রাজশাহী চিড়িয়াখানা পরিদর্শন করলেন বিবিসিএফ সদস্যরা


স্টাফ রিপোর্টারঃ দেশে চলমান সহিংস পরিস্থিতির মধ্যে গত ০৫ আগস্ট ২০২৪ তারিখ রাতে রাজশাহী চিড়িয়াখানায় ব্যাপক হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট চালায় দুর্বত্তরা। লুটপাটের সময় চিড়িয়াখানার বিভিন্ন পশুপাখিও লুটপাট করা হয়। একই সাথে ঠিকাদার পালিয়ে যাওয়ায় এবং সিটি কর্পোরেশনের অচলাবস্থার মধ্যে খাদ্য সংকটে পরে চিড়িয়াখানায় থাকা হরিণ ও বিপন্ন প্রজাতির ঘড়িয়াল। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে চিড়িয়াখানার নিরাপত্তার দায়িত্ব নেয় সাধারণ ছাত্র সমাজ। বাংলাদেশ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ফেডারেশন এর পক্ষ থেকে হরিণ ও ঘড়িয়ালের জন্য দুই দিনের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়। পরবর্তীতে সিটি কর্পোরেশনের সাথে যোগাযোগ করে খাবারের ব্যবস্থা করা হয়। সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে বিবিসিএফ এর দুই সদস্যবিশিষ্ট একটি প্রতিনিধি দল অদ্য চিড়িয়াখানা পরিদর্শন করে। প্রতিনিধি দলে উপস্থিত ছিলেন সেভ দি ন্যাচার এন্ড লাইফ এর সভাপতি মোঃ মিজানুর রহমান ইউসূফী এবং বাংলাদেশ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ফেডারেশন এর সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী জুনায়েদ আহমেদ। পরিদর্শনকালে চিড়িয়াখানার সুপারভাইজার জানান, সংস্কারের পর চিড়িয়াখানায় ১১৬ টি হরিণ, ২টি বিপন্ন প্রজাতির ঘড়িয়াল এবং দুই শতাধিক বিভিন্ন প্রজাতির পাখি আনা হয়। সেদিনের হামলা ও লুটপাটের সময় অস্ত্রের মুখে সকল পাখি নিয়ে যায় দুর্বত্তরা। ৩টি হরিণ নিয়ে যাবার সময় আটকায় ছাত্ররা। এছাড়া পুকুর হতে প্রায় ১৮ মণের মতো বিভিন্ন মাছ ধরে নিয়ে যায় দুর্বত্তরা। একই সাথে চিড়িয়াখানার চেয়ার-টেবিল থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে যায় তারা। পরবর্তীতে সাধারণ ছাত্র সমাজ ও বিবিসিএফ এর তৎপরতায় অনেকে টেবিল-চেয়ার, আলমারী ও জিনিসপত্র ফেরৎ দিয়ে যেতে থাকেন। তবে দুই শতাধিক বিরল পাখিগুলো এখনও পাওয়া যায় নি। চিড়িয়াখানায় থাকা হরিণ ও ঘড়িয়ালের সুরক্ষা, নিরাপত্তা ও দেখাশোনার ব্যাপারে চিড়িয়াখানার সুপারভাইজার ও ছাত্রদেরকে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা প্রদান করেন বিবিসিএফ এর প্রতিনিধিবৃন্দ। একই সাথে চিড়িয়াখানার প্রাণীগুলো রক্ষায় এগিয়ে আসায় ছাত্রদেরকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানানো হয়।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ সরকারের “বণ্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন-২০১২” মোতাবেক পাখি শিকার, হত্যা, আটক ও ক্রয়-বিক্রয় দন্ডনীয় অপরাধ, যার জন্য সর্বোচ্চ শাস্তি ২ বছর কারাদন্ড এবং ২ লক্ষ টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে। এছাড়া উক্ত আইনে অন্য যেকোন বণ্যপ্রাণী আটক, ধরা, মারা, ক্রয়-বিক্রয় ও পরিবহণ নিষিদ্ধ ও দন্ডনীয় অপরাধ, যার জন্য সর্বোচ্চ শাস্তি এক বছর পর্যন্ত কারাদন্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে। একই সাথে চিড়িয়াখানার সরকারি সম্পদ লুটপাটের জন্যও রয়েছে কঠোর শাস্তির বিধান। সুতরাং এখনও যারা চিড়িয়াখানার পাখি এবং অন্যান্য জিনিসপত্র ফেরৎ দেন নি, তাদেরকে অতিসত্ত্বর ফেরৎ দেওয়ার জন্য বিনীত অনুরোধ করা যাচ্ছে।