৪০ লাখ টাকা মুক্তিপণের দাবীতে লিবিয়ায় জিম্মি নাটোরের ৪ যুবক


নাটোর প্রতিনিধি: ৪০ লাখ টাকা মুক্তিপণের দাবীতে লিবিয়ায় জিম্মি করেছে নাটোরের ৪ যুবককে। সেই যুবকদের বেঁধে রেখে চালানো হচ্ছে নির্যাতন। সেই নির্যাতনের সেই ভিডিও চিত্র দেখিয়ে মুক্তিপণ দাবী করছে অপহরণকারীরা। এমন দৃশ্য দেখে আতংকিত হয়ে পড়েছে ওই চার যুবকের পরিবারের সদস্যরা। “সন্তানের জান ভিক্ষা চাই, ফিরে পেতে চাই সন্তানকে” এভাবেই কান্নায় ভেঙ্গে পড়েছে জিম্মি ৪ যুবকের মা ,বাবা সহ পরিবারের সদস্যরা। জিম্মি সবাইকে নিরাপদে তাদের মায়ের কোলে ফিরে দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা।

নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার প্রত্যন্ত একটি ইউনিয়ন বিয়াঘাট ইউনিয়ন। এই ইউনিয়নের অধিকাংশ মানুষ দরিদ্র ও শ্রমজীবী। এই ইউনিয়েনের চরপাড়া গ্রামের শাহজাহানের ছেলে সোহান হোসেন, তায়জাল শেখের ছেলে সাগর শেখ, মৃত শুকুর আলীর ছেলে নাজিম আলী ও ইনামুল ইসলামের ছেলে বিদ্যুৎ হোসেন। প্রায় দুই বছর পূর্বে জমি বন্ধক, গরু বিক্রি ও ঋণ করে সংসারের সুখ,শান্তি ফিরিয়ে আনতে লিবিয়ায় শ্রমিকের কাজ করতে পাড়ি দেন তারা।

গত (২ জুন) লিবিয়া থেকে ওই ৪ প্রবাসীর পরিবারের ‘ইমু’ নম্বরে মোবাইল ফোনে কল আসে। রিসিভ করতেই বলা হয় তাদের ৪ জনকে অপহরণ করা হয়েছে। তাদের মুক্তিপণে চাওয়া হয় ৪০ লাখ টাকা। এমন খবরে পরিবারের সদস্যরা স্তব্ধ হয়ে যায়। ‘ইমু’ নম্বরে পাঠানো হয় জিম্মি যুবকদের শারীরিক নির্যাতনের ভিডিও। এরপর থেকেই সন্তান হারানোর আতংকে সকল পরিবারের মা-বাবাসহ আতœীয়স্বজন অসহায় দিন কাটাচ্ছেন।

জিম্মি সোহানের মা ধুলি বেগম বলেন, সন্তানের ভবিষ্যতের কথা ভেবে সংসারের সবকিছু শেষ করে এবং বিভিন্ন মানুষের থেকে ঋণ নিয়ে বিদেশে পাঠিয়েছিলেন সন্তানকে। সেই সন্তানকে আজ জিম্মি করে নির্যাতন করা হচ্ছে এটা মা হয়ে কি করে সহ্য করবেন তিনি।

জিম্মি বিদ্যুতের মা সাকেরা বেগম বলেন, তিনি তার ছেলেকে ফিরে চান। তার টাকা পয়সা,বাড়ী ঘর কিছুই নেই। তার সন্তানের বাবা নাই,কোন আত্মীয় নাই। একমাত্র সন্তাননকে তিনি ফিরে পেতে চান। জিম্মি সাগর হোসেনের মা বলেন, তিনি তার নিজের ছেলে সহ জিম্মি ৪টি সন্তানকে নিরাপদে ফিরে পেতে সরকারের কাছে অনুরোধ করেন। সরকারের কাছে অন্য কোন চাওয়া নাই তার।

গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উজ্জল হোসেন বলেন, এ সংক্রান্ত কোন ঘটনা তাকে কেউ এখন পর্যন্ত জানায়নি। তবে তিনি জানা মাত্রই উদ্ধর্তন কর্মকর্তাকে বিষয়টি অবগত করেছেন। এরপর জিম্মি পরিবারের সদস্যদের কাছে গিয়ে আইনি সহায়তা প্রদানের আশ্বাস দিয়েছেন।