১৫০ আসনে ইভিএম দেয়া উদ্দেশ্য প্রণোদিত রাজশাহী জেলা জাতীয় পার্টির বর্ধিত সভায় মহাসচিব চুন্নু


রাজশাহী প্রতিনিধি : জাতীয় পার্টির (জাপা) মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেছেন, ১৫০ টি আসনে ইভিএম দেয়া হয়েছে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে। কারণ সরকার গঠন করতে লাগে ১৫১ টি আসন। ইভিএম পদ্ধতির বিরোধিতা করে তিনি নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশ্যে বলেন, যেই মুহূর্তে দেশে ডলারের সংকট সেই মুহূর্তে কোটি কোটি ডলার ব্যয় করে ইভিএম মেশিন কিনতে হবে কেন!
এতে জনগণের কি লাভ? এর আগের ইভিএম কেনার নিয়ে কেলেঙ্কারি হয়েছে।

ইভিএম পাবলিক বুঝে না। তিনি বলেন, এটি একটি যন্ত্র। যে ব্যক্তি এ যন্ত্র (ইভিএম) পরিচালনা করবেন, সেটি তার কথাই শুনবে। তাই অধিকাংশ রাজনৈতিক দল ইভিএম এর বিপক্ষে। ভারত ও পাকিস্তানসহ অনেক দেশে ইভিএম বন্ধ করে দিয়েছে। নির্বাচন কমিশন আ’লীগকে খুশি করার জন্য ১৫০ আসনে ইভিএমে ভোট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তিনি নির্বাচন কমিশনকে ইভিএম-এ ভোট প্রত্যাহার করার আহবান জানান।

শনিবার দুপুরে রাজশাহী জেলা জাতীয় পার্টির বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় বিএনপির পাশাপাশি আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে জাপা মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, বিএনপি চারবার বাংলাদেশকে দুর্নীতিতে
চ্যাম্পিয়ন করেছে। আর আ’লীগ দুর্নীতি করে না ডাইরেক্ট লুটপাট করে। তিনি বলেন, ২০১৬ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত তারা (আ’লীগ) এক লাখ চব্বিশ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো না চললেও ক্যাপাসিটি চার্জের নামে বসিয়ে রেখে ৮৬ হাজার কোটি টাকা দিয়ে দেয়াহয়েছে। বিদ্যুৎ আছে কিন্তু বাড়ি বাড়ি তা পৌঁছে দিতে পর্যাপ্ত লাইন নাই।

জ্বালানী তেলের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির প্রসঙ্গ টেনে জাপা মহাসচিব আরও বলেন, যে সরকার জ্বালানী তেলের মূল্য একবারে শতকরা ৫১ ভাগ বৃদ্ধি করে, সে সরকার কখনো জনগণের সরকার হতে পারেনা। মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নীতিগতভাবে দুই মেরুতে। ক্ষমতায় আসতে তারা মারামারি করবে। তাদের মধ্যে যে দলই ক্ষমতায় যাবে, দেশে
অরাজকতার সৃষ্টি হবে। জনগণ এটা বুঝে গেছে। জাতীয় পার্টির মত শান্তিপ্রিয় দল ক্ষমতায় আসলে আওয়ামী লীগ-বিএনপি সহ জনগণ বাঁচবে। তিনি বলেন, জাপা চেয়ারম্যান এরশাদকে মামলার ভয় দেখিয়ে আ’লীগ-বিএনপি দু’দলই জোটে ভিড়িয়ে সুবিধা নিয়েছেন।

কিন্তু বর্তমান চেয়ারম্যান জিএম কাদের এবং আমার নামে মামলা নাই। এখন আমাদের সিদ্ধান্ত আমরাই নিব। আগামীতে
তিন’শ আসনে প্রার্থী দিব। তাই দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ভুলে জাতীয় পার্টিকে সুসংগঠিত করতে হবে, মানুষের কাছে যেতে হবে। রাজশাহী জেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক মোঃ রাহাত হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টিও প্রেসিডিয়াম সদস্য রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, আলমগীর শিকদার লোটন, জহিরুল ইসলাম জহির, মোস্তফা আল মাহমুদ, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের অন্যতম উপদেষ্টা নুরুল ইসলাম তালুকদার এমপি, রাজশাহী মহানগর জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক
সাইফুল ইসলাম স্বপন, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব গোলাম মোঃ রাজু, বেলাল হোসেন প্রমুখ।

প্রতিনিধি সভায় রাজশাহী জেলা জাতীয় পার্টির বিভিন্ন উপজেলা ও পৌরসভা পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।