অং সান সুচি’র কারাদন্ডে হতাশ মিয়ানমার


অং সান সুচি’র কারাদন্ডে হতাশা প্রকাশ করেছে মিয়ানমারের রেঙ্গুনের নাগরিকরা। সম্প্রতি সামরিক জান্তা নিয়ন্ত্রিত আদালত নেত্রী অং সান সুচি’র বিরুদ্ধে দুই বছর কারাদন্ডের রায় দিয়েছে। সংবাদ সূত্র: A24 News Agency

উসকানিমূলক আচরণ ও কোভিডের বিধিনিষেধ লঙ্ঘনের অভিযোগে সুচিকে এই শাস্তি দেয়া হয়। আদালত তাকে আংশিক ক্ষমা ঘোষণার পাশাপাশি তার কারাদন্ডের মেয়াদ চার থেকে কমিয়ে দুই বছর করে নে। গত ফেব্রুয়ারীতে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর এটি সান সুচি’র বিরুদ্ধে প্রথম রায়। সবমিলিয়ে তার বিরুদ্ধে প্রায় বারোটি অভিযোগ আনা হয়েছে, যার মধ্যে সরকারী গোপনীয়তা আইন ভঙ্গ করাও রয়েছে এবং এগুলোর সম্মিলিত শাস্তি হবে ১০০ বছরেরও বেশি।

এদিকে, আদালতের দেয়া সুচি’র রায়ে সন্তুষ্ট নয় মিয়ানমারের জনগণ। তাদের মতে এই রায় অবৈধ। নিরাপত্তার স্বার্থে নিজের নামের পরিবর্তে জাল নাম ব্যবহার করে কয়েকজন নাগরিক জানিয়েছেন সামরিক বাহিনী অবৈধভাবে ক্ষমতায় আছে সুতরাং তাদের প্রভাবে দেয়া আদালতের এই রায়ও অবৈধ। খিন মাউং নামক জাল নাম ব্যবহার করে এক নাগরিক বলেন, ”এই জান্তা অন্যায়ভাবে একটা রায় দিয়েছে, তারা রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা ও রাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধে রায় দিয়েছে।

তাদের নিজেদের তৈরি আইন জারি করা হয়েছে কিন্তু মিয়ানমারের জনগণ তা স্বীকার করে না। তারা যা খুশি তাই করে ফলে মানুষ অসহিষ্ণু হয়ে উঠছে। আসলে, জনগণ প্রতিশোধ নেওয়ার এবং বিদ্রোহ করার ভাল সুযোগ পায়নি, সুযোগ পেলে তারা বিদ্রোহ করতে দ্বিধা করবে না কারণ তারা সবাই ভিতরে ভিতরে গভীরভাবে আহত অনুভব করে।”

নকল কো কিয়াও নাম ব্যবহার করে মত প্রকাশ করেছেন আরেক নাগরিক, “আমি এই রায়ের কথা বলতে চাই, অভ্যুত্থানের পর থেকে সব আদালতই সামরিক বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে। তাহলে, তারা ইতিমধ্যেই সারা দেশের সব প্রশাসন নিয়ন্ত্রণ করছে, তাই না? আমি এই প্রশ্ন হলো, তারা দেশের সমস্ত প্রশাসনকে নিয়ন্ত্রণ করছে, এমনকি তারা আসিয়ান দ্বারা স্বীকৃতও নয়।

সুতরাং, আমরা এই ধরণের প্রশাসকদের দ্বারা তৈরি এ রকম রায় বিশ্বাস করি না। অং সান সুচির বিরুদ্ধে যে রায় দেওয়া হয়েছে, আমরা তা মানি না, বিশ্বাসও করি না।” টিন হ্লা নামে এক নাগরিক বলেছেন যে, অং সান সুচি’র বিরুদ্ধে অভিযোগের তালিকাটি অবৈধ এবং তিনি সামরিক বাহিনীকে উৎখাত করতে এবং এটিকে স্বীকৃতি দিতে অস্বীকার করার জন্য জনগণকে প্রতিবাদ করার আহবান জানান, “আমরা এখনও সামরিক জান্তাদের গ্রহণ করিনি, আমরা বিশ্বাস করি যে তাদের দ্বারা আইন ও প্রবিধান প্রণয়ন বা ঘোষণা করা যাই হোক না কেন তা বৈধ নয়।

তাই সাজা বা রায়ও গ্রহণযোগ্য নয় এবং এতে বিপ্লবও থেমে যাবে না। একজন বেসামরিক হিসাবে, আমরা এখনও তাদের বিরুদ্ধে বিপ্লব ও বিদ্রোহ করব। তাদের দ্বারা ঘোষিত আদেশ বা আইন মানার প্রশ্নই উঠে না, বিপ্লব আরও শক্তিশালী হবে এবং আমরা তাদের একদমই চিনি না।”