে আটক করা হয়ছে। এলাকাটি বর্তমানে পলিশের নিয়ন্ত্রনে আছে বলেও জানান তিনি। 

উল্লেখ্য, এর আগে সালাম ও জেম গ্রুপের সংঘর্ষে একাধিক প্রানহানির ঘটনা ঘটায় বর্তমানে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় আবারো আতঙ্ক বিরাজ করছে।