বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কী রকম মহানুভবতা দেখিয়েছেন তা দলটির নেতারা টের পাচ্ছেন না বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, ‘শাস্তিপ্রাপ্ত, দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হওয়া সত্ত্বেও শাস্তি স্থগিত করে তাকে (খালেদা জিয়া) বাইরে থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এটি একটি বড় মহানুভবতা। ওনারা (বিএনপি নেতারা) মনে হয় সেটি টের পাচ্ছেন না, কী রকম মহানুভবতা দেখিয়েছেন। সাজা স্থগিত রেখে তাকে যে বাইরে থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন, সেটা যদি বাতিল করা হয়, তখন সম্ভবত তারা টের পাবেন কী পরিমাণ মহানুভবতা খালেদা জিয়ার জন্য শেখ হাসিনা দেখিয়েছেন।’
বুধবার (৪ অক্টোবর) সচিবালয়ে চলচ্চিত্র, টিভি ও ডিজিটাল মাধ্যম পেশাদার কনফেডারেশনের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে এসব কথা বলেন তিনি।
সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে প্রশ্ন করা হয়, বিএনপি সমাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন- সরকার খালেদা জিয়াকে বিদেশে না পাঠিয়ে সাংবিধানিক ও মৌলিক অধিকার ক্ষুণ্ন করছে। আবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তথ্য ছড়ানো হচ্ছে, তারা (বিএনপি) যদি নির্বাচনে আসে তাহলে খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হবে।
এর উত্তরে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দেখুন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কী গুজব রটালো, কে কী বললো, সেটি নিয়ে তো আমি মন্তব্য করার প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না। কিন্তু খালেদা জিয়ার প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে সহনাভূতি দেখিয়েছে…, তিনি তো কারাগারে থাকার কথা। তিনি তো কারাগারের বাইরে থাকার কথা নয়। প্রধানমন্ত্রী তার সাজা স্থগিত রেখে তাকে বাইরে থাকার সুযোগ করে দিয়েছেন। পরিবারের সদস্যরা নিয়মিত তার সঙ্গে দেখা করেন, যোগাযোগ করেন এবং তার দলের নেতারাও যান। তিনি শাস্তিপ্রাপ্ত, দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হওয়া সত্ত্বেও শাস্তি স্থগিত করে তাকে বাইরে থাকার ব্যবস্থা প্রধানমন্ত্রী করে দিয়েছেন। এটি একটি বড় মহানুভবতা।’
তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়া রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকলে শেখ হাসিনার প্রতি এই মহানুভবতা দেখাতেন না। যেখানে তার বাড়ির সামনে গিয়ে শেখ হাসিনা দাঁড়িয়ে থাকার পর তার বাড়ির দরজা খোলেননি, যেখানে ১৫ আগস্ট জন্মদিন না হওয়া সত্ত্বেও ১৫ আগস্টে কেক কাটেন। যেখানে তিনি ২০০৪ সালে গ্রেনেড হামলার পর সেটা নিয়ে হাস্যরস করেছেন, যেহেতু তারা সেটার পেছনে ছিলেন। সেখানে তিনি যে এ ধরনের সহনাভূতি দেখাতেন না, সেটি খুবই স্পষ্ট।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপি নেতাদের শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ দেওয়া প্রয়োজন। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহাবেরও শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ দেওয়া প্রয়োজন, তাকে (খালেদা জিয়া) কারাগারের বাইরে থাকতে দিয়েছেন বলে। ওনারা মনে হয় সেটি টের পাচ্ছেন না, কী রকম মহানুভবতা দেখিয়েছেন। সেটি তখনই টের পাবেন, যদি সাজা স্থগিত রেখে তাকে যে বাইরে থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন, সেটা যদি বাতিল করা হয়। তখন সম্ভাবত তারা টের পাবেন কী পরিমাণ মহানুভবতা শেখ হাসিনা দেখিয়েছেন খালেদা জিয়ার জন্য।’
আরেক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি যেখানে সমাবেশ করে নিজেরা মারামারি করে। চট্টগ্রামে দুই গ্রুপ মারামারি করেছে, মারামারি করে ওদের পার্টি অফিস ভাঙচুর করেছে। বিভিন্ন জায়গায় এসব ঘটনা ঘটছে। আর তারা যাতে নির্বিঘ্নে সামাবেশ করতে পারে, যে সমাবেশগুলোর মাধ্যমে সরকারকে টেনে নামানোর কথা বলা হচ্ছে, সরকারের পদত্যাগ চাওয়া হচ্ছে, সেখানে সরকার সব নিরাপত্তা বিধান করছে।’সূত্র- জাগো নিউজ ।
তিনি বলেন, ‘আপনারা খেয়াল করেছেন, তাদের সমাবেশে যাতে কোনো ধরনের বিরূপ পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয় বাইরে থেকে, সে জন্য সরকার সব নিরাপত্তার ব্যবস্থা করছে। কিন্তু মাঝেমধ্যে তারা পুলিশের ওপর চড়াও হয়। বিএনপি নেতারা আহ্বান জানাচ্ছেন কর্মীদের নামার জন্য, কিন্তু তাদের সব কর্মী কি মাঠে নেমেছে? তাদের লং মার্চ, যে লং মার্চ করছে বিভিন্ন জায়গায়, সেখানে কি জনসমাগম হয়েছে? তাদের কর্মী সমাগম হয়েছে? এই আত্মউপলব্ধি আমি মনে করি তাদের নেতাদের হবে।’