চিরঘুমে কবরী


চিরনিদ্রায় সমাহিত কিংবদন্তি অভিনেত্রী সারাহ বেগম কবরী। রাজধানী ঢাকার বনানী কবরস্থানে আজ শনিবার দুপুর ২টায় তাঁর জানাজা শেষে দাফন সম্পন্ন হয়। এ সময় তাঁর পরিবারের সদস্যসহ চলচ্চিত্র অঙ্গনের ঘনিষ্ঠজনেরা উপস্থিত ছিলেন।

আজ দুপুর ১টার দিকে বনানী কবরস্থানের গেটের সামনে রাষ্ট্রীয়ভাবে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয় বীর মুক্তিযোদ্ধা এই অভিনেত্রীকে। দুপুর সোয়া ১২টার দিকে আধাঘণ্টার জন্য অভিনেত্রীর মরদেহ তাঁর গুলশান বাসভবনে নেওয়া হয়।

প্রয়াত কবরীকে শেষ শ্রদ্ধা। ছবি : সংগৃহীত

শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টা ২০ মিনিটে রাজধানীর শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালে করোনায় আক্রান্ত কিংবদন্তি অভিনেত্রী সারাহ বেগম কবরী শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।

 

গত ৫ এপ্রিল সারাহ বেগম কবরীর করোনার নমুনার পজিটিভ রিপোর্ট এলে রাজধানীর কুর্মিটোলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে ৮ এপ্রিল তাঁকে শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) নেওয়া হয়। এরপর বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টায় তাঁকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়েছিল।

 

১৯৫০ সালের ১৯ জুলাই চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে জন্ম নেওয়া মিনা পালের শৈশব ও কৈশোর কেটেছে চট্টগ্রামের ফিরিঙ্গি বাজারে। ‘মিষ্টি মেয়ে’খ্যাত কবরী চিত্রনায়িকা হয়েছিলেন মাত্র ১৩ বছর বয়সে। সুভাষ দত্তের পরিচালনায় ‘সুতরাং’ সিনেমার মাধ্যমে তাঁর যাত্রা শুরু ১৯৬৪ সালে। এরপর আর পেছনে ফিরতে হয়নি তাঁকে। তখন কববীর নাম ছিল মিনা পাল। প্রথম সিনেমার সময়ই তাঁর নতুন নাম হয় কবরী।

এর পরের দুই দশকে ‘রংবাজ’, ‘নীল আকাশের নীচে’, ‘দ্বীপ নেভে নাই’, ‘তিতাস একটি নদীর নাম’, ‘সুজন সখী’, ‘সারেং বৌ’-এর মতো বহু ব্যবসাসফল এবং আলোচিত সিনেমায় প্রধান নারী চরিত্রে অভিনয় করেন কবরী।

৫০ বছরের দীর্ঘ ক্যারিয়ারে রাজ্জাক, ফারুক, সোহেল রানা, উজ্জ্বল, জাফর ইকবাল ও বুলবুল আহমেদের মতো অভিনেতাদের সঙ্গে কাজ করেছেন কবরী। ঢাকার চলচ্চিত্র ইতিহাসের অন্যতম জনপ্রিয় জুটি ছিলেন রাজ্জাক-কবরী।

কবরীকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় গার্ড অব অনার প্রদান। ছবি : সংগৃহীত

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় কলকাতায় গিয়ে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত সৃষ্টি করতে বিভিন্ন সভা-সমিতি ও অনুষ্ঠানে বক্তৃতা এবং বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যোগ দেন কবরী। রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে কবরী ২০০৮ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।

সবশেষ কবরী সরকারি অনুদানের ‘এই তুমি সেই তুমি’ সিনেমা পরিচালনা করেছেন। ২০০৬ সালে মুক্তি পায় কবরীর পরিচালনায় প্রথম সিনেমা ‘আয়না’।