নাটোর প্রতিনিধি: নাটোরের সিংড়া উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী দেলোয়ার হোসেনকে অপহরণ ও মারপিট করায় অজ্ঞাত ১৫/২০ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেছে দেলোয়ার হোসেনের ভাই মজিবর রহমান। মঙ্গলবার নাটোর সদর থানায় এই মামলাটি দায়ের করা হয়। এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকায় দুইজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হল, সিংড়া উপজেলার হরোবাড়িয়া গ্রামের জাহেদুল ইসলামের ছেলে নাজমুল হক বাবু ও কৃষ্ণপুর গ্রামের আব্দুস সামাদের ছেলে সুমন আহমেদ।
নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান জানান, গতকাল সোমবার বিকেলে জেলা নির্বাচন অফিসের সামনে থেকে কে বা কাহারা উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী দেলোয়ার হোসেনকে অপহরণ করে একটি মাইক্রোবাসে করে তুলে নিয়ে যায়। এসময় অপহরণকারীরা দেলোয়ার হোসেনকে শারিরিক নির্যাতন করে সিংড়ার পারশাঐল গ্রামে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। পরে দেলোয়ার হোসেন জরুরী সেবার ৯৯৯ নম্বরে কল করে জানান।
ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছানোর আগেই দেলোয়ার হোসেনের স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে নাটোর সদর হাসপাতালে ও পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। বর্তমানে তিনি সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন। মামলা দায়েরর পর পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িতদের মধ্যে দুইজনকে গ্রেফতার করেছে। বাঁকীদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
উল্লেখ্য গতকাল সোমবার বিকেলে নাটোরের সিংড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চেয়ারম্যান প্রার্থী দেলোয়ার হোসেন ও তার ভাই কলম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন মুন্সিকে অপহরণ ও নির্যাতনের অভিযোগ আনা হয় উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও শেরকোল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবং উপজেলা চেয়ারম্যান প্রাথী লুৎফুল হাবিব রুবেলের বিরুদ্ধে।
পরে আহত অবস্থায় দেলোয়ার হোসেনকে তার বাড়ীর সামনে ফেলে গেলে স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। পরে দেলোয়ার হোসেনের ভাই আলাউদ্দিন মুন্সিকে এখনো উদ্ধার করা হয়। তবে চেয়ারম্যান প্রার্থী লুৎফুল হাবিব রুবেল সাংবাদিকদে;র জানান, তিনি কাউকে অপহরণ করতে বলেননি এবং তিনি এ ঘটনার সাথে জড়িত নন।
দেলোয়ার হোসেনের পরিবারের সদস্যরা জানান, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন শেরকোল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লুৎফুল হাবীব রুবেল (প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদের শ্যালক)। গত রবিবার পর্যন্ত তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী কেউ মনোনয়নপত্র দাখিল করেননি। কিন্তু সোমবার সকালে অনলাইনে মনোনয়নপত্র দাখিল করতে ও ব্যাংকে জামানতের টাকা জমা দেওয়ার জন্য বের হন দেলোয়ার হোসেন।
এ সময় তাঁরা জরুরী প্রয়োজনে জেলা নির্বাচন কার্যালয়ের সামনে গেলে সেখান থেকে একটি কালো রং এর মাইক্রোবাসে করে কয়েকজন যুবক তার ভাই আলাউদ্দিন মুন্সিকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরে দেলোয়ার হোসেন নির্বাচন অফিস থেকে নেমে আসলে তাকেও একটি মাইক্রোবাসে করে তুলে নিয়ে যায় কয়েকজন যুবক। এ সময় তারা তাকে গাড়ীর ভিতর মারধর করে। পরে তারা দেলোয়ার হোসেনের বাড়ীর সামনে ফেলে দিয়ে চলে যায়।
পরে ঘটনাটি জরুরী সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে ঘটনাটি জানানো হলে পুলিশ এসে তাকে পুলিশি নিরাপত্তা দিয়ে তাকে প্রথমে নাটোর সদর হাসপাতালে এবং পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্ত্তি করে।